Adsterra

আদালতের নির্দেশে কারাগারে বিয়ে, কেমন আছেন সেই প্রেমিক যুগল

আদালতের নির্দেশে কারাগারে বিয়ে, কেমন আছেন সেই প্রেমিক যুগল,  ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News

আদালতের নির্দেশের পর গত বছরের ২৯ নভেম্বর বিকেলে লালমনিরহাট জেলা কারাগারে দুই পরিবারের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে আট লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে হয় রাকিবুজ্জামান রাকিব ও স্বর্ণার খাতুন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে লালমনিরহাটের জেল সুপার উমর ফারুক এ বিয়ের আয়োজন করেন। কাবিননামা দাখিল করলে ৪ ডিসেম্বর কারাগারে থাকা রাকিবের জামিন বহাল রেখে মুক্তির নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।


রাকিবুজ্জামান রাকিব লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কালীরহাট এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে। বিয়ের পর স্ত্রী স্বর্ণাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে সুখেই আছেন তাঁরা। মামলা চলমান থাকলেও সংসারে কোনো ঝামেলা নেই বলে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। 


জানা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মেয়ে স্বর্ণা খাতুনকে (১৭) নিয়ে বাড়ি ছাড়েন প্রেমিক রাকিবুজ্জামান রাকিব। গোপনে বিয়ে করে সংসার জীবনও শুরু করেন তাঁরা। 


এদিকে মেয়ের বাবার দায়ের করা অপহরণ মামলায় গত ২০২২ সালের ১৩ জুলাই ঢাকা থেকে রাকিবুজ্জামান রকিবকে গ্রেপ্তার ও স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। আদালত প্রেমিক রাকিবকে জেলহাজতে পাঠায়। উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রীকে চিকিৎসা রিপোর্টে অন্তঃসত্ত্বা উল্লেখ করে আদালতে উপস্থিত করে পুলিশ। কিন্তু পরে সন্তান নষ্ট হয়ে যায় ভিকটিমের। সেটাও আদালতকে অবগত করে চিকিৎসকের রিপোর্ট দাখিল করে পুলিশ।


একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সমঝোতার ভিত্তিতে উচ্চ আদালতে গিয়ে জামিন চাইলে রাকিবের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামিন বাতিল হয়ে যায়। অবশেষে মেয়ের নামে প্রায় এক একর জমি লিখে দিয়ে স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসা করেন রাকিবের পরিবার। অবশেষে বাদী তাঁর নাবালিকা মেয়েকে (১৭) বিয়ে দিতে রাজি আছে মর্মে আদালতকে অবগত করেন। 


শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন

শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


কারাগারে বিয়ে হওয়া দম্পতির বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, বেশ সুখেই আছেন রাকিব ও স্বর্ণ। স্বামী রাকিবুজ্জামান রাকিব ব্যবসায় জড়িয়েছেন। স্ত্রী স্বর্ণা গৃহস্থালির কাজে ব্যস্ত। শ্বশুর-শাশুড়িসহ পুরো পরিবার নিয়ে বেশ সুখী তাঁরা। দুই পরিবারের মাঝেও বিরাজ করছে সম্প্রীতি। মামলা নিষ্পত্তি করতে দুই পরিবারই চেষ্টা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। খুব দ্রুত হবে বলেও আশা করছেন রাকিবের পরিবার। 


রাকিবের বড় ভাই সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রথম দিকে জানতাম না যে রাকিব স্বর্ণাকে নিয়ে পালিয়েছে। অপহরণ মামলায় আসামি হয়ে বাবা ছাড়া পুরো পরিবার যখন বাড়ি ছাড়া হয়েছি। তখন রাকিবের সন্ধান পেয়ে আপসের চেষ্টা করেছিলাম। যাক, শেষ পর্যন্ত আমরা আপস হয়েছি। আদালতের নির্দেশে কারাগারে রাকিব-স্বর্ণার বিয়ে হয়েছে। এখন আমরা সবাই বেশ সুখেই আছি। আমাদের দুই পরিবারে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।’


শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন

শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


স্বর্ণা খাতুন বলেন, ‘প্রেমিককে নিয়ে বাঁধা সংসার বেশ সুখের ও আনন্দেরই হয়। আমি পুরো পরিবারকে আগলে রেখেছি। বাবা-মা ছেড়ে এসে এখানে বাবা-মা-ভাই-বোন পেয়েছি। স্বামী ব্যবসা করছে। বেশ সুখেই আছি। মামলাটা নিষ্পত্তি হলে আরও ভালো লাগবে। তবে মামলা নিয়ে স্বামীর পরিবারের কেউ কটু কথা বলেনি। বরং দুই পরিবারই মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে।’ 


রাকিব বলেন, ‘বিয়ে করে বেশ সুখেই আছি। যাকে জীবনসঙ্গী চেয়েছি, অনেক লড়াই-সংগ্রাম করে তাকেই পেয়েছি। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে। তবে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হলে আরও ভালো লাগত। আমরা দুই পরিবার সেই চেষ্টাই করছি।’ 


স্বর্ণার বাবা ও অপহরণ মামলার বাদী শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘মেয়ে-জামাই বেশ সুখেই আছে। আমাদের দুই পরিবারের মধ্যে যোগাযোগও ভালো রয়েছে। চলতি মাসে মামলার শুনানি হবে। আশা করছি আদালত সন্তুষ্ট হয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেবেন। সে জন্য আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেছি।’ 


কারাগারেই করতে হবে বিয়ের আয়োজন, কাবিননামা দেখালেই মিলবে জামিনকারাগারেই করতে হবে বিয়ের আয়োজন, কাবিননামা দেখালেই মিলবে জামিন

রাকিবের বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘তারা (রাকিব-স্বর্ণা) তাদের পছন্দের জিনিস পেয়েছে। সেখানে আমাদের বলার কী আছে। তারা সুখে থাকুক, সেটাই আমরা চেয়েছি। তাদের সুখের জন্যই আপস করেছি, জমি লিখে দিয়েছি। তারা বেশ সুখেই আছে। এখন দেখেই ভালো লাগছে। দুই পরিবারে যাতায়াত হলেও আমি অসুস্থতার জন্য স্বর্ণার বাবার বাড়ি যাইনি। তবে তাদের বিয়ের আগে তো ওই পরিবারের সঙ্গে আমাদের যাতায়াত ছিলই। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে তাদের দুজনের সুখের নীড় গড়তে সকলের সহায়তা কামনা করছি। সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’

No comments

Powered by Blogger.