Adsterra

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির আশা

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির আশা, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News


দীর্ঘ ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধ চলছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়। আর এই যুদ্ধের বলি হচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। গত বছরের শেষে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি হলেও এরপর আর যুদ্ধবিরতি হয়নি অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে। বারবার আলোচনায় বসলেও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং পারস্পরিক শর্তে সম্মত করা যাচ্ছে না হামাস বা ইসরায়েলকে। তবে এবার গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত হামাসের সবশেষ প্রস্তাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল।


হামাসের মুখপাত্র খলিল আল হায়া গতকাল শনিবার কাতার থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


এদিকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হঠাৎ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলো। বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রয়েছে এবং গোটা বিশ্বের নজর এখন এই বিক্ষোভে।


এ ছাড়া গাজায় চলমান যুদ্ধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে পদত্যাগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হালা রাহরিত। তিনি আরবি ভাষার মুখপাত্র ছিলেন। গাজা ইস্যুতে এ পর্যন্ত দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেওয়া তৃতীয় ব্যক্তি তিনি।


সিএনএন জানাচ্ছে, ক্যাম্পাস অনুযায়ী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট দাবির ভিন্নতা থাকলেও তাদের মূল দাবি ইসরায়েলভিত্তিক বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্যবসার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করা, যেসব কার্যক্রম থেকে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে লাভবান হচ্ছে ইসরায়েল।


গতকাল হামাসের মুখপাত্রের বিবৃতিতে বলা হয়, হামাস মিসরীয় এবং কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ১৩ এপ্রিল উপস্থাপিত প্রস্তাবে ইহুদিবাদী দখলদারির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। উত্তর জমা দেওয়ার আগে এ বিষয়ে অধ্যায়ন করা হবে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।


রয়টার্স জানায়, শুক্রবার একটি মিসরীয় প্রতিনিধিদল গাজায় যুদ্ধ থামাতে এবং বাকি জিম্মিদের উদ্ধারে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দেশটিতে সফর করেছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কাছে নতুন কোনো প্রস্তাব নেই, তবে তারা সীমিত যুদ্ধবিরতি বিবেচনা করতে ইচ্ছুক; যেখানে হামাস ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে, আগে আলোচনা করা ৪০ জনের পরিবর্তে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য ১৭টি দেশ সংকটের অবসান এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য হামাসের কাছে আবেদন জানিয়েছে।


শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন

শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন

তবে হামাস আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের জনগণের চাহিদা এবং অধিকারকে বিবেচনা করে এমন কোনো ধারণা বা প্রস্তাবের জন্য উন্মুক্ত তারা।


এদিকে দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ইসরায়েল শুক্রবার মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের বলেছে যে তারা রাফাহতে আক্রমণের আগে হামাসের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য এবং জিম্মি আলোচনাকে একটি শেষ সুযোগ দিতে প্রস্তুত।


এর ফলে শুক্রবার হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, তিনি যুদ্ধের অবসান এবং বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার আলোচনায় নতুন গতি দেখতে পেয়েছেন।


কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করেছিল হামাস-আইডিএফ। সেই বিরতির সময় চুক্তি অনুযায়ী, ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্য থেকে ১৫০ জনকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েল।


ওই বিরতি শেষ হওয়ার পর গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করছে মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ। চলতি বছর রমজান মাস থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আপত্তির কারণে তা আর হয়নি। ফলে হামাসের কবজায় থাকা বাকি ১৩২ জিম্মির ভাগ্যে কী ঘটেছে, এখনো অজানা।


এদিকে সিএনএন জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইসরায়েলি বিনিয়োগ চিত্র প্রকাশ, ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন ও গাজায় যুদ্ধবিরতিকে সমর্থনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে অনড় অবস্থানে রয়েছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানো ইসরায়েলের বিভিন্ন কোম্পানির সব বিনিয়োগ সরিয়ে ফেলতে বলেছি।’ একই সঙ্গে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় না আনারও দাবি জানান তারা।


ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভের জেরে অনেক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের ‘পূর্ণ ক্ষমা’ দাবি করছেন বিক্ষোভকারীরা। ক্যাম্পাসে পুলিশি তৎপরতা বন্ধেরও দাবি তাদের। বিক্ষোভকারীরা আরও কিছু দাবি জানাচ্ছেন, যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থানীয় বিষয়-সম্পর্কিত।


যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয় ১৭ এপ্রিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক বর্জনের ডাক দিয়েছেন তারা। বিক্ষোভকারীরা চান, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তেল আবিবে তাদের ক্যাম্পাসের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখুক এবং তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দ্বৈত ডিগ্রি প্রোগ্রাম বাতিল করুক।

No comments

Powered by Blogger.