আসমান জমিন সৃষ্টির রহস্য
আসমান-জমিনের মাঝে আমাদের জানা-অজানা যা কিছু আছে সবই সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ। তিনি তাঁর মহিমা প্রকাশের লক্ষ্যে এ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। আসমান-জমিন এবং এর মধ্যস্থিত সবকিছুকে তিনি ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এর অন্তর্বর্তী সব কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। (সুরা: সাজদাহ, আয়াত: ৪)
বস্তুত এ নিখিল বিশ্বে রয়েছে আসমান-জমিন, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালাসহ অসংখ্য সৃষ্টিরাজি। আল্লাহপাক ভাসমান চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র ও অসংখ্য তারকা দ্বারা আসমানকে সুসজ্জিত করেছেন। এই সুসজ্জিত আসমান আল্লাহর কুদরতের এক বিশেষ নিদর্শন। বিস্তৃত ও বিশাল পৃথিবীতে বিন্যাস করেছেন বৈচিত্র্যময় পাহাড়-পর্বত, খাল-বিল, নদী-নালা, সাগর-মহাসাগর ও সারি সারি বৃক্ষ ও তৃণলতার সমারোহ। এতে রয়েছে মানুষসহ হাজারো রকমের জীব-জানোয়ার ও পশুপাখি। মানুষের পুষ্টি ও তৃপ্তির জন্য আল্লাহপাক এ স্থলভূমিতে নানা রকমের খাদ্যশস্য ও সবজির আবাদ করে পৃথিবীকে বসবাস উপযোগী করে দিয়েছেন আমাদের জন্য।
জলভাগ: খাল-বিল, নদ-নদী ও সাগর-মহাসাগরে রয়েছে মাছ ও জলজ প্রাণীর প্রাচুর্য। পানির তলদেশে রয়েছে মণি-মুক্তাসহ অফুরন্ত রত্নভাণ্ডার। ভূগর্ভে রয়েছে অফুরন্ত পানি ও স্বর্ণ-রৌপ্যের অমূল্য সম্পদ। এমনি করে হাজার মাখলুক আল্লাহপাক সৃষ্টি করেছেন। এ সবের মধ্যে মানুষই হলো সৃষ্টির সেরা, আশরাফুল মাখলুকাত। সব সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিবেক বিবেচনার এক স্বতন্ত্র মর্যাদা দিয়েছেন। তাই স্বভাবতই তাদের মনে প্রশ্ন জাগে, এসব সৃষ্টির পেছনে আল্লাহর রহস্য কী? কেন তিনি এসব কিছু সৃজন করেছেন? এসব প্রশ্নের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন। কারো কারো মতে, এ বিশ্বপ্রকৃতি আল্লাহর ইচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। প্রত্যেক বস্তুই নিজ নিজ স্বভাব ও প্রকৃতি অনুযায়ী আল্লাহর তাসবিহ তাহলিল ও ইবাদত বন্দেগি করে। এই বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আধিপত্য তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই, তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সুরা: তাগাবুন, আয়াত: ১)
শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন
এ বিশ্ব চরাচরে যত কিছু আছে সবই আল্লাহর কুদরতের বিশেষ নিদর্শন। এতে আল্লাহর মারিফাত ও পরিচয় লুক্কায়িত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আকাশণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, যা মানুষের হিতসাধন করে তাসহ সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানসমূহে, আল্লাহ আকাশ থেকে যে বারিবর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন তাতে এবং তার মধ্যে যাবতীয় জীবজন্তুর বিস্তারণে, বায়ুর দিক পরিবর্তনে, আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে জ্ঞানবান জাতির জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সুরা: বাকারা, আয়াত: ১৬৪)
No comments