Adsterra

আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে আদর্শ দম্পতি

আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে আদর্শ দম্পতি, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News


পৃথিবীর সব ধর্ম ও জাতির মধ্যে বিয়ের প্রথা প্রচলিত আছে। বিয়ের মাধ্যমে অপরিচিত দুজন মানব-মানবী নতুন সম্পর্কের সূচনা করেন।  কোরআন ও হাদিসে বিয়ের অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাদিসে বিয়েকে ইমানের অর্ধেক আখ্যায়িত করা হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিয়ে করল, সে অর্ধেক দ্বীন পেয়ে গেল। বাকি অর্ধেক লাভ করতে সে যেন মহান আল্লাহকে ভয় করে।’ (মুসনাদে আহমদ)


এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা পবিত্র  কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘(আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্য থেকে) আরও একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতি সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।’ (সুরা রুম, আয়াত ২১)


আমাদের সমাজে আদর্শ দম্পতির সংখ্যা যত বেশি হবে সমাজও আমাদের আদর্শ পরিবার, আদর্শ সন্তান ও আদর্শ প্রজন্ম তত বেশি উপহার দেবে। তাই আবশ্যক হলো আদর্শ দম্পতি তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে মা-বাবা ও অভিভাবকদের আবশ্যকীয় দায়িত্ব হলো সন্তানদের ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতির আলোকে গড়ে তোলা। সুশিক্ষা ও নীতি-নৈতিকতার ওপর পরিচালনা করা। সন্তানের জীবনের প্রতিটি ধাপে সঠিক দিকনির্দেশনা ও দীক্ষাদান করা। সন্তান-সন্ততির সামগ্রিক চলাফেরা, আচার-আচরণ, বন্ধু নির্বাচন, শৈশব, কৈশোর ও যৌবনকালের যাবতীয় বিষয় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি করা। যাবতীয় অশুভ, অকল্যাণ ও মন্দ বিষয়াদি থেকে তাদের নিরাপদ দূরত্বে রাখা। যাতে ছেলেমেয়ে আদর্শ সন্তান হিসেবে বিয়ের বয়সে উপনীত হয় এবং কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।


আদর্শ দম্পতি সৃষ্টি করার জন্য আবশ্যকীয় কাজ হচ্ছে, বিয়েকে সহজ করা। এটির প্রয়োজনীয়তা আজ আর কোনোভাবেই অস্পষ্ট নয়। সন্তানের বিয়ের বয়স হলে দেরি না করে বিয়েশাদি সম্পন্ন করে দেওয়া ইসলামের নির্দেশনা। বলাবাহুল্য, এটি অনৈতিকতার পথে অনেকটা দেয়াল হিসেবে কাজ করে। চারিত্রিক পবিত্রতা সুরক্ষিত রাখতে উত্তম প্রতিষেধক হিসেবে ভূমিকা রাখে। আমাদের সমাজে বিলম্বিত বিয়ে মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। বিয়ের বয়স হওয়ার পরও অকারণে কিংবা বিভিন্ন অজুহাতে যেমন উচ্চশিক্ষা, ভালো চাকরি, উচ্চাকাক্সক্ষার পাত্রপাত্রী, উচ্চাভিলাষ, বিলাসিতা, অতিরিক্ত জৌলুস, অপব্যয় ইত্যাদির জোগান দিতে সন্তানসন্ততির বিয়েশাদিতে প্রায় পরিবারেই অনেক কালক্ষেপণ করতে দেখা যায়।


শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন

শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


অধিকাংশ পরিবারেই বিলম্বিত বিয়ে পরিলক্ষিত হয়। অথচ এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এখানে ব্যাখ্যার কোনো প্রয়োজন নেই। উপযুক্ত সন্তানসন্ততিকে যত তাড়াতাড়ি বিয়েশাদি দেওয়া যাবে সব দিক থেকেই তারা এবং জাতি তত বেশি উপকৃত হবে। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত এটির ফল ও প্রভাব বিস্তৃত হবে। উপযুক্ত বয়সে বিয়েশাদি সম্পন্ন করে না দেওয়াতে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা আমাদের সমাজচিত্রে দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট। দ্রুত বিয়ে সম্পন্ন করার বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে একটি প্রসিদ্ধ হাদিস রয়েছে। তিনি বলেছেন, রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম। আমাদের কোনো কিছু ছিল না। এ অবস্থায় রাসুল (সা.) আমাদের বলেন, ‘হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে ফেলে। কারণ বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখে, লজ্জাস্থান সুরক্ষা করে। আর যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা যৌনতাকে দমন করে।’ (সহিহ বোখারি)


বিয়েকে সহজ করা হলে এবং বিলম্বিত না করা হলে যুবক-যুবতীদের বিপদগামী হওয়া অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। সমাজ অনৈতিকতা ও চরিত্রহীনতার ভয়ংকর আগ্রাসন থেকে ধীরে ধীরে পরিত্রাণ পাবে। সর্বোপরি আদর্শ দম্পতির চাহিদাও অনেকটা পূরণ হবে। ফলে আদর্শ পরিবার, আদর্শ সন্তান, আদর্শ প্রজন্ম, আদর্শ জাতির বিনির্মাণ শুরু হবে।


No comments

Powered by Blogger.