ইরানের ইস্পাহান কেন হামলার নিশানা
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত-পাল্টা সংঘাতের মাঝেই গত শুক্রবার ভোরে ইরানের ইস্পাহান শহরে ড্রোন হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে ইরান সরকার। তাছাড়া আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা নিশ্চিত করেছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো ক্ষতি হয়নি।
ইসরায়েলের একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা; কিন্তু ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের বাইরে থেকে নয়, বরং ইরানের ভেতর থেকেই অনুপ্রেবশকারীরা এ হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে ইরানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার মাধ্যমে তিনটি ড্রোনকে ধ্বংস করা হয়েছে।
ইস্পাহানকে কেন টার্গেট করা হয়েছে ?
রাজধানী তেহরান থেকে ইস্পাহান প্রদেশের দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৩০০ কিলোমিটার। মূলত ইস্পাহান শহরটি ইরানের কেন্দ্রে অবস্থিত। এই শহরে পারমাণবিক স্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আছে। এমনকি দেশটির সবচেয়ে বড় সামরিক বিমান ঘাঁটিও রয়েছে এই শহরে।
একজন পারমাণবিক এবং রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে বলেছেন, সম্ভাব্য লক্ষ্য হিসেবে ইরানের দ্বিতীয় শহর ইস্পাহানকে বেছে নেয়া ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’।
ইস্পাহানে হামলা সম্পর্কে সাবেক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক কিমিট বলেন, ইস্পাহান অনেকাংশে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। প্রশিক্ষণ ও গবেষণার দিক থেকে এই শহর বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর পারমাণবিক বাহিনীর সাবেক কমান্ডার হামিশ ডি ব্রেটন গর্ডন উল্লেখ করেছেন, শহরটির আশপাশে অনেকগুলো সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সেগুলোরই একটি ছিল লক্ষ্যবস্তু। আর তাই এটিই সম্ভাব্য স্থান যেখানে ইসরায়েল হামলা করবে।
শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন
হামিশ ডে ব্রেটন গর্ডন বিবিসিকে বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার আশপাশে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। এর মধ্য দিয়ে মূলত ইরানে হামলা করার সক্ষমতার বিষয়ে জানান দিতে চেয়েছে ইসরায়েল। ইরানের ছোড়া তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সব কটিই ইসরায়েল ভূপাতিত করেছিল। কিন্তু ইসরায়েলের ছোড়া কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটি সফলভাবে আঘাত করেছে।
ব্রেটন গর্ডনের মতে, সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে ইরানের চেয়ে এগিয়ে আছে ইসরায়েল। সে কারণেই ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ এড়িয়ে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিদের মতো গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে ছায়াযুদ্ধ চালাতে বেশি আগ্রহী।
ইরানের পক্ষ থেকে হামলার এ ঘটনাকে ছোট হিসেবে দেখানোর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইরানের পুরোনো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ভেদ করেছে, এটা তেহরান স্বীকার করতে চাইছে না।
অন্যদিকে বিবিসির নিরাপত্তা প্রতিবেদক ফ্রাঙ্ক গার্ডেনার ইরানে শুক্রবারের হামলার মাত্রাকে সীমিত এবং সম্ভাব্যভাবে পরিকল্পিত বলে বর্ণনা করেছেন যাতে সংঘাত আর না বাড়ে।
No comments