Adsterra

জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা

জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News

মিল্টন সমাদ্দারের জন্ম ১৯৮৪ সালে বরিশালের উজিরপুরের গুটিয়া ইউনিয়নের বৈরকাঠী গ্রামে। মিল্টন তার বাবা জন সমাদ্দারের দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া মিল্টন তিনবেলা ঠিকমতো খাবার পেতেন না। জীবিকার জন্য মানুষের জমিতে কাজ করতেন।


ছোটবেলা থেকেই তার ছিল অর্থের মোহ। বিয়ে, ব্যবসা এমনকি ধর্মকেও তিনি ব্যবহার করেছেন নিজের লাভের জন্য। বাল্যকালের বন্ধু, শিক্ষক, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে নানা প্রতারণার তথ্য। কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে মিল্টন সমাদ্দার অনেক অভিযোগ স্বীকারও করেছেন।


জানা গেছে, ছোটবেলায় ছবি আঁকায় পারদর্শী ছিলেন মিল্টন। বরিশালে জেলা পর্যায়ে ছবি এঁকে পুরস্কারও জিতেছেন। স্কুলের শিক্ষক ‘হামিদ স্যার’ তাকে ছবি আকার সরঞ্জাম কিনে দিতেন। তবে টাকা না দিলে স্কুলের পক্ষে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন না মিল্টন। প্রতিবার পুরস্কার পেলে স্কুলের পক্ষ থেকে তাকে ৫০ টাকা দিতে হতো।


তবে পড়াশোনায় ভালো ছিলেন না কখনো। ছোটবেলা থেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন নানা প্রতারণার। প্রথমবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে গণিতে ফেল করেন। এরপর ২০০১ সালে ফের পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন।


ওই বছরই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পিতা জন সমাদ্দারকে পিটিয়ে আহত করেন। এরপর বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। একটি ওষুধ কোম্পানিতে আড়াই হাজার টাকা বেতনে চাকরি পান মিল্টন। কিছুদিনের মধ্যেই ফার্মেসি কর্মকর্তা এবং হাসপাতালের নার্সদের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর শুরু করেন চুরি।


ওই কোম্পানির চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সঙ্গে সখ্য গড়ে রাতারাতি পদোন্নতি বাড়িয়ে নেন এসএসসি পাস মিল্টন। আড়াই হাজার টাকা থেকে তার বেতন বেড়ে দাঁড়ায় ১২ হাজার। তখন নিজেকে তিনি সরকারি বাঙলা কলেজের স্নাতকের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিতেন।


শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন

শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প। সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


সে সময় কোম্পানিতে প্রভাব খাটিয়ে নিজের বাসায় ওষুধ মজুত করা শুরু করেন মিল্টন। দাম বাড়লে সেসব ওষুধ বাজারে বিক্রি করতেন। একসময় ওষুধ চুরির বিষয়টি ধরা পড়লে চাকরি হারান। ততদিনে বেশ কিছু টাকা জমিয়ে ফেলেছেন। সেই টাকা দিয়ে ২০০৪ সালে চন্দ্রকোনা খ্রিষ্টান মিশন স্কুলে নার্সিংয়ে ভর্তি হন। অসদাচরণের জন্য সেখান থেকেও এক বছরের জন্য বহিষ্কার হন। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের এক নার্সের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। একপর্যায়ে তাকে বিয়ে করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৯ সালে নার্সিং পাস করেন।


পরে মিল্টন সমাদ্দার মনোয়ারা হাসপাতালে নার্সিংয়ের চাকরি নেন। কিছুদিন পরে চলে যান আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে। এভাবে ২০১২ সাল পর্যন্ত সেখানে চাকরি করেন। সে সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকাও হাতিয়ে নেন। পরে চাকরি ছেড়ে তৈরি করেন ‘মিল্টন হোম কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৪ সালে অনলাইনে ব্যবসা জমানোর চেষ্টা করেন। তবে সফল হননি।


এরপর সেই ফেসবুক পেইজের নাম বদলে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ করেন। সেই থেকেই রাস্তা থেকে অসহায় মানুষদের তুলে এনে আশ্রমে তুলছেন। আর তাদের নিয়ে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে প্রচার করে অর্থ সংগ্রহ করছেন।

No comments

Powered by Blogger.