কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির পড়েন জবিতে, থাকেন ঢাবির হলে
সাব্বির আহমেদ সিফাত। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসম্পাদক। পড়ালেখা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)। কিন্তু আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলে। শুধু থাকাতেই সীমাবদ্ধ নয়, হলের শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট কানেকশন এনে দেওয়া, কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করাসহ নানা কাজেও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাঁর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাব্বির আহমেদ সিফাত জবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি চাঁদপুর। ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। শয়নের শেল্টারে তিনি হলে থাকেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একাধিক শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা–কর্মীর সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, সাব্বির আহমেদ সিফাত হলের ৩৪৩ নং কক্ষে থাকেন। হলের শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ আগে গ্রিন অনলাইন জোন নামক একটি কোম্পানি থেকে ইন্টারনেট কানেকশন নেন সাব্বির এবং কেন্দ্রীয় উপ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। পরে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা যায়—সরাসরি কোনো কোম্পানি থেকে নয়, থার্ড পার্টির কাছ থেকে এ কানেকশন নিয়েছেন। এপ্রিল মাসের বিল নিয়ে ইন্টারনেট না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, আরিফ ও সাব্বিরের সহায়তায় থার্ড পার্টির রবিন ও নাভিদ সাচ্চু নামে দুজন টাকা নিয়ে পালিয়েছে। সেক্ষেত্রে আরিফ ও সাব্বিরও সুযোগ পেয়েছে। যদিও তারা দুজনই এ বিষয়ে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল ‘২৫ দিন ধরে ইন্টারনেট নেই ঢাবির সূর্যসেন হলে, ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর’ শিরোনামে আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়।
জবির হয়েও সূর্যসেন হলে থাকা এবং চুক্তি করে ইন্টারনেট কানেকশন নিয়ে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সাব্বির আহমেদ সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, হলে যখন নেট কানেকশন দুর্বল ছিল তখন আমরা মিলেমিশে নতুন কানেকশন নিয়ে আসছিলাম। পরে এখন কেন দিচ্ছে না, সে বিষয়ে অবগত নই এবং কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নই।
আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও ঢাবির হলে থাকেন—এমন প্রশ্ন করলে সুর পাল্টে ফেলেন সাব্বির। তিনি বলেন, ইন্টারনেট কানেকশন আনার বিষয়ে আমি জড়িত নই। হলে থাকার বিষয়ে কোনো মন্তব্যও করেননি তিনি। এ নিয়ে জানতে মাজহারুল কবির শয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।
জবির হয়েও সূর্যসেন হলে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণমাধ্যমের সংবাদের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। আমাদের একটি টিম কাজ করছে, আবাসিক শিক্ষকদের সমন্বয়ে। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
No comments