Adsterra

কেন ব্ল্যাক ছেড়েছিলেন তাহসান-জন ?

কেন ব্ল্যাক ছেড়েছিলেন তাহসান জন, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News

শূন্য দশকের শুরুর দিকে বাংলা রক গানে জোয়ার এনেছিল ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’। ১৯৯৮ সালে তিন বন্ধু জন কবির, জাহান ও টনির হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় ব্যান্ডটির। পরে যোগ দেন মিরাজ ও তাহসান। চার বছর পর ২০০২ সালে বাজারে আসে ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম ‘আমার পৃথিবী’। অ্যালবামের গানগুলো ব্যাপক সাড়া ফেলে দেশের তরুণ শ্রোতাদের মাঝে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরের বছর প্রকাশিত হয় ‘উৎসবের পর’। এ অ্যালবাম ব্ল্যাককে নিয়ে আসে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।


২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল চট্টগ্রামে কনসার্ট শেষ করে ঢাকায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ব্ল্যাকের সদস্যরা। মারা যান ব্যান্ডের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ইমরান আহমেদ চৌধুরী মবিন। এ দুর্ঘটনা ব্যাপক প্রভাব ফেলে ব্ল্যাকে। ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে পড়ে ব্যান্ডের কার্যক্রম। ওই বছরই ব্যান্ড ছাড়েন তাহসান। আর জন কবির ব্ল্যাক থেকে বেরিয়ে আসেন ২০১১ সালে। এরপর তাদেরকে আর একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে পরিবর্তন হয়েছে ব্যান্ডটির লাইনআপ। তবে কিছুদিন আগেই হঠাৎ করে চমকে দিয়ে  ১৯ বছর পর সেই পুরনো লাইনআপে এসে গত ১০ মে কনসার্ট করে ব্ল্যাক। কনসার্টটির জন্যই মূলত এক হন ব্ল্যাকের সাবেক ও বর্তমান সদস্যরা। যেটাকে বলে ব্ল্যাকের রি-ইউনিয়ন, যেখানে হাজির হয়েছিলেন তাহসান ও জন।


তবে বিভিন্ন সময়েই প্রশ্ন উঠে শূন্য দশকের জনপ্রিয় এই ব্যান্ডটি কেন ভেঙ্গেছিল, তাহসান এবং জন কেন ব্যান্ড ছেড়েছিল! শোনা যায়, ২০০৬ সালের মাঝামাঝিতে ব্যান্ডের আপেক্ষিক নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে একক সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ব্যান্ডটি থেকে আলাদা হয়ে যান যেটি সেসময় ভক্তরা সহজভাবে নেননি। এরপর একটা সময়ে অর্থাৎ ২০১১ সালের দিকে জনও ব্যান্ড ছেড়ে দেন।


তাদের ব্ল্যাক ছেড়ে দেবার কারণ প্রসঙ্গে ব্যান্ডটির ড্রামার টনি ও গিটারিস্ট জাহান জানান, একক ক্যারিয়ার গড়তেই তারা দুজনে (তাহসান ও জন) ব্যান্ড ছাড়েন। সেইসঙ্গে এও জানান, কেউ যদি ব্যান্ডটি ওন করে তাহলে সে ব্যান্ডের শেষ পর্যন্ত থাকবে আর যদি নিজেকে প্রায়োরিটি দেয় তাহলে সে তো নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবে।


সে সময়কার পরিস্থিতি জানিয়ে টনি-জাহান বলেন, বলতে গেলে একটা স্টেজে এসে সবারই একটা চাহিদা তৈরি হয়, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা হয়। তাহসান যে জনরার গান করে সেটা ব্যান্ডের সঙ্গে যাচ্ছিল না, তার অনেকগুলো গান রেডি ছিল কিন্তু প্রকাশ হচ্ছিল না। এদিকে তাহসান চাচ্ছিল সে এককভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়বে। তাছাড়া সেসময় সে অভিনয়ও করতো, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। তখন অবশ্য তাকে না করা হয়েছিল কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। সে এককভাবে ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছিল। জনের ক্ষেত্রেও অনেকটা সেইম। দেখা যেত জনের সঙ্গে বোঝাপড়া অনেক সময় মিলত না।  তার আর্নিংয়ের সোর্স তৈরি হচ্ছিল এবং সেও চাচ্ছিল নিজের মতো করে কিছু করতে। একটা সময় এমনও হয়েছে ওর জন্য আমাদের গুরুত্বপূর্ণ শো ক্যানসেল করতে হয়েছিল। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা মেজর কনফ্লিক্ট হয়। ব্যান্ড ভেঙে গেলেও এখনও তাহসান কিংবা জনের সঙ্গে আমাদের দেখা হয়, আলোচনা হয়। কিন্তু মিউজিকটা ভেঙে গেছে।   


এর আগে সর্বশেষ ব্ল্যাক ২০০৫ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার একটি মিলনায়তনে পারফর্ম করেছিল। এরপর তাদেরকে আর একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। ব্যান্ডটি এ পর্যন্ত পাঁচটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেছে। এগুলো হলো ‘আমার পৃথিবী’ (২০০১), ‘উৎসবের পর’ (২০০৩), ‘আবার’ (২০০৮), ‘ব্ল্যাক’ (২০১১) ও ‘ঊনমানুষ’ (২০১৬)। এছাড়া বেশ কিছু মিশ্র অ্যালবামেও গান করেছে এই ব্যান্ড। ব্ল্যাক-এর বর্তমান লাইনআপ এমন- ভোকাল ঈশান হোসেন, লিড গিটার জাহান, বেজ গিটার চার্লস ফ্রান্সিস, ড্রামস ও পারকাশনস ফারহান তানভীর।

No comments

Powered by Blogger.