নজরুলের সাম্যচিন্তা এবং তার প্রাসঙ্গিকতা
ধর্মের আতশকাচে নজরুল অসাম্যকে দেখেছেন তিনটি দৃষ্টিকোণ থেকে—মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে, মানুষের মাঝে বিভাজনের দিক থেকে এবং ধর্মীয় ভণ্ডামির দৃষ্টিকোণ থেকে। নজরুল সব সময় বলেছেন, মানবিকতাই মানুষের সবচেয়ে বড় ধর্ম।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের বহুল পরিচিতি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে, কিন্তু নজরুল উঁচুমার্গের ‘সাম্যবাদী কবি’ও বটেন। নজরুলের সাম্যচিন্তা তাঁর জীবনের বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত। তাঁর শৈশব-কৈশোরের জীবন অভিজ্ঞতা, তাঁর যৌবনের যাপিত জীবন তাঁকে বাস্তব পৃথিবীর দারিদ্র্য, অসমতা ও অসাম্যের সঙ্গে পরিচিত করেছে অত্যন্ত নগ্নভাবে। তাই নজরুলের কবিতায়, গানে ও প্রবন্ধে তাঁর সাম্যবাদী চিন্তা-চেতনা অত্যন্ত জোরালোভাবে পরিস্ফুট। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, সমতার পক্ষে, সাম্যের পক্ষে রবীন্দ্রনাথও উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। কিন্তু তাঁর সাম্যচিন্তা, তাঁর মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা এবং সেই সঙ্গে নৈতিকতার বোধ থেকে এসেছে, যাপিত জীবনের বাস্তবতা থেকে নয়। অন্যদিকে নজরুলের সাম্যচিন্তা একেবারেই জীবন থেকে নেওয়া।
নিজের বিভিন্ন লেখায় নজরুল কখনো সাম্যের কথা বলেছেন, কখনো সমতার কথা বলেছেন। এ বিভাজন একটি সচেতন চিন্তা থেকেই এসেছে। সাম্যের ধারণাটি আপেক্ষিক, যেখানে সমতার ধারণাটি অনপেক্ষ। নজরুল যখন বিশ্বমানবতার কথা বলেন, তখন একটি অনপেক্ষ মাত্রিকতা থেকেই সে কথা বলেন। অন্যদিকে তিনি যখন নারী-পুরুষের সাম্যের কথা বলেন, তখন সেটা একটা আপেক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই বলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি, নজরুলের সাম্যচিন্তার দুটো স্তর আছে—একটি সামষ্টিক, অন্যটি ব্যষ্টিক।
সামষ্টিক পর্যায়ে নজরুল সাম্যচিন্তার উচ্চতম মাত্রিকতায় অবস্থান করেছেন। সেই সাম্যচিন্তায় বিশ্বমানবতা, সামগ্রিক মানবতাই প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর কাছে প্রতিটি মনুষ্যজীবনই মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই তিনি উচ্চকণ্ঠে বলেছেন:
‘গাহি সাম্যের গান,
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই,
নহে কিছু মহীয়ান।’
মানুষকে সমভালোবাসায়, সমশ্রদ্ধা ও মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করাই এই সাম্যচিন্তার মূলকথা।
এই শ্রদ্ধা, এই মর্যাদা নজরুল একজন দরিদ্র মানুষকেও দেন। তাই দারিদ্র্যের অহংকারকে তিনি একটি উচ্চতম স্তরে প্রতিস্থাপন করেছেন তাঁর ‘দারিদ্র্য’ কবিতায়। অতিজোরালোভাবে তিনি বলেছেন:
‘হে দারিদ্র্য,
তুমি মোরে করেছো মহান, তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীষ্টের সম্মান।
কণ্টক মুকুট শোভা। দিয়াছ তাপস, অসংকোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস।’
দারিদ্র্যের মাঝেও যে মর্যাদা ও অহংকার থাকে, তাকেই সমমর্যাদায় নজরুল প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিত্তের সঙ্গে। এই সমতা বোধ তুলনাহীন। বিশ্বমানবতার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের কথা তিনি ব্যক্ত করেছেন তাঁর বিখ্যাত ‘আমার জবানবন্দীতে’ও।
ব্যষ্টিক দিক থেকে নজরুল সাম্যকে দেখেছেন চারটি মাত্রিকতায়—বিত্তবান ও দরিদ্রের মধ্যে, শ্রম ও পুঁজির মধ্যে, ধর্মীয় গোষ্ঠীদের মধ্যে, নারী ও পুরুষের মধ্যে। ধনী-নির্ধনের মধ্যে অসমতাকে তিনি ব্যঙ্গ করেছেন এই বলে:
‘তুমি শুয়ে রবে তেতলার পরে,
আমরা রহিব নীচে,
অথচ তোমারে দেবতা বলিব,
সে ধারণা আজ মিছে’।
দরিদ্র মানুষদের শোষণের মাধ্যমে যে ধনীর বিত্ত গড়ে ওঠে, সেটা নজরুল পরিষ্কার করে বলেছেন:
‘তোমার অট্টালিকা কার খুনে রাঙা?
ঠুলি খুলে দেখ, প্রতি ইঁটে আছে লিখা।
তুমি জান না ক’,
কিন্তু পথের প্রতি ধূলিকণা জানে, ঐ পথ, ঐ জাহাজ, শকট, অট্টালিকার মানে!’
কিংবা:
‘দেখিনু সেদিন রেলে,
কুলি বলে এক বাবু সা’ব তারে ঠেলে দিলে নীচে ফেলে!
চোখ ফেটে এল জল,
এমনি করে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল?’
তবে মানবতায় চিরবিশ্বাসী নজরুল আশা ছাড়েননি। তাঁর আশাবাদী মন ব্যক্ত করেছে যে এ অসাম্য একদিন শেষ হবে। তিনি যেন দেখতে পেয়েছেন সেই দিনকে, যেখানে দরিদ্রকে তার পাওনা কড়ায়-গন্ডায় বুঝিয়ে দিতে হবে:
‘আসিতেছে শুভদিন,
দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা,
শুধিতে হইবে ঋণ!’
কিন্তু না, সেই ঋণ এখনো শোধ হয়নি, হয়নি সে শোষণের অবসান। আজও বহু সমাজে দরিদ্র মানুষের অবস্থান প্রান্তিক, যেখানে বঞ্চনা তাদের নিত্যসঙ্গী এবং ভঙ্গুরতা তাদের জীবনের বিশাল এক মাত্রিকতা।
শ্রম আর পুঁজির মধ্যকার অসমতা সমাজে একটি অসাম্যের জন্ম দেয়। শ্রমিক সেখানে শোষিত আর পুঁজিপতি সেখানে শোষক। শ্রমিকের রক্ত আর ঘাম দিয়েই গড়ে ওঠে সভ্যতা, আসে উন্নয়ন। আর শ্রমিকের শোষণের মাঝেই বিত্তের সম্পদ গড়ে তোলে পুঁজিপতিরা। পুঁজিবাদী অর্থনীতির এটাই স্বরূপ-অসাম্যই সেখানে নিয়ম। তাই নজরুলের ভাষ্য:
‘রাজপথে তব চলিছে মোটর, সাগরে জাহাজ চলে,
রেলপথে চলে বাষ্প-শকট, দেশ ছেয়ে গেল কলে,
বল ত এ-সব কাহাদের দান!’
সাম্যবাদী নজরুল সর্বদা শ্রমিকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, কণ্ঠ মিলিয়েছেন শ্রমিকের সঙ্গে। শ্রমিকের উৎপাদন থেকে পুঁজিপতিদের ফেঁপে ওঠার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার হয়েছেন, দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে নিন্দা করেছেন শ্রম ও পুঁজির মধ্যকার অসাম্যকে:
‘যে দধীচিদের হাড় দিয়ে ঐ বাষ্প-শকট চলে, বাবু সা’ব এসে চড়িল তাহাতে,
কুলিরা পড়িল তলে।
বেতন দিয়াছ?-চুপ রও যত মিথ্যাবাদীর দল! কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই কত ক্রোর পেলি বল্?’
ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই কিনুন রকমারি থেকে।
ধর্মের আতশকাচে নজরুল অসাম্যকে দেখেছেন তিনটি দৃষ্টিকোণ থেকে—মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে, মানুষের মাঝে বিভাজনের দিক থেকে এবং ধর্মীয় ভণ্ডামির দৃষ্টিকোণ থেকে। নজরুল সব সময় বলেছেন, মানবিকতাই মানুষের সবচেয়ে বড় ধর্ম।
তাই তিনি ঘোষণা করেছেন:
‘নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।’
সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি একটি ধর্মনিরপেক্ষ বোধ তাঁর চিন্তা-চেতনায় লালন করেছেন। যার জন্য তিনি একদিকে যেমন শ্যামাসংগীত রচনা করেছেন, অন্যদিকে ইসলামি গানও লিখেছেন। মানবতার মহাবাণীকে তিনি তুলে ধরেছেন এই বলে:
‘সকল কালের সকল দেশের সকল মানুষ আসি
এক মোহনায় দাঁড়াইয়া শোনো এক মিলনের বাঁশী।
একজনে দিলে ব্যথা-সমান হইয়া বাজে সে বেদনা সকলের।
একের অসম্মান
নিখিল মানব-জাতির লজ্জা-সকলের অপমান!’
ধর্মীয় কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে নজরুল ছিলেন সোচ্চার। মানবতার সবচেয়ে বড় বাধা বলে ধর্মীয় সংকীর্ণতা নজরুল চিহ্নিত করেছেন। মুক্ত বুদ্ধি, মুক্তচিন্তার ধারক ও বাহক নজরুল মানবিক উদারতাকেই উঁচুতে তুলে ধরেছেন। নিজেকে সব সংকীর্ণতা, সব ক্ষুদ্রতা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান করেছেন:
‘আজ হৃদয়ের জমা-ধরা যত কবাট ভাঙিয়া দাও,
রং-করা ঐ চামড়ার যত আবরণ খুলে নাও!
আকাশের আজ যত বায়ু আছে হইয়া জমাট নীল,
মাতামাতি ক’রে ঢুকুক এ বুকে, খুলে দাও যত খিল!’
ধর্মের নামে ভণ্ডামিতে নজরুল ব্যথিত হন। বড় দুঃখে বলেন:
‘হায় রে ভজনালয়,
তোমার মিনারে চড়িয়া ভণ্ড গাহে স্বার্থের জয়!’
তাঁর বিদ্রোহী কণ্ঠ তখন বলে:
‘খোদার ঘরে কে কপাট লাগায়, কে দেয় সেখানে তালা? সব দ্বার এর খোলা রবে, চালা হাতুড়ি-শাবল চালা!’
নারী-পুরুষের সমতা প্রশ্নে নজরুলের ‘নারী’ কবিতাটি তাঁর চিন্তাচেতনার অন্যতম বহিঃপ্রকাশ। নারীর অধিকার, সমাজে নারীর অবস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে নানান জোরালো বক্তব্য এসেছে কবিতাটিতে। জীবনের নানান ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকাকে মাতা হিসেবে, কন্যা হিসেবে, বধূ হিসেবে, প্রেয়সী হিসেবে, ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন নজরুল। সেই সঙ্গে নারীর অবদানকে মহিমান্বিত করেছেন তিনি। কিন্তু সেটি করতে গিয়ে নারীর শুদ্ধ ‘মনুষ্য-সত্তা’কে ততটা পরিস্ফুট করেননি তিনি।
কিন্তু এটা স্বীকার করতেই হবে, সমতার এক অনন্য স্তরে নারীকে স্থাপন করেছেন নজরুল। তাই তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলতে পেরেছেন:
‘সাম্যের গান গাই
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।’
মানব ইতিহাসে নারীর ভূমিকাকে সমান মর্যাদা দিয়েছেন নজরুল। তাঁর ভাষ্যেও সে কথাটিও সুস্পষ্ট:
‘বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’
নারী-পুরুষের সাম্য বিষয়ে তিনি সামনের দিকে তাকিয়েছেন, সমাজ-সংস্কারের কথা বলেছেন এবং নারীকে বন্দী করে রাখার ফলাফল সম্পর্কে পুরুষকে সাবধান করে দিয়েছেন:
‘সে যুগ হয়েছে বাসি,
যে যুগে পুরুষ দাস ছিল না ক’, নারীরা আছিল দাসী।
বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ আজি,
কেহ রহিবে না বন্দী কাহারও, উঠিছে ডঙ্কা বাজি।
নর যদি রাখে নারীরে বন্দী, তবে এর পর যুগে
আপনারি রচা অই কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে।
যুগের ধর্ম এই—
পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই!’
নজরুলের সাম্যচিন্তা প্রসঙ্গে উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি সংগত প্রশ্ন উঠে আসে—বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে নজরুলের সাম্যচিন্তা কতখানি প্রাসঙ্গিক। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাক, সাম্যের মাত্রিকতায় আমাদের সময়ের রূপ ও প্রকৃতি কী রকম। বলার অপেক্ষা রাখে না, আমরা একটি অসম, অস্থিতিশীল এবং অবজায়ক্ষম পৃথিবীতে বাস করি।
আজকের বিশ্ব সংজ্ঞায়িত হচ্ছে অসমতার দ্বারা। অসমতা রয়েছে দেশে-দেশে, জাতিতে-জাতিতে, অঞ্চলে-অঞ্চলে। অসমতা রয়েছে বিভিন্ন আর্থসামাজিক, নানা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মধ্যে, নানা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মাঝে, নারী-পুরুষের মাঝে। অসমতা রয়েছে সুযোগে, অসমতা রয়েছে ফলাফলে। এই অসম পরিবেশে মানুষে-মানুষে বিভাজন বাড়ছে, মানুষের ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা এক উচ্চমাত্রায় স্থিতু হয়েছে।
ব্যক্তিপর্যায়ে, সমাজপর্যায়ে এবং রাষ্ট্রপর্যায়ে ক্ষমতার অসমতা একটি অস্থির, অস্থিতিশীল কাঠামোর জন্ম দিয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে। জন্ম নিয়েছে সহিংসতা ও সন্ত্রাস। সামাজিক সংহতি বিনষ্ট হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে মানবিক সহনশীলতা। এক অর্থে এর ফলে সামাজিক অবজায়ক্ষমতা নাজুক হয়ে পড়ছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নজরুল বিশ্বমানবতার ধারণা, মানবিকতার চিন্তাচেতনা আমাদের পৃথিবী ও সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আমাদের মানসিকতাকে পরিবর্তন করে একটি সুষম জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা নজরুলের সর্বজনীন মানবিকতার বোধের কাছে ফিরে যেতে পারি। সেই মানবিকতার বোধ থেকে মানব উন্নয়নের পথযাত্রা শুরু হতে পারে।
ব্যষ্টিক পর্যায়ে নজরুলের সাম্যচিন্তার যে চতুষ্টয় মাত্রিকতার কথা বলা হয়েছে, তার প্রতিটির প্রাসঙ্গিকতা বর্তমান সময়ের জন্য অতি প্রাসঙ্গিক। সে মাত্রিকতা নারী-পুরুষের সাম্যবিষয়ক হতে পারে, ধনী-নির্ধনের অসমতা বিষয়ে হতে পারে, কিংবা শ্রমজীবী বনাম পুঁজিপতি বিষয়ে হতে পারে। বহু অগ্রগতি ও অর্জন সত্ত্বেও নারী-পুরুষের বৈষম্য নানান সমাজে এখনো বিদ্যমান, সে অসমতা শুধু ফলাফলের নয়, সুযোগেরও। নজরুলের নারী-পুরুষবৈষম্য বিষয়ের চিন্তাচেতনা আমাদের সময়ে এ বৈষম্য রোধে একটা বড় ধারণা দিতে পারে।
ধর্মীয় অসাম্য এবং ধর্মীয় ভণ্ডামি সম্পর্কে নজরুলের বিশ্লেষণ আমাদের সময়ে ধর্মীয় গোঁড়ামি, মৌলবাদ ও সহিংসতা এবং সন্ত্রাস রোধে একটি দিকনির্দেশনার কাজ করতে পারে। ধর্মীয় উন্মাদনা, সাম্প্রদায়িকতা এবং সহিংসতার সংস্কৃতি আমাদের মানবিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করছে, সেটাকে প্রতিহত করার জন্যও আমরা নজরুলে ফেরত যেতে পারি।
নজরুলের সাম্যচিন্তা সর্বযুগের জন্যই প্রাসঙ্গিক। কারণ এই চিন্তা মৌলিক সর্বজনীন কিছু মানবিক চিন্তার ওপরে স্থিত। তবে আমি মনে করি, নজরুলের সাম্যচিন্তার ওপরে আরও আলাপ-আলোচনা, আরও গবেষণা হওয়া দরকার, যাতে আগামী পৃথিবীর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও নজরুল প্রাসঙ্গিক থাকেন।
No comments