নোয়াখালীতে হেরে গেলেন কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে মর্যাদার লড়াইয়ে হেরে গেলেন।নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীকে পরাজিত করে সেখানে গতকাল নির্বাচিত হয়েছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে সাবাব চৌধুরী।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং টানটান উত্তেজনা ছিল। নোয়াখালী রাজনীতিতে একরামুল করিম চৌধুরীকে মনে করা হয় ওবায়দুল কাদেরের প্রতিপক্ষ। একরামুল করিম চৌধুরী একবার ওবায়দুল কাদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং একরামুল প্রার্থী হওয়ার কারণেই ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের অনেকে মনে করে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- এই অবস্থানটি নেওয়ার পিছনে নোয়াখালীর রাজনীতি কাজ করেছে। এই নির্বাচনে যেন শেষ পর্যন্ত অধ্যক্ষ সেলিম বিজয়ী হন সেজন্য বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চেয়েছিলেন নোয়াখালী জেলার সভাপতি যেন বিজয়ী হন। আর এই কারণেই শাবাব চৌধুরীকে নির্বাচন থেকে বসানোর জন্য চেষ্টা তদবির করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একরামুল করিম চৌধুরীর একগুঁয়েমির কারণে শাবাব চৌধুরী নির্বাচন থেকে বসেননি। বরং একরামুল করিম চৌধুরী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, সন্তান বড় হলে অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই কিনুন রকমারি থেকে।
একরামুল করিম চৌধুরী মুখে যাই বলুক না কেন, এই নির্বাচনে জেতানোর জন্য তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মরিয়া চেষ্টা করেছেন। একরামুল করিম চৌধুরী যেমন নোয়াখালী- আসনের এমপি, তেমনই তাঁর স্ত্রী কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। স্বামী-স্ত্রী মিলে সন্তানকে রাজনীতিতে অভিষিক্ত করার এক মরণপণ লড়াই করেছিলেন এবং এই লড়াইয়ে অবশেষে গতকাল ৭০৩ ভোটের ব্যবধানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে পরাজিত করেছেন শাবাব। এটির ফলে নোয়াখালীতে একরামুল করিম চৌধুরীর কর্তৃত্ব আরও বেড়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যেহেতু কবিরহাট এবং সুবর্ণচর দুটি উপজেলার চেয়ারম্যানের পদ তাঁর দখলে এবং তিনি নিজে এমপি। নোয়াখালীর রাজনীতিতে তাঁর আগে থেকেই প্রভাব রয়েছে। আর এ কারণেই অনেকে মনে করছেন যে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আসলে ওবায়দুল কাদেরকে হারিয়ে দিলেন একরামুল করিম চৌধুরী।
তবে ওবায়দুল কাদেরের সমর্থকরা বলছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান কে হলো না হলো তাতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কিছু যায় আসে না। তিনি এই নির্বাচনে কারও পক্ষেও ছিলেন না আবার কারও বিপক্ষেও ছিলেন না। বরং তিনি চেয়েছিলেন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে যেন জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। কিন্তু একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলের এই বিজয় নোয়াখালীর রাজনীতিতে একটি বড় ধাক্কা বলেই নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
No comments