Adsterra

চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটা : মন্ত্রীর পিএস নিজেই যেতে পারেন না, সঙ্গে নিচ্ছেন ছেলেকে

চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটা : মন্ত্রীর পিএস নিজেই যেতে পারেন না, সঙ্গে নিচ্ছেন ছেলেকে, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top

সরকারি হাসপাতালের ক্যানসার ইউনিটের জন্য কিছু উপকরণ কেনা হবে। সেসব সামগ্রীর প্রাক্‌-জাহাজীকরণ পরিদর্শনে (পিএসআই) ছয় দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন দুই প্রকৌশলী, এক উপসচিব (গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর একান্ত সচিব বা পিএস) এবং পিএসের ছেলে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। অনেক প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা বলছেন, কারিগরি ওই কাজে মন্ত্রীর পিএসের যাওয়ারই কোনো যুক্তি নেই। তার ওপর নিজের ছেলের নামও ঢুকিয়েছেন।


স্বচ্ছতা ও সুশাসন বিষয়ে বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রযুক্তি বিকাশের এ যুগে পরিদর্শনের নামে এভাবে বিদেশে যাওয়াই অর্থহীন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন অনলাইনে ঘরে বসেই পণ্য যাচাই করা সম্ভব।


সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ নূর মোহাম্মদের সই করা এক অফিস আদেশে দেখা যায়, আগামী ১৫ থেকে ২০ মে পর্যন্ত ছয় দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন তিন কর্মকর্তা এবং একজনের ছেলে। ‘শেরেবাংলা নগর নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল ও দেশের আট বিভাগীয় শহরে ক্যানসার হাসপাতাল’ প্রকল্পের আওতায় ক্যানসার ইউনিট স্থাপনসংক্রান্ত সামগ্রীর প্রাক্‌-জাহাজীকরণ দেখতে যাচ্ছেন তাঁরা। সফরকারী দলে থাকছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর পিএস এ এস এম হুমায়ূন কবীর, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. শামসুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল হক এবং হুমায়ূন কবীরের ছেলে আহমেদ তৌসিফ জামী। তিনি সদ্য পড়াশুনা শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ক্যানসার ইউনিটের সামগ্রী বিষয়ে মন্ত্রীর পিএসেরই কোনো দক্ষতা বা সম্পৃক্ততা নেই। তা সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজের পাশাপাশি ছেলের নামও ঢুকিয়েছেন তালিকায়।  

ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই কিনুন রকমারি থেকে।   বই সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই কিনুন রকমারি থেকে। 

বই সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন 


জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসন ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা এ এস এম হুমায়ূন কবীর যখন যেখানে দায়িত্ব পান, সেখানেই তিনি অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে থাকেন। চারদলীয় জোট সরকারের সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের পিএস হিসেবে হুমায়ূন কবীর পুরো মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করে কর্মহীন রাখা হয়েছিল। ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৩০ মে পর্যন্ত তিনি ওএসডি ছিলেন। পরে সংসদ সচিবালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে তাঁকে পদায়ন করা হয়। সেখানে থেকে ২৭তম ব্যাচের সঙ্গে তিনি উপসচিব হন। নতুন করে বিদেশ ভ্রমণে তিনি নিজের এবং ছেলের নাম লিখিয়ে আবার আলোচনায় এলেন।


এ বিষয়ে কথা বলতে হুমায়ূন কবীরকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে বিষয় জানিয়ে এসএমএস পাঠিয়ে আরও কয়েকবার ফোন করেও সাড়া মেলেনি।


মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ নূর মোহাম্মদ অবশ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফাইল যেভাবে অনুমোদন হয়ে আসে, চিঠি সেভাবেই করা হয়। তবে মন্ত্রীর পিএস যে সঙ্গে ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছেন, সেই খরচ তিনি ব্যক্তিগতভাবে বহন করবেন। সেখানে সরকারি কোনো অর্থ যাচ্ছে না।’


এ বিষয়ে জানতে গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. নবীরুল ইসলামকে ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।


ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ের নামে ঠিকাদারের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ মূলত তাঁদের মধ্যকার সখ্যের বহিঃপ্রকাশ। মূল কাজের সঙ্গে যুক্ত না হয়েও মন্ত্রীর পিএস কীভাবে বিদেশে যান? তাঁর তো এ কাজের কোনো দক্ষতাও নেই। সরকার যেখানে ব্যয়সংকোচন নীতি অনুসরণ করছে, সেখানে এ ধরনের ভ্রমণের অনুমোদন কেন? উচ্চপর্যায়ের লোকজনও এর দায় এড়াতে পারেন না।’

No comments

Powered by Blogger.