Adsterra

বড় বড় সাংবাদিকদের কিনেই তারপর এসেছি, সব থেমে যাবে : মতিউরের প্রথম স্ত্রী

বড় বড় সাংবাদিকদের কিনেই তারপর এসেছি, সব থেমে যাবে, মতিউরের প্রথম স্ত্রী, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot

ছাগলকাণ্ডের ১৪ দিন পর বৃহস্পতিবার নরসিংদীতে জনসম্মুখে আসেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী। জানা গেছে, বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দুটি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন। তবে সভাকক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেননি। সভা শেষে কালো রংয়ের পাজেরো জিপে তিনি উপজেলা থেকে বেরিয়ে যান। তখন সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকলেও তাদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িতে ওঠার সময় দাম্ভিকতার সুরে লাকী বলেন, ‘পাছে লোকে কত কিছুই বলে। তাতে আমার কিছু আসবে যাবে না।’


এসব বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লায়লা কানিজ লাকীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল হলেও তিনি রিসিভ করেননি। একই নম্বরে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো জবাব দেননি।


উপজেলা পরিষদের দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তার দম্ভোক্তি ছিল-‘ঢাকার ও নরসিংদীর জাতীয় পত্রিকা ও টিভির বড় বড় সাংবাদিকদের কিনেই উপজেলা পরিষদে এসেছি। তারা আর কিছু করতে পারবে না। সব থেমে যাবে।’


লাকীও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। সরকারি কলেজের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হয়ে কীভাবে তিনি এত সম্পদের মালিক হলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লাকী বর্তমানে রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। 


স্থানীয়রা জানান, চিহ্নিত রাজাকার আব্দুল কাদিরের নাতনি এই লাকী। তিনি এখন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের দুর্যোগ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। রাজাকার ও বিএনপি পরিবারের সন্তান হয়ে কিভাবে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত হলেন তা নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে আলোচনা রয়েছে। 


মেয়ে ইপ্সিতার মতো মা লায়লা কানিজ লাকীরও অঢেল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তার মাত্র ১২ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য আছে। বিপরীতে তিনি ২ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ দেখিয়েছেন। তাকে পাজেরো, বিএমডব্লিউ, রেঞ্জরোভার মডেলের বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করতে দেখা গেলেও আয়কর নথিতে তার নামে কোনো গাড়ির তথ্য নেই। তবে গাড়ির বিপরীতে মাত্র পৌনে তিন লাখ টাকার সম্পদ মূল্য দেখিয়েছেন তিনি। 


অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নরসিংদীর গ্রামে বিশাল প্রাসাদোপম বাড়ি আছে লায়লা কানিজের। ট্রিপ্লেক্স বাড়িটিতে একাধিক বিশালাকৃত্রির ড্রইংরুম ও ডজনখানেকের বেশি অভিজাত শয়নকক্ষ রয়েছে। অথচ এই বাড়ির কোনো তথ্য তার আয়কর ফাইলে নেই। তবে বাড়ির ফার্নিচার ক্রয় বাবদ মাত্র ৭৫ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। নরসিংদীতে দেড় একর জমি তিনি হেবামূলে পেয়েছেন। এ কারণে এই জমির কোনো দাম উল্লেখ নেই। মিরপুর এলাকার একটি অত্যাধুনিক ভবনে চারটি ফ্ল্যাটের মালিক লাকী। 


এগুলোও তিনি হেবাসূত্রে পেয়েছেন বলে আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। ফলে এগুলোর কোনো দাম লেখা নেই। এছাড়াও ৩২ বছর বয়সের মেকআপ আর্টিস্ট মেয়ের কাছ থেকে তিনি কোটি টাকার উপহার পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে মজার ব্যাপার হলো, সহজে যাতে তার সম্পদের খোঁজ পাওয়া না যায় তার কৌশল হিসাবে আয়কর নম্বর (টিআইএন) নিতেও চতুরতার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। টিন ফাইলে দিয়েছেন ভুয়া ঠিকানা। 


জানা গেছে, তিতুমীর কলেজের একজন সাধারণ শিক্ষক থেকে রাতারাতি রাজনীতির মাঠে নেমে সাড়া ফেলে দেন লাকী। স্থানীয় প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার (সাবেক মন্ত্রী) সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। নেতার সঙ্গে সম্পর্কের পাশাপাশি স্বামী মতিউরের অবৈধ টাকার জোরেই রাজনীতির ময়দানে তিনি জায়গা করে নেন। 

No comments

Powered by Blogger.