Adsterra

ঝিনাইদহ জেলা আ’লীগের সম্পাদক মিন্টু আটক

ঝিনাইদহ জেলা আ’লীগের সম্পাদক মিন্টু আটক, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News


সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।


একাধিক সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, আটকের পর মিন্টুকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিবি কোনো মন্তব্য করেনি।


ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম অপু বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার জেলায় প্রস্তুতি সভা হয়। এতে সাইদুল করিম মিন্টুর থাকার কথা ছিল। তিনি উপস্থিত না হওয়ায় ভেবেছিলাম, আসতে দেরি হচ্ছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর জানতে পারি, ঢাকা থেকে পুলিশ মিন্টুকে আটক করেছে।


এদিকে, আটকের খবরে সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের দলীয় কার্যালয়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা সরাসরি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এমনকি তাৎক্ষণিক কোনো বিক্ষোভও করেননি। তবে শহরের পায়রা চত্বর, পোস্ট অফিস মোড়, মুজিব চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল।


মিন্টুর আটকের খবরে আজীমের সংসদীয় আসন কালীগঞ্জ শহরে রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করেন। এতে উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী ও পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ উপস্থিত ছিলেন। নেতারা সঠিক তদন্ত এবং মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনসহ হত্যাকাণ্ডে যাদের নাম আসছে, জড়িত থাকলে তাদেরও কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান জানান, এমপি আজীম হত্যার তদন্ত করছে ঢাকার ডিবি। সাইদুল করিম মিন্টুকে পুলিশ ঢাকায় নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা ও পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।


গত ১২ মে ভারতে যান এমপি আজীম। ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে তিনি খুন হলেও জানাজানি হয় প্রায় ১০ দিন পর।


এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডে কলকাতায় হত্যা এবং ঢাকায় অপহরণ মামলা হয়। ঢাকার মামলা তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। এ মামলায় গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু ডিবির রিমান্ডে রয়েছেন।


তদন্ত সূত্র জানায়, আজীম হত্যার পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। কয়েক দিন ধরে তাঁকে নজরদারিতে রাখা হয়। কারণ হিসেবে খুনিদের নম্বর থেকে এসএমএস ও ছবি মিন্টুর কাছে এসেছে বলে তথ্য পান তদন্তকারীরা। যাদের ফোন নম্বরে ছবি ও এসএমএস এসেছে, তারাও গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এমপি আজীম খুনের পর আসামিরা কার কার সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেছেন, তা তদন্ত করা হচ্ছে। ছবি পাঠিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন কিনা, কাদের মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন– সব বিষয়েই তদন্ত হচ্ছে।


গতকাল বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ডিবিপ্রধান বলেন, হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীরা কলকাতা থেকে এমপি আজীমের ছবি হোয়াটসঅ্যাপে কার কাছে পাঠিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহের কয়েকজন রাজনীতিককে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুর বিষয়ে হারুন বলেন, সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে, বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। এ জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।


এমপি আজীমকে অপহরণের মামলায় সেলিস্তি রহমানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

এদিকে গতকাল ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এমপি আজীম চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা আমরা কখনও বলিনি। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকা। সেখানে সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে, তদন্ত না করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তদন্ত শেষ হলে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলব।


বিচার দাবিতে কালীগঞ্জে মানববন্ধন

এমপি আজীম হত্যার বিচার দাবিতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের কালীগঞ্জ শহরে গতকাল সকালে মানববন্ধন হয়েছে। শহরের সলিমুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও ছাত্রীরা অংশ নেন। তারা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।


মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুজ্জামান রাসেল, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদৌরা আক্তার যূঁথি, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ওমেদুল ইসলাম প্রমুখ। একই দাবিতে গতকাল ঝিনাইদহের নলডাঙ্গা বাজারেও একটি মানববন্ধন হয়।


 

No comments

Powered by Blogger.