চৌগাছার নামকরণ
চৌগাছা শব্দের শাব্দিক অর্থঃ-চৌশব্দের অর্থ চার আর গাছা শব্দের অর্থ গাছ। অর্থাৎ চারগাছের সমাহার চৌগাছা। আবার কেউ কেউ মনে করেন চার রাসত্মার সমাহার চৌগাছা।
ধর্মঃ চৌগাছা জনপদে মুসলমান, হিন্দু ও খুব অল্প সংখ্যক খৃষ্টান ধর্মের মানুষ দেখা যায়। বৌদ্ধ ধর্মাবলালাম্বী এখানে নেই।
সারাদেশের মতন সাম্প্রদায়িকতা এখানে নেই। বহু যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক বিরাজমান। মৃসলমানদের দুটি বৃহৎ দুই উৎসবে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা এ বৃহৎ দুই উৎসবে হিন্দু মাসলমান সবাই একই মিলনমোহনায় মেতে ওঠে আনন্দ আর নব বন্ধনে মিলে এক সাথে উৎসব পালন করে। হিন্দুদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। এ পূজায় হিন্দু মুসলমান সবাই মালে আলোয় উদ্ধাসিত হয়ে মিলে যায় মহা মিলদিলে। এছাড়া অন্যান্য উৎসবে মিলিত হয় সব ধর্মের মানুষেরা।
হিন্দু ধর্মের প্রভাবঃ বহু প্রাচীন আমল থেকে সনাতনী ধর্মাবলম্বীর মানুষ এখানে বাস করে আসছে। বিভিন্ন পূজা পার্বনের মধ্য দিয়ে তারা তাদের ধর্ম পালন করে আসছে। প্রায় সবাই ভারতীয় দেব-দেবীর বিশ্বাসী। অনার্য ও দ্রাবিড় জনগোষ্ঠি এ অঞ্চলে ধর্মাবলম্বী হওয়ায় নানা ধরনের কুসংস্কার ও নানা ধরনের পূজার উৎসব বহুদিন ধরে চলে আসছে।
পরবর্তী যুগে আর্যদের আবির্ভাবের ফলে বহুমাত্রিক উন্নততর পূজার পরিবর্তন লক্ষিত হয়। উন্নততর দেশ জাতি গঠনে দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য উন্নত চরিত্র গঠন, নারী জাতির মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য মা দূর্গা সহ বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা অর্চনা লক্ষ্য করা যায়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, অনার্য যগের পরে দ্রাবিড় ও আর্য সভ্যতার (উচ্চবর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়) আধিপত্য বিসত্মার লক্ষ্য করা যায়। অনার্য ও দ্রাবিড় মিশ্রিত হিন্দু নিম্নবর্ণের শংকর মানুষের অত্যাধিকতা চৌগাছা জনপদ লক্ষ করা যায়।
খৃষ্টপূর্ব ৪০০০ হাজার বছর পূর্বে আর্য জাতির আবির্ভাব ঘটে। এরা উচ্চতর উচ্চ বিলাসী ও উচ্চাভিসানী। এরা পোল্যান্ড থেকে ভারত বর্ষে এসে বসবাস শুরু করে। প্রথমে ভারত বর্ষের সিন্ধু প্রদেশে পরে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
ঐতিহাসিকগণ মনে করেন- হিন্দু নামের উৎপত্তি হয় সিন্ধুর বিকৃত নাম থেকে। চৌগাছার উপদ্বীপ ও সেই আর্যদের অধীনে চলে যায় শাসমত্ম তন্ত্রের কঠোর শাসনে গ্রেপ্তার হয় চৌগাছা। হিন্দু জমিদাররা কঠোর হসেত্ম নিম্নবর্ণের মানুষদের শাষন ও পোষন করতে থাকে।
এছাড়া কর্ত্তিক মন্দির কালিতলা, শীতলা তলা ও পঞ্চানন তলাও সে আমলে বিখ্যাত ছিল। এছাড়া ১২৩৫ খ্রী: কাঁদবিলা গ্রামে একটি শিব মন্দির নির্মিত হয়। প্রাচীন কালের আনকার লক্ষী নারায়ন মন্দিরটি এখন বিলুপ্তের পথে।
এছাড়া উপজেলার গুয়াতলী গ্রামের শিব মন্দির, কালী মন্দির, রথখোলা ও চন্ডীমন্ডপ চৌগাছার অন্যতম প্রধান হিন্দুদের লিলানিকেতন। দেবলা খড়িঞ্চা রাঁধা বল্লবজীর মন্দির বাংলা ১১৭২ সালে নদীয়ার ঘোষ পাড়ার বিখ্যাত গুরু বংশ কর্তৃক জমাজমি সহ ঐ বিগ্রহ তদীয় শিষ্য ফকির আউল চাঁদের সাধনার জন্য স্থাপিত হয়। এখনও ভক্তবৃন্দের শুভাশীষ আবির্ভাবে ধন্য হয়ে ওঠে রাঁধা বল্লবজীর মন্দির। এখানকার আর একটা ঐতিহাসিক নিদর্শনীয় মন্দির শ্রী কৃষ্ণ মন্দির।
মন্দিরটি ভগ্ন অবসত্মায় স্বরূপপুর গ্রামে কালের স্বাক্ষী হয়ে আজো কৃষ্ণের বাঁশি বাজায় আর মানুষের মিলনের কথা বলে।
এছাড়া সেই সময়কার হিন্দু জমিদারদের বাসগৃহের ধ্বংশাবশেষ ও প্রাচীন মা স্বরূপপুর গ্রামে পরিলক্ষিত হয়।
No comments