পাখিরাও কি ডিপ্রেসনে ভোগে?
শরীরের পাশাপাশি মনেও কষ্ট হয় পাখিদের, বন্দিদশায় একাকিত্বে ভোগে পাখিরা পোষা পাখির ব্যবহারে বদল আসবে, সারাক্ষণ ঝিমাবে, ডাকলেও সাড়া দেবে না। অনেকেই শখ করে ঘরের খাঁচায় পাখি পুষে থাকেন। তবে শুধুমাত্র শখ করে পাখি পুষলেই চলবে না। তার মনের খেয়ালও রাখতে হয়। এমনটাই বলে থাকেন পাখি বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, পাখির শরীরেও বিভিন্ন কারণে যন্ত্রণা হয়। মনও ভাল থাকে না সব সময়ে। তার কিছু লক্ষণও ধরা পড়ে তাদের আচরণে। সেগুলি কী কী, তা জেনে রাখা ভাল।
পাখিদের কি কি শারীরিক সমস্যা হয় ?
১. বাতের ব্যথায় ভোগে পাখিরাও। পাখি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, পাখিদের পা ও পিঠের হাড়ে ব্যথা হয়। এই যন্ত্রণা একটানা ভোগায় পাখিদের।
২. পাখিদের পেশির ব্যথাও হয়ে থাকে। খাঁচার পাখি উড়তে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকার কারণে বিভিন্ন রকম ব্যথা ভোগায় তাদের।
৩. ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ হতে পারে পাখির। তখন পালক উঠে যেতে শুরু করে, দুর্বল হয়ে পড়ে পাখির শরীর।
৪. শরীরের পাশাপাশি মনেও কষ্ট হয় পাখিদের। বন্দিদশায় একাকিত্বে ভোগে পাখিরা। এছাড়া সঙ্গিহীন অবস্থায় একা থাকতে থাকতে ডিপ্রেশনেও ভুগে থাকে খাঁচার পাখিরা। তবে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন বেশিরভাগ খাঁচার পাখিদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কী ভাবে বুঝবেন পাখি কষ্টে আছে ?
১. পোষা পাখির ব্যবহারে বদল আসবে। আপনি ডাকলেও সাড়া দেবে না। সারাক্ষণ ঝিমিয়ে থাকবে পাখি।
২. খাওয়ার পরিমাণ কমে যাবে। কিছু খেতে চাইবে না। সব সময়েই ঘুমোবে।
৩. শ্বাস নিতে কষ্ট হবে পাখির। খেয়াল করে দেখবেন, সারাক্ষণ দুই ঠোঁট ফাঁক করে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করবে।
৪. শরীরের যে জায়গায় যন্ত্রণা, সেখানে ঠোঁট দিয়ে ঘষতে থাকবে। আপনি কাছে গেলে তেড়ে আসবে। ঠোকর দেওয়ার চেষ্টা করবে।
৫. পাখির মলের রং বদলে যেতে পারে।
যা করণীয়
১. পোষ্যের ব্যবহারে বদল দেখলেই সবচেয়ে আগে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। পাখির শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটা আগে দেখা দরকার।
২. বন্দিদশায় একাকিত্ব দূর করতে পাখিদের সব সময়ে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। একা একা না রেখে একই ধরনের কয়েক জোড়া পাখি রাখুন। সময় পেলেই ওদের সঙ্গে খেলতে হবে। গায়ে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিন। তা হলেই ওরা বুঝবে আপনি পাশে আছেন।
৩. খাঁচার পাখিকে খেলাতে হবে, যাতে তার শারীরিক কসরত হয়। পাখির আকার ও বয়স অনুযায়ী খাঁচা কিনুন প্রথমে। ভিতরে যেন জায়গা বেশি থাকে। খাঁচার ভিতরে ছোট মই বা দোলনা রাখতে পারেন। ছোট ছোট বল রাখুন ভিতরে, যাতে পাখি খেলতে পারে।
৪. পাখির খাঁচা এমন জায়গায় রাখবেন, যেখানে বেশি রোদ পড়বে না। আবার বৃষ্টির পানিও আসবে না। বারান্দায় খাঁচা রাখলে চারদিকে প্লাস্টিক দিয়ে ঘিরে দিন।
৫. আরামদায়ক পরিবেশে পোষা পাখিকে রাখুন। চারপাশটা যেন শান্ত হয়, বেশি কোলাহল আপনার পোষ্য পছন্দ না-ও করতে পারে। ভালো হয় চারপাশে গাছপালা থাকলে।
৬. আদরের পাখি যদি খেতে না চায়, তা হলে ওকে হাতে করে খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রথম প্রথম ঠোকর দেওয়ার চেষ্টা করবে হয়তো। তাতে চেঁচামেচি করবেন না। ধৈর্য ধরতে হবে। দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার উপরেই বেশি ভরসা করছে।
No comments