Adsterra

ফেরেশতারা যাদের জন্য দোয়া করেন

ফেরেশতারা যাদের জন্য দোয়া করেন, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news,

মহান আল্লাহর অন্যতম বিস্ময়কর সৃষ্টি ফেরেশতা। মহান আল্লাহ তাদের নুর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তিনি ফেরেশতাদের মধ্যে গুনাহ করার কোনো উপকরণ দেননি। তাই তারা নিষ্পাপ ও পবিত্র। তারা সর্বদা মহান আল্লাহর তাসবিহ জপেন এবং তার ইবাদতে মগ্ন থাকে। ফেরেশতারা আল্লাহর খুব নিকবর্তী, সর্বদা তার ইবাদতে মগ্ন থাকেন এবং যে কোনো ধরনের গুনাহ থেকে নিষ্পাপ, তাই তারা কারও জন্য দোয়া করলে সে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ফেরেশতারা যাদের জন্য দোয়া করেন তারা সৌভাগ্যবান। বিশেষ শ্রেণির কতিপয় মুমিন বান্দা রয়েছেন যাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করে থাকেন। সবারই উচিত সেসব মুমিন বান্দাদের গুণাবলি অর্জন করা। যেসব আমলের দ্বারা সেসব গুণাবলি অর্জন করা যায়, তা তোলে ধরা হলো।


যারা হজরত রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়ে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ বিন আমের বিন রাবিয়া তার পিতা হজরত আমের (রা.) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুল (সা.)-কে মিম্বারে বক্তব্য দিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরুদ পেশ করবে ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করবে। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকবে, যতক্ষণ সে দরুদ পেশ করতে থাকবে। সুতরাং কম হোক বেশি হোক, যার ইচ্ছা সে দরুদ পড়তে পারে।’ (সহিহুল জামে ৫৭৪৪)


যারা অন্যের জন্য দোয়া করে ফেরেশতারাও তাদের জন্য দোয়া করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম তার অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে তা কবুল করা হয় এবং তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকে। যখন সে তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোয়া করে তখন নিযুক্ত ফেরেশতা বলে, আমিন। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! কবুল করুন এবং তোমার জন্য অনুরূপ (তোমার ভাইয়ের জন্য যা চাইলে আল্লাহ তোমাকেও তা দান করুন)।’ (সহিহ মুসলিম ৮৮)


যারা নামাজের কাতারের মাঝখানে খালি জায়গা পূরণ করে দাঁড়ায় তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করে। হজরত রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন, যারা কাতারের সঙ্গে মিলিত হয়ে নামাজ আদায় করে। আর যে ব্যক্তি কাতারের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে, আল্লাহ এর কারণে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।’ (ইবনে মাজাহ ৯৮৫)


নামাজ শেষে অজুসহ যেসব মুসল্লি স্বীয় স্থানে বসে থাকে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। হজরত রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা নামাজের পর নিজ স্থানে বসে থাকে, তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত তার অজু ভঙ্গ না হয়। (ফেরেশতারা দোয়া করেন) হে আল্লাহ! আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি তাদের ওপর দয়া করুন।’ (মুসনাদে আহমাদ ৬৭২৭)


যারা রোগী দেখতে যায় বা রোগীর সেবাযতœ করে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আলী (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি সকাল বেলা কোনো রোগীকে দেখতে যায় তার সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা যায় এবং তারা সবাই সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতে থাকে। আর তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্ধারণ করা হয়। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় কোনো রোগীকে দেখতে যায়, তার সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা যায় এবং তারা সবাই সকাল পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতে থাকে। আর তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্ধারণ করা হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ ৯২৮)


যারা মসজিদে প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করে। হজরত বারা বিন আজেব (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা প্রথম কাতারে নামাজ আদায়কারীর প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (ইবনে মাজাহ ৯৮৭)


যারা মানুষকে ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা দেয় ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন, যারা মানুষকে কল্যাণকর বিষয় (দীনি জ্ঞান) শিক্ষা দেয়। এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও সাগরের মাছ তাদের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া করে।’ (জামে তিরমিজি ২৬০৯)


যারা অজু করে রাতে ঘুমায় তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু করে রাতযাপন করে তার শিয়রে একজন ফেরেশতা রাতযাপন করে। সে যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হয় (কোনো কোনো বর্ণনা মতে, যতবার ঘুমের ভেতর নড়াচড়া করে) তখন ওই ফেরেশতা বলতে থাকে, হে আল্লাহ! অমুককে মাফ করে দিন। কেননা সে পবিত্র অবস্থায় রাতযাপন করছে।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান ১০৫১)


যারা প্রতিদিন কিছু না কিছু দান করে তারা ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি সকালে মানুষ যখন ঘুম থেকে ওঠে তখন দুজন ফেরেশতা আসেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ, দানকারীদের ধন আরও বাড়িয়ে দিন। আর দ্বিতীয়জন বলেন, হে আল্লাহ, কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।’ (সহিহ মুসলিম ২২২৬)


যারা নামাজের কাতারের ডানদিকে অবস্থান করে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা সেসব মানুষের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন, যারা কাতারের ডানপাশে নামাজ আদায় করে।’ (সুনানে আবু দাউদ ৫৭৮)

No comments

Powered by Blogger.