কর্মক্ষেত্রে সফলতার ১০ পরামর্শ
সবাই কর্মক্ষেত্রে সফল হতে চান। কারণ প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে কর্মক্ষেত্রে ভালো করা এবং ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাওয়া এখন আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার উপায় কী? এর সহজ উত্তর ভালো পারফর্ম করার দৃঢ় ইচ্ছা ও মানসিকতা থাকা। কর্মক্ষেত্রে কীভাবে সফল হওয়া যায় তা নিয়ে এখানে ১০টি পরামর্শ তুলে ধরা হলো।
উদ্যোগ নিন
বর্তমানে সফলতার অন্যতম ধাপ হলো উদ্যোগ নেওয়া। আজকের প্রতিযোগিতামূলক কর্মজীবনে নিয়োগকর্তারা এমন ব্যক্তিকে খোঁজেন যারা নতুন পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নিতে পারেন, নতুন প্রকল্প শুরু করতে পারেন এবং ব্যবসায়ের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারেন। একই সঙ্গে যে কোনো সমস্যার তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান করতে পারেন। তাই উদ্যোগ নিন, ঝুঁকি নিন।
নিজেকে মূল্যায়ন করুন
ক্যারিয়ারের সফলতা অর্জনের অন্যতম উপায় হলো নিজের কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করা। অফিসের বার্ষিক মূল্যায়নের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই নিজেকে মূল্যায়ন করুন। এটি করার আদর্শ উপায় হলো- পরিমাপযোগ্য লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলো অর্জনের একটি সময়রেখা নির্ধারণ। যদি চাকরিতে নতুন হন তাহলে স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এই লক্ষ্য অর্জনে বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করুন। কাজগুলো সাপ্তাহিক বা দৈনিক হিসেবে ভাগ করে নিন। তারপর সপ্তাহের শেষে একটি ছোট ফরম পূরণ করুন। তাহলে বুঝতে পারবেন আপনি লক্ষ্যের দিকে যাচ্ছেন কিনা বা আপনার কৌশল পরিবর্তন করতে হবে কিনা।
শেখার মানসিকতা
কর্মজীবনে সফল হতে গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে এবং নতুন কিছু শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেছেন বা আপনার কোন গ্রেড রয়েছে তা কোনো ব্যাপার না। পেশাগত জীবন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একদমই আলাদ। বরং এখানে আপনি যা করছেন তা নিয়ে প্রতিদিন নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। সেই সমালোচনার জন্য প্রস্তুত থাকুন। কিন্তু সেসবকে পাত্তা না দিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরুন এবং বুঝিয়ে দিন আপনি সবসময় নতুন জিনিস শিখতে ইচ্ছুক।
চাহিদা অনুমান করুন
চাকরিতে সফল হতে এবং ক্যারিয়ারের সাফল্য অর্জনে প্রখর অনুমান শক্তি থাকা ইতিবাচক দিক। তাহলে বস ও দলের কী প্রয়োজন তা আগেই ধারণা করতে পারবেন। তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন 'আমি যদি বস হতাম তাহলে, পরবর্তীতে কী করতে চাইতাম?' তারপর সেগুলো নিজে করার উদ্যোগ নিন ও সময়মতো দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করুন। এতে আপনি অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন।
যোগাযোগ দক্ষতা
যোগাযোগ দক্ষতা একজন কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে সেই দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যে কোনো প্রয়োজনে বসের সঙ্গে কথা বলুন, সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন, তাদের সহযোগিতা করুন, ভালো ব্যবহার করুন। আর কখন কোন কাজটি করতে হবে তা বসকে জানিয়ে রাখুন। যোগাযোগ দক্ষতা অর্জনে আপনাকে সক্রিয় হতে হবে।
লক্ষ্য নির্ধারণ
মনে রাখতে হবে 'কঠোর পরিশ্রম' বা 'ব্যস্ত থাকার' জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করা হচ্ছে না। দিনের শেষে নিয়োগকর্তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো- আপনি কীভাবে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য পূরণে অবদান রাখছেন। তা হতে পারে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী। তাই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে আপনার নিজেরও একটি লক্ষ্য থাকতে হবে। এই লক্ষ্যভিত্তিক মানসিকতা আপনাকে ক্যারিয়ারের সফলতা অর্জনে সহায়তা করবে। তা আপনি কর্পোরেট সিঁড়ির যেখানেই থাকুন না কেন।
কাজ দেখান, কথা নয়
কর্মের মূল্য শব্দের চেয়ে অনেক বেশি। অফিসের ক্ষেত্রেও এটি নীতি হিসেবে ব্যবহার করুন। আপনি যা পারেন তা নিয়ে গর্ব করার পরিবর্তে তা করে দেখান। এটাও কর্মক্ষেত্রে সফলতার অন্যতম একটি উপায়।
বিশ্বাস অর্জন করুন
কর্মক্ষেত্রে সফলতার আরেক উপায় হলো বিশ্বাস অর্জন করা। আপনি যত দ্রুত বিশ্বাস অর্জন করবেন তত আপনার জন্য ভালো হবে। যদি অফিস আপনাকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করেন তাহলে আপনার কাছে কাজ হস্তান্তর করবেন, আপনার ওপর আস্থা রাখবেন। বিশ্বাস অর্জনে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, সময়সীমার মধ্যে লক্ষ্য পূরণ করেছেন এবং আপনার প্রতিশ্রুতি পালন করছেন।
সমাধান তৈরি করুন
অনেকেই তাদের সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতনকে বলে সেটিকে ঊর্ধ্বতনের সমস্যায় পরিণত করেন। তাই সমাধান সরবরাহকারী হোন, সমস্যা সৃষ্টিকারী নয়। অফিসের দক্ষ কর্মীরা সমস্যার সমাধান করেন, সমস্যা তৈরি করেন না। যদি আপনার কাজ বা বিভাগের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো সমস্যার চূড়ান্ত সমাধানের কর্তৃত্ব আপনার না থাকে তাহলে কেবল ঊর্ধ্বতনকে সমাধানের প্রস্তাব দিন এবং যতটা সম্ভব আন্তরিকভাবে তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন।
সহানুভূতিশীল হোন
একজন ভাল কর্মচারী হওয়ার জন্য অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে বস এবং সহকর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তাই কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন বা আপনি কতটা কাজ করছেন তা বারবার বলবেন না। বরং অন্যের সমস্যা বোঝার চেষ্টার করুন, সবার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন।
এই বৈশিষ্ট্য এবং আচরণগুলো আপনার ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, asun sustho thaki,health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, mental health,
No comments