Adsterra

৪০০ কোটি টাকার পিয়ন

৪০০ কোটি টাকার পিয়ন, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news,

চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিজের বাসার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কে সেই পিয়ন, এ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা–কল্পনা। 


প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাঁর পরিচয় নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দেওয়া না হলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক সূত্র দাবি করছে, সেই পিয়নের নাম জাহাঙ্গীর আলম। তাঁকে নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। 


আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করে গেছে, পিয়ন, যে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। হ্যাঁ, এটা বাস্তব কথা। তো কী করে বানাল এই টাকা! যখনই আমি জেনেছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড–টার্ড সব সিজ করে ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা তো হয়। এটা করে। ধরা পড়লে তো এটা চোখে আসে। তা ছাড়া তো হয় না। যখন ধরা পড়ে তখন ব্যবস্থা নিই।’ 


সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে এক সময় কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের দুই মেয়াদের পুরোটা সময় এবং প্রধানমন্ত্রীর টানা তৃতীয় মেয়াদেরও কিছু সময় ছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলে থাকার সময়ও জাহাঙ্গীর আলম তাঁর বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন। 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীরের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে। সেই সময় তাঁর আমন্ত্রণে সরকারের অনেক প্রভাবশালী মন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে নোয়াখালীর চাটখিলে বিভিন্ন কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। যার কিছু ছিল জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত আয়োজনের অনুষ্ঠানে। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর আরেক পিয়ন আবদুল মান্নানকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। তবে তাঁর বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার ব্যবহারের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 


সূত্রের তথ্য, জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হলেও তিনি নিজের পরিচয় দিতেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী। এই পরিচয় ব্যবহার করে নিয়মিত সচিবালয়ে তদবির বাণিজ্য করতেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে নানা তদবির করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। একই পরিচয় ব্যবহার করে তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদও বাগিয়ে নিয়েছিলেন। নোয়াখালী–১ সংসদীয় আসনে নিজের একটি রাজনৈতিক ব্লকও তৈরি করেছেন। 


দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নোয়াখালী–১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। প্রার্থী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচয় ব্যবহার করে প্রশাসন দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহিমের অনুসারীদের ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছিল জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। পরে ইব্রাহীম প্রধানমন্ত্রীকে কাছে জানালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। 


সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিজেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে বেড়াচ্ছেন। তার সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে নিকটস্থ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিন।’


এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কি কারও নাম বলেছে? তিনি ড্রাইভারের (সৈয়দ আবেদ আলী) কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলেছেন। 


প্রধানমন্ত্রীতো পিয়ন বলেছেন। সে সময় দুজন পিয়ন চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। এর মধ্যে একজন আপনি, আরেকজন আবদুল মান্নান। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সেই পিয়ন আপনি। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি এটা জানি না। আমি কইতে পারব না।’ 


প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না না আমিতো শুনি নাই। এইমাত্র আপনার কাছে শুনলাম।’ 


সবাইতো আপনার নাম বলছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কেমনে কমু। এত কিছু জানি না। আপনের কাছে প্রথম জানলাম।’

No comments

Powered by Blogger.