Adsterra

পুষ্টির অভাবে ৭ ইঞ্চি পর্যন্ত উচ্চতা হারাচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা

পুষ্টির অভাবে ৭ ইঞ্চি পর্যন্ত উচ্চতা হারাচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news

প্রায়ই সময়ই মন খারাপ থাকে। দুই বোন এবং এক ভাইয়ের মধ্যে সে মেঝ। বাবা-মা দু’জনেরই শারীরিক গঠন এবং উচ্চতা ভালো। অন্য এক বোন আর ভাইয়েরও শারীরিক গঠন ভালো। কিন্তু রাইমার বয়স অনুযায়ী উচ্চতা কম। খাটোই বলা যায়। আর তাই স্কুলের অনেকেই তাকে উপহাস করে। আবার পাড়ায়ও তার তেমন কোন বন্ধু নেই। খেলতে গেলেই বন্ধুরা বলে তুমি তো ছোট। পারবে না। এখন আর সে তেমন বাইরেও যায় না। স্কুল শেষে প্রায় সময় ঘরেই বসে থাকে। আর জানালা দিয়ে অন্য বাচ্চাদের খেলা দেখে।


রাইমার মতো ১৭ বছর বয়সী শাহীনের শারীরিক গঠনও একই। সেও তার বয়সের তুলনায় যথেষ্ট খাঁটো। এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র হলেও তাকে দেখে মনে হয় এখনো সে ক্লাস সিক্সের ছাত্র। স্কুল-কলেজের বন্ধুরাও তাকে নিয়ে অনেক ঠাট্টা-তামাশা করে। শুরুর দিকে মন খারাপ হলেও এখন অনেকটা মেনে নিয়েছে সে। উল্টো মাঝে মধ্যে শাহীনই এখন সবার সাথে ভাব করে চলে। এ কারণে কলেজে তার অনেক বন্ধু।


আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট এর মতে, উচ্চতায় এগিয়ে থাকা দেশগুলোর মানুষের তুলনায় বাংলাদেশসহ মোট চারটি দেশের ছেলে-মেয়েরা নিম্নমানের পুষ্টির কারণে সাত ইঞ্চিরও বেশি উচ্চতা হারাচ্ছে।


আরও পড়ুন - বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা : করনীয়


প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চতায় সবচেয়ে ছোট মেয়েদের (১৯ বছর বয়সী) দেশের তালিকায় আছে বাংলাদেশের নাম। বাকি তিনটি দেশ নেপাল, গুয়াতেমালা এবং তিমুর।


অ্যাস্ট্রাজেনেকার সহযোগিতায় দ্য ইমপিরিয়াল কলেজ লন্ডনসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ২০০ দেশের ৬৫ মিলিয়ন (৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী) অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে গবেষণাটি করেছেন। ২০১৯ সালে সংগ্রহ করা এই তথ্যে সবচেয়ে বেশি লম্বা দেখা গেছে, নেদারল্যান্ডস, মন্টেনেগ্রো, ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ডের ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের। বিভিন্ন দেশের তুলনামূলক এই পর্যবেক্ষণে লম্বা কিশোর-কিশোরীদের তুলনায় খাটো দেশের কিশোর-কিশোরীদের ওজনও কম দেখা গেছে।


ফলাফলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের গড় উচ্চতা যতটুকু নেদারল্যান্ডসের ১১ বছর বয়সীদের উচ্চতা ততটুকু!


গবেষণা প্রতিবেদনের সিনিয়র লেখক মজিদ এজাতি বলেন, ‘এতে বোঝা যাচ্ছে স্কুলে যাওয়ার আগে এবং স্কুলে যাওয়ার দিনগুলোতে বাচ্চাদের ওপর বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগে বড় পার্থক্য আছে। করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময়ে অনেক দরিদ্র পরিবার পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না।


সবচেয়ে খাটো দেশের তালিকায় বাংলাদেশের কিশোররা না থাকলেও উচ্চতা অনুযায়ী ওজনের সবচেয়ে নিম্নমানের তালিকায় তাদের দেখা গেছে। কার ওজন কত হওয়া উচিত, তার সূচককে বিএমআই বা বডি ম্যাস ইনডেক্স বলে। ভারত, বাংলাদেশ, তিমুর, ইথিওপিয়ার ছেলে-মেয়েদের বিএমআই সবচেয়ে কম। শুধু মেয়েদের মধ্যে জাপান এবং রোমানিয়ার কিশোরীদের সবচেয়ে কম।

No comments

Powered by Blogger.