Adsterra

ভোরের আলো দেখেন না যারা

ভোরের আলো দেখেন না যারা, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে হয়তো পড়েছেন ‘আমি হব সকাল বেলার পাখি, সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি’। তাড়াতাড়ি ঘুমানো ও ঘুম থেকে ওঠা মানুষকে স্বাস্থ্যবান, সম্পদশালী ও জ্ঞানী করে তোলে। এছাড়াও ভোরের ঠাণ্ডা হাওয়া, নরম রোদ্দুর, শিশির ভেজা ঘাসে হাঁটলে শুধু শরীর নয়, মনও ভালো থাকে। তাই ভোরে উঠে শরীরচর্চা করা, সকালে সময় ধরে পড়া সুঅভ্যাস। ঘুমের পর শরীর-মন তরতাজা থাকায় পড়াশোনা ভালো হয়।


কিন্তু ছড়ার কথা কে মনে রাখে? সময়ের সঙ্গে বাড়ছে কর্মব্যস্ততা। পেশাগত জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে জটিল হচ্ছে ব্যক্তিগত জীবনের সমীকরণ। ফলে জীবনের দড়ি টানতে টানতে গ্রাস করছে হতাশা। অল্প বয়স থেকেই শারীরিক অসুখের সঙ্গে থাবা বসাচ্ছে মানসিক রোগও। যা থেকেই জন্ম নিচ্ছে এক রাশ মন খারাপ। আপনিও কি এই সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে সকালের কয়েকটি মাত্র অভ্যাসই কিন্তু বদলে দিতে পারে আপনার জীবন।


ঘড়ি ধরে ওঠা

ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠার চেষ্টা করুন। কারণ দ্রুত সকাল শুরু হলে কাজের ব্যস্তার জন্য তাড়াহুড়ো হবে না। ফলে নিজের জন্য সকালে খানিকটা সময় পাবেন। খুব দেরি করে ওঠা মানেই ঘুম ভাঙার পরই শুরু হয়ে যায় ব্যস্ততা। সকাল ৯টায় ওঠার অভ্যাস থাকলে প্রথম দিনেই ভোর ৫টায় উঠতে গেলে কিছুতেই কাজ হবে না। ৯টার বদলে সাড়ে ৮টায় অ্যালার্ম দিন। মনকে বোঝাতে হবে, কিছুতেই অ্যালার্ম বন্ধ করে ঘুমোনো যাবে না। এভাবে ধীরে রাতে ঘুমানোর সময় ও সকালে ওঠার সময় আধ ঘণ্টা করে এগিয়ে আনতে হবে। এক সপ্তাহ সাড়ে ৮টায় ওঠার অভ্যাস করার পরের সপ্তাহে ৮টায় উঠতে হবে। এ ভাবে ১৫ দিন কাটলে, সময় আরও একটু এগোতে হবে।


সময়ে ঘুম

ভোরে বা সকালে উঠতে না পারার অন্যতম কারণ রাতে দেরিতে ঘুমোনো। সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হলে রাতে ঘুমাতেও হবে তাড়াতাড়ি। ঘুম যদি রাতে ঠিকমতো না হয়, তাহলে কিছুতেই সকালে মেজাজ ঠিক থাকে না। সারাদিন মন বসে না কোনো কাজেই। সুস্থ শরীর ও মনের জন্য ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম খুব জরুরি। যদি প্রতি রাতে ১টায় ঘুমোতে যান, তা হলে সময় একটু একটু করে এগোতে হবে। প্রথম ধাপে ১২টার মধ্যে ঘুমোনোর চেষ্টা করতে হবে। ঘুম না এলেও ১২টার আগেই ঘরে মৃদু  আলো জ্বালিয়ে বা অন্ধকার করে ঘুমোনোর চেষ্টা করতে হবে। স্নায়ুতন্ত্রকে শিথিল করতে সাহায্য করে এমন কোনো সুর চালিয়ে দিতে পারেন।


হাঁটতে বের হওয়া

সাড়ে ৮টা মোটেই হাঁটতে যাওয়ার সময় নয়। তবু যদি সেই সময় উঠে ছাদে যেতে পারেন বা বাজারে চলে যেতে পারেন, তা হলে ধীরে ধীরে ভালো লাগা তৈরি হবে। ছাদে গিয়ে হালকা ব্যায়ামও করে নিতে পারেন। বাগান থাকলে গাছে জল দিতে পারেন।


এছাড়া একঘেয়ে জীবনে মনোযোগ আনতে সাহায্য করে ধ্যান। যদিও প্রথম দিকে হয়েতো ধ্যানে মন নাও বসতে পারে। তবে হাল ছাড়বেন না। বেশ কয়েকটি যোগ ব্যয়াম করলেও সারাদিন উপকার পাবেন। শারীরিক থেকে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে যোগ ব্যায়ামের কোনো তুলনা নেই। যোগব্যয়াম ছাড়াও ৩০ মিনিট যেকোনো ধরনের শরীরচর্চা করতে পারেন।


স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট

স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট দিয়ে দিন শুরু করুন। ব্রেকফাস্ট আমাদের সকালের প্রথম খাবার। তাই যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন ব্রেকফাস্ট না খেয়ে অফিস-কাছারিতে বেরোলে চলবে না। ওজন কমাতে গেলে প্রোটিন জাতীয় খাবারে জোর দিন।


মোবাইল কিছুক্ষণ বাদ দিন

রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মোবাইল নিয়ে বসে গেলে কিছুতেই ঘুম আসবে না। বরং ঘুমানোর আগে বই পড়তে পারেন। আরামদায়ক পোশাক পরে ঘুমোতে যান। এই বিষয়গুলিও ঘুম আনতে সাহায্য করে।


বন্ধুবান্ধব

বন্ধুবান্ধব একসঙ্গে যদি সকালে কয়েক দিন সাইকেল নিয়ে ঘোরার পরিকল্পনা করেন, তা হলে দেখবেন, উঠতে এত কষ্ট হচ্ছে না। যে কাজে আনন্দ থাকে, সেই কাজের জন্য সহজেই অভ্যাস বদলে যায়। অভ্যাস বদলে প্রাপ্তি কী হচ্ছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। না হলে কাজ হবে না।

No comments

Powered by Blogger.