সোশ্যাল মিডিয়ায় মানসিক চাপে জেন জি
বিশ্বব্যাপী নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে। এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের উন্মাদনায় মেতে উঠেছে সবাই। বর্তমানে স্মার্টফোন বা ডিজিটাল আসক্তি সবার মধ্যেই কমবেশি দেখা যায়। হাতের মুঠোফোনটি ছাড়া জীবন একেবারে অসম্ভব। ফোনে চার্জ না থাকলে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়া, সময়ে সময়ে কোনো প্রয়োজন ছাড়াই কোনো নোটিফিকেশন এসেছে কি না দেখা এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিউজফিড স্ক্রল কিংবা রিলের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া। এ এক অদ্ভুত জগৎ!
নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যারা জেনজি হিসেবেই পরিচিত, তাদের কাছে এ এক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আর বিনোদন নেওয়ার অভ্যাস অনেক বড় ক্ষতি করছে এই জেনজিদের। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সোশ্যাল মিডিয়া বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে টকার রিসার্চের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সমীক্ষায় প্রতি ৪ জনের মধ্যে ৩ জন জেনজি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে দোষারোপ করেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬২ শতাংশ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ফিড ‘রিসেট’ করতে আগ্রহী। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের দৌলতে কোনও ব্যক্তি যদি লাগাতার একই ধরনের ফিড অনলাইনে দেখে, তা হলে সেই একই ধরনের নানা ফিড তার স্ক্রিনে আসবে। এ থেকে বের হতে চায় জেনজি়দের একটা বড় অংশ।
আরও পড়ুন - বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা : করনীয়
জুনের ২০ তারিখ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন এমন ২ হাজার ব্যক্তির মধ্যে অনলাইনে এই সমীক্ষা চালায় টকার রিসার্চ। এর মধ্যে টিকটক এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন এমন ২০ শতাংশ করে এবং ফেসবুক ব্যবহার করেন এমন ১৩ শতাংশ উত্তরদাতা এই প্ল্যাটফর্মগুলির ব্যবহার তাদের মনে খারাপ প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া অর্ধেকেরও বেশি অর্থাৎ ৫৩% হতাশ বোধ করেছেন যে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ফিডে তারা যা দেখতে চায় তার সঙ্গে মেলে না। ৫৪ শতাংশ আবার নিজেদের ফিডের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার কথা জানিয়েছেন। অর্থাৎ, চাইলেও তারা নিজেদের রুচি বা পছন্দের সঙ্গে যায় এমন কনটেন্ট দেখতে পাচ্ছেন না। শারীরিক নিগ্রহ, রাজনীতি এবং যৌন আবেদনপূর্ণ কনটেন্ট এ ধরনের মানসিক অশান্তির প্রধান কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।
সমীক্ষায় ৬৬ শতাংশ উত্তরদাতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেরত আসার কারণ বলে এই একঘেয়েমির কথাই জানিয়েছেন। অন্য কারণগুলির মধ্যে হাসিখুশি জীবন কাটানো (৫৯ শতাংশ), গতানুগতিকতার বাইরে কিছুটা অন্য ধরনের সময় কাটানো (৫৫ শতাংশ), সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা (৪৯ শতাংশ) এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা (৪৪ শতাংশ) রয়েছে।
এলজি ইলেক্ট্রনিক্সের মার্কিন বিপণন প্রধান লুইস গিয়াগ্রান্দে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা যে কনটেন্টগুলো দেখি তাতে অ্যালগরিদম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কিছু সহজ পদক্ষেপ রয়েছে যা মানুষ তাদের ফিড ‘রিসেট’ করতে পারে, যাতে তারা তাদের পছন্দের ইতিবাচক কনটেন্ট আরও বেশি উপভোগ করতে পারে। যা আপনাকে হাসায়, তখন সেটাতে কিছুটা অতিরিক্ত মনোযোগ দিন।
No comments