Adsterra

নতুন সংসারে নিজেকে মানিয়ে নেবেন যে ১০ উপায়ে

নতুন সংসারে নিজেকে মানিয়ে নেবেন যে ১০ উপায়ে, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের নিয়মেই মানুষকে আবদ্ধ হতে হয় বৈবাহিক সম্পর্কে। কিন্তু অনেকেই ভয়ে থাকেন শ্বশুরবাড়ি নিয়ে। কেমন হবে শ্বশুরবাড়ি, কিভাবে মানিয়ে নেবেন।


অনেকে এই ভয়ে বিয়ের পরে শ্বশুর-শাশুড়ি ছেড়ে স্বামী নিয়ে আলাদা হয়ে যেতে চান। কিন্তু এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সুন্দর ও মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। 

নতুন সংসার ও পরিবারে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আপনাকে খুব বেশি কিছু করতে হবে না।


আরও পড়ুন - বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা : করনীয়


ছোটখাটো কিছু জিনিস লক্ষ করলেই খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারবেন নতুন সংসারে। তাই আজকে জানাব নতুন সংসার ও নতুন পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কিছু কার্যকর পদ্ধতি।

নতুন সংসার ও পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি 


নতুন সংসার ও পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হলে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। সেগুলোই তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে।



নতুন পরিবারকে নিজের করে নিন

আপনাকে আগে বুঝতে হবে যে এটা আপনার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, আপনার জীবনসঙ্গীর পরিবার। আর তার পরিবার মানেই সেটি আপনারও পরিবার। তাই আপনার পরিবারকে সাজিয়ে নিন আপনার মতো করে।

যখন এই ধারণাটি কারো মাথায় ঢুকে যায় যে এটি আমার পরিবার নয়, এখানে আমি হুট করেই এসেছি, আমার পরিবার তো আমি ফেলে এসেছি। তখনি শ্বশুরবাড়ির সবাই প্রতিপক্ষ মনে হতে থাকে।


তাই নতুন সংসার ও পরিবারকে নিজের মনে করে নিতে হবে

শ্বশুরবাড়ি কখনোই আপনার প্রতিপক্ষ নয়। তাদের নিজের পরিবারের একটা নতুন সংযোজন বলে ভাবুন। দেখবেন, পরিবারটিকে আর অপরিচিত মনে হবে না। আপনার স্বামী এই পরিবারেই বড় হয়েছেন এবং পৃথিবীর সব কিছুর চেয়ে এই পরিবারকে তিনি বেশি ভালোবাসেন। আর তার ভালোবাসার মানুষরা তো আপনারও ভালোবাসার মানুষ।


আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বন্যার্তদের অনুদান দিতে ক্লিক করুন


ইগো পরিহার করুন

সম্পর্কে তিক্ততা আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে আমাদের ইগো। সব সময় বিনীত থাকুন, ইগোকে দূরে সরিয়ে রাখুন। যেকোনো খালি জায়গা ভালোবাসা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব। সময় লাগতে পারে, কিন্তু অসম্ভব কিছু নয়। নতুন সংসার সুন্দর করে গড়ে তুলতে আপনার ইগোকে অবশ্যই পরিহার করতে হবে।


তুলনা করবেন না

ভুলেও কখনো শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ির তুলনা করতে যাবেন না। দুটো পরিবার দুটো ভিন্ন পরিবেশ, এর মধ্যে কখনো তুলনা হয় না। তুলনা করতে গেলে হয়তো এমনও হতে পারে, যে জিনিস আপনি বাবার বাড়িতে পাননি সেটা হয়তো শ্বশুরবাড়িতে এসে পাচ্ছেন। তখন কী বলবেন, যে আগে বাবার বাড়ি ভালো ছিল না? নিশ্চয়ই না। প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন আছে, ধারা আছে। এগুলোকে সম্মান করুন। এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়তো একটু সময় লাগবে, কিন্তু ‘পারবেন না’ বা ‘করব না’ এমন মনোভাব থাকলে কিন্তু অশান্তি বাড়বে।


পরিবারটিকে জানার চেষ্টা করুন 

নতুন পরিবারকে ভালোভাবে জানার জন্য স্বামী হতে পারে আপনার সবচেয়ে বড় সহযোগী। তার কাছ থেকে পরিবারের সবার সম্পর্কে জানুন। আত্মীয়-স্বজনদের চিনুন। তাদের সঙ্গে নিজে থেকে গিয়ে আলাপ করুন। অনেক সময় বাড়ির নতুন বউকে নিয়ে একটু-আধটু মজা করা হয়, সেটাকে প্রথমেই নেগেটিভভাবে নেবেন না। একটা বিয়ের পরে বাড়িতে একটা উৎসবের পরিবেশ থাকে, তখন এ ধরনের হাসি-ঠাট্টা চলতেই থাকে। কোনো বিষয়ে অস্বস্তি বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।


বাচ্চাদের প্রাধান্য দিন 

বাড়ির বাচ্চাদের সঙ্গে মিশুন সবার আগে। বড়দের চেয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা অনেক বেশি সহজ। বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তাদের গল্প বলুন, তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করে দিন বা ছবি আঁকায় সাহায্য করুন। অথবা তাদের পড়াশোনার ব্যাপারে সাহায্য করুন। এতে করে বাচ্চাদের সঙ্গে আপনার একটা সহজ সম্পর্ক তৈরি হবে। পাশাপাশি বাড়ির বড়রাও আপনার ব্যাপারে ভালো একটা মনোভাব পোষণ করবেন।


বড়দের সম্মান করুন

কথা বলার সময়, খাওয়ার সময় বা যদি আপনি চুপচাপ বসে থাকেন তখনো বড়দের সম্মান করবেন। বাড়ির বড়দের সামনে মোবাইল ফোন চাপাচাপি না করার চেষ্টা করবেন। এটা খুবই বেয়াদবি। খাবার টেবিলে বসলে অন্যদের সঙ্গে পারিবারিক আলোচনা শুনুন, তবে শুরুতেই নিজের মতামত দিতে যাবেন না। পুরো বিষয়টা আগে বুঝুন, তার পরেই মতামত দেবেন। অবসরে শাশুড়ি বা শ্বশুরের সঙ্গে তাদের পুরনো দিনের গল্প শুনুন। যদি মনে করেন সেটাতে তারা আনন্দ পাচ্ছেন, তাহলে সে ব্যাপারে আপনিও উৎসাহ দেখান। শ্বাশুড়িকে মায়ের স্থানে বসান। বউ-শ্বাশুড়ি সম্পর্ক করে তুলুন মধুর।


পরিবারের কাজে সাহায্য করা 

নতুন বাড়িতে এসেই কেউ আপনাকে পুরো বাড়ির রান্নার দায়িত্ব দেবে না। তাই আপনারই উচিত হবে ছোট ছোট বিষয়ে তাদের সাহায্য করা। রান্নার ব্যাপারেই হোক বা ঘর গোছানোর ক্ষেত্রেই হোক। নিজে থেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। তবে একটু সতর্কতা হিসেবে যেকোনো কাজের আগে সেটা শাশুড়ি বা ননদকে জিজ্ঞেস করে নিন। যে কাজটা তারা কিভাবে করেন। এটাতে ছোট হওয়ার কিছু নেই। প্রতিটি বাড়িতেই সব কাজের কিছু আলাদা নিয়মকানুন থাকে। সেগুলো জেনে নিন, দেখবেন আর কোনো সমস্যাই হচ্ছে না। নিজের লাইফপার্টনারের সঙ্গে ছোটখাটো কাজগুলো শেয়ার করলেও বন্ডিং ভালো হয়। এই বিষয়টাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।


নিয়মিত যোগাযোগ রাখা 

যদি আপনার শ্বশুর-শাশুড়ি বা দেবর-ননদ আপনাদের সঙ্গে না থাকেন, তাহলে প্রতিদিন একবার আপনার শ্বশুর-শাশুড়িকে ফোন করুন। তাদের দিন কেমন কেটেছে জিজ্ঞেস করুন। আপনি সারা দিন কী কী করলেন, সেগুলোও তাদের বলুন। এতে করে সম্পর্ক অল্প দিনেই সহজ হয়ে যাবে। এ ছাড়া অন্য সদস্য, যেমন দেবর-ননদ, তাদের সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত দুই-তিনবার যোগাযোগ করুন। এতে সম্পর্ক ভালো থাকবে, মজবুত হবে। ননদ-ভাবি সম্পর্ক যেন হয় বোনদের মতো।


সঙ্গীর প্রশংসা 

আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করুন। ভালো-খারাপ সব দিক মিলিয়েই মানুষ। এখন আপনার সঙ্গীর পরিবারের সদস্যরা কিন্তু আগে থেকেই এসব জানেন। তাদের কাছে নতুন করে এগুলো নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করা বা কমপ্লেইন করা ঠিক হবে না। তাদের সামনে বরং আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করুন। এতে তারাও খুশি হবেন। আপনার দাম্পত্য সম্পর্ক হোক মধুর চেয়েও মিষ্টি।


সরাসরি কথা বলা

কোনো সদস্যের সঙ্গে কোনো কিছু নিয়ে সমস্যা হলে সেটা আগে ভালোভাবে বুঝুন। আদৌ সেটা সিরিয়াস কি না, যদি মনে করেন সিরিয়াস তাহলে সরাসরি কথা বলুন। তবে সেটি যেন হয় বিনয়ের সঙ্গে। শাশুড়ির সঙ্গে সমস্যা হলে মাকে ফোন করে ডেকে এনে তাকে দিয়ে বলানোর চেয়ে আগে নিজে চেষ্টা করুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজের চেষ্টাতেই সবচেয়ে ভালো সমাধান আসে। এগুলোই সুখী দাম্পত্য জীবনের সহজ রহস্য।


বিয়ের পরে নতুন মানুষ, নতুন সংসার একটু-আধটু অসামঞ্জস্য থাকবেই। সেগুলো খারাপভাবে না নিয়ে তাদের বোঝার চেষ্টা করুন। এই সময়টা আনন্দের, একে অপরকে ভালোবাসার। এই সময় আর কখনো ফিরে আসবে না। তাই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নিজের মানসিক শান্তি নষ্ট না করে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এগুলো পরিচালনা করুন। দেখবেন, বছর ঘুরে আসার আগেই এই নতুন পরিবারও আপনার আপন হয়ে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.