শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা মোহাম্মদপুর থানায়
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক দুই মন্ত্রীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে করা মামলা এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে মোহাম্মদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী এই নির্দেশ দেন।
মামলার বাদীর আইনজীবী মো. মামুন মিয়া এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুপুর ১২টার দিকে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং পরে আদেশ দেবেন বলে জানান। আদালত বেলা সোয়া ২টার দিকে এ আদেশ দেন। আজ মঙ্গলবার সকালে আদালতে রাজধানীর একজন ব্যবসায়ী এস এম আমীর হামজা শিতল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সাবেক সেতু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তা বা পুলিশের সদস্য ও তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পর তাঁর বিরুদ্ধে এই প্রথম মামলা করা হলো। মামলার বাদী সচেতন নাগরিক হিসেবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এই মামলা করেছেন বলে আরজিতে উল্লেখ করেন।
বাদী আমীর হামজা বলেন, ‘বিবেকের তাড়নায় এই মামলা করেছি। নির্বিচারে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে। আমরা বসে থাকতে পারি না। এই নারকীয় ঘটনার বিচার চাই।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওইসব শান্তপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালায়। বহু ছাত্র জনতা নিহত ও আহত হয়। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলায় ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, নিহত সায়েমকে তার গ্রামের বাড়িতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার/বোদা থানার নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এ জন্য বিবেকের তাড়নায় বাদী আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই মামলা করলেন।
বাদী মামলার অভিযোগে আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজেই বিচার হওয়া প্রয়োজন।
No comments