Adsterra

ক্ষমতায় অন্ধ এক স্বৈরশাসক, আর বুলেটে অন্ধ জনগণ

ক্ষমতায় অন্ধ এক স্বৈরশাসক, আর বুলেটে অন্ধ জনগণ, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস) গত ১৪ আগস্ট বুধবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং সেখানে চোখে গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে। ভুক্তভোগীরা ৪-৫ আগস্টের মধ্যে পুলিশ হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের বয়ানেই উঠে এসেছে সেদিনকার ভয়াবহ চিত্র এবং তাদের দুর্বিষহ যন্ত্রণা।


গত ৫ আগস্ট অফিসে তিনদিনের ছুটি থাকায় বাসায়ই ছিলেন মো. ফারুক। রুমমেটদের আহ্বানের বাইরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করার জন্য বের হয়েছিলেন সেদিন। 


ঢাকা ভয়েজ গত ১৪ আগস্ট বুধবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং সেখানে চোখে গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে। ভুক্তভোগীরা ৪-৫ আগস্টের মধ্যে পুলিশ হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের বয়ানেই উঠে এসেছে সেদিনকার ভয়াবহ চিত্র এবং তাদের দুর্বিষহ যন্ত্রণা।


হাসাপাতালের প্রথম তলাতে হুইলচেয়ারে বসে সেদিনের ঘটনা স্মৃতিচারণ করছিলেন ৩৩ বছর বয়সী ওই ফারুক। এসময় তিনি চোখে সানগ্লাস পরে ছিলেন। তার ভাই শাহাদাত দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রতিবেদকের দিকে নির্দেশ করলে তার অঙ্গপ্রতঙ্গগুলো যেন জীবিত হয়ে ওঠে। 

ক্ষমতায় অন্ধ এক স্বৈরশাসক, আর বুলেটে অন্ধ জনগণ, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news

রাজধানীর এক সামাজিক ক্লাবে কাজ করতেন ফারুক। সেদিন শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করতে গিয়ে আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি। তার চোখে-মুখে, মাথায় অসংখ্য স্প্লিন্টারের দাগ। ফারুকের ভাই শাহাদাত বলেন, তার ভাই তিনজনকে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। আহতদের সাহায্য করতেই গিয়েই গুলিবিদ্ধ হন ফারুক। ফারুক বলেন, "গুলিবিদ্ধ হয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যাই। এরপর কী ঘটেছিল তা আমি মনে করতে পারছি না।" 


আঘাতের কারণে তার কণ্ঠস্বর দুর্বল হলেও তার মধ্যে এক অদ্ভুত দৃঢ়তা ছিল। ফারুক জানান, গুলিবিদ্ধ হয়ে যখন তিনি পড়ে যান, তাকে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অপথালমোলজি অ্যান্ড হসপিটালে দিয়ে যান হাজার হাজার মানুষ। তখন তিনি আন্দোলনকারীদের থানায় যেতে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, "আমাদের ওপর বাড্ডা থানা পুলিশ গুলি চালায়।"


আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর কারণে ৫ আগস্ট একাধিক থানায় আক্রমণ ও আগুন দেয় সাধারণ মানুষ। 


গত ১৬ জুলাই শুরু হওয়া কোটা আন্দোলনের শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ওই আন্দোলন ধীরে ধীরে ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নেয়। 


সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে শাহাদাত বলে, "৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে আমি মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে যাই।" তিনি জানান, ফারুকের স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। 

ক্ষমতায় অন্ধ এক স্বৈরশাসক, আর বুলেটে অন্ধ জনগণ, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news

গত ৬ ও ৭ আগস্ট ফারুকের চোখে দুটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। কিন্তু ১৪ আগস্ট আবার হাসপাতালে যেতে হয় ফারুককে। শাহাদাত বলেন, তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করতে বলা হয়। হাসপাতালের ডাক্তাররা বলেন, বিদেশে চিকিৎসা করানো গেলে খুব ভালো হতো। তারা জানান, ফারুকের ডান চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বাম চোখটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাম চোখটি রক্ষা করা সম্ভব হবে কিনা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর তার মাথার ভিতরের স্প্লিন্টারগুলো এখনো রয়ে গেছে। প্রতিদিনই তাকে অসহ্য মাথাব্যথা নিয়ে থাকতে হচ্ছে। 


মায়ের সঙ্গে স্বাভাবিক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন দেলওয়ার (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন,"বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যা করেছিল তার থেকেও খারাপ।" তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, কীভাবে একজন মানুষ তার দেশের মানুষের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন! তাদের কোনো হৃদয় নেই!"


১৭ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত, প্রায় ৭০৬ জন রোগীকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজি অ্যান্ড হসপিটালে আনা হয়। এর মধ্যে ৫৫১ জন রোগী ভর্তি হন এবং ৪৯২ জনের অস্ত্রোপচার করা হয়, জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা।


গত ৪ আগস্ট বরিশালে ২০ বছর বয়সী মো. তারিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাইরে ছিলেন। তিনিও গুলিবিদ্ধ হন। তিনি প্রায় ১০-১২ জন বন্ধুর সঙ্গে মিছিলে ছিলেন। তিনি বলেন, "তাদের কেউ গুরুত্বরভাবে আহত হননি। তাদের কাউকে হাসপাতালে যেতে হয়নি।"


৫ আগস্ট 'বিজয়' লং মার্চে তার বন্ধুরা যোগ দিয়েছিল কি না জানতে চাইলে, তারিকুল মুচকি হেসে বলেন, "এটি বলতে পারছি না, আমি তখন এখানে [আগারগাঁওয়ের চক্ষু হাসপাতালে] ছিলাম।"


শেখ হাসিনার পদত্যাগে দেশ যখন উল্লাসে ফেটে পড়ছিল, সেসময় হাসপাতালে তারিকুলের চোখে অস্ত্রোপচার চলছিল। 

ক্ষমতায় অন্ধ এক স্বৈরশাসক, আর বুলেটে অন্ধ জনগণ, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news

আরেক গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী গত ৪ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি জুলাইয়ের শেষের দিকে কারফিউর সময় প্রথম আন্দোলনে যান। এ এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, "৪ আগস্ট আমরা সকাল ১১টার দিকে বরিশালের নাথুল্লাবাদ থেকে শুরু করেছিলাম এবং সেখান থেকে হাতেম আলী, চৌমাথায় গিয়েছিলাম। সেখানেই আমি গুলিবিদ্ধ হই। 


তিনি আরো বলেন, "পুলিশ প্রথম থেকেই গুলি চালাচ্ছিল। তারা অবিরত কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে যাচ্ছিল।"


তরিকুল বলেন, তিনি আহতদের সাহায্য করতে এবং তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তখনই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার বুক, মাথায়সহ চোখেও দুটি গুলি লাগে। 


যখন তারিকুল পড়ে যান, অন্যরা তাকে তুলে নিরাপদে নিয়ে যান। এ বিষয়ে তরিকুল বলেন, "প্রথমে হাতেম আলীতে, দুইটি মেডিকেল টিম যতটা সম্ভব ড্রেসিং করে দিয়েছিল। এরপর আমাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়। তবে সেসময় ডাক্তাররা তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে কারণ বরিশালে তখন সব কিছু বন্ধ ছিল।"


ওইদিন রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজি অ্যান্ড হসপিটালে পৌঁছান তরিকুল। তরিকুল এখন আর ডান চোখে দেখতে পান না। তিনি বলেন, "আমি বেশি কিছু দেখতে পারি না। ঝাপসা দেখি। আমি শুধু আলোর ছাপ দেখতে পাচ্ছি, হাতের ইশারা কিছুই দেখতে পাই না।" জানা গেছে তার চোখের লেন্স ও কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 


হাসপাতালে বারান্দায়ই তারেকের মায়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি তার ছেলেকে দেখার অভিজ্ঞতা প্রতিবেদকদের বলেছিলেন। ওই মা বলেন, "আমি না কাঁদতে পারছিলাম, না চিৎকার করতে পারছিলাম, না তাকে মারতে পারছিলাম। আমি কিছুই করতে পারিনি। কারণ আমি আমার ছেলেকে বাসায় আটকে রাখতে পারিনি।"


তিনি বলেন, "যা ঘটেছে তা আমি মেনে নিয়েছিল। যখন বিজয় দেখলাম, তখন একই সঙ্গে আমি দুঃখিত এবং একইসঙ্গে আমি খুশি ছিলাম। কারণ শিক্ষার্থীরা যদি না থাকতো দেশ এ স্বাধীনতা পেত না।"


ওই মা জানান, ১৪ আগস্ট তাদের দু সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে থাকতে বলা হয়েছিল। তার চোখের কর্নিয়া সেরে উঠলে ডাক্তাররা জানাবেন কখন তার অস্ত্রোপচার করা যাবে। তবে তিনি চোখে আবার দেখতি পাবেন কিনা তা তিনি জানেন না।


এটি একটি অপেক্ষার খেলা।

৫ আগস্ট কুষ্টিয়ার মো. আলাউদ্দিনও পুলিশের গুলিতে আহত হন। তার স্ত্রী জ্যোতি বলেন, "আমি অপেক্ষা করছিলাম তার ফিরে আসার যাতে আমি লং মার্চে যেতে পারি। ৩৮ বছর বয়সী আলিউদ্দিন জানান, মানুষের উত্তেজনা দেখতে সেদিন তিনি বাইরে যান। তিনি দেখেন কুষ্টিয়ার খোকসা থানা জনাকীর্ণ হয়ে আছে এবং তাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব দাঁড়িয়ে দেখার সময়ই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। 


তার স্ত্রী জানান, আলাউদ্দিনের এক্স-রে করানো হয়েছে। তার মাথায় চারটি গুলি, চোখের ভ্রুয়ের নিচে দুটি, মুখে ও চোখে একটি করে দুটি স্প্লিন্টার লাগে। 


চোখের হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ডিএমসিএইচ) ডাক্তাররা আলাউদ্দিনকে জানান এ স্প্লিন্টার গুলো তার কোনো ক্ষতি করবে না। তিনি ভাগ্যবানদের একজন। তিনি খুব দ্রুতই কুষ্টিয়ায় ফিরে যাবেন এবং তার ব্যবসায় যোগ দিবেন। 


ভিশন আই হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, স্প্লিন্টার অপসারণের জন্য এর আকার, কোথায় অবস্থান করছে এবং কোনো অঙ্গের ক্ষতি করছে কিনা তা দেখা হয়। প্রত্যেকটি বিষয়ই বিশেষ যত্নের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। তিনি আরো বলেন, "মানুষ একটি বুলেটের সাথে বেঁচে থাকতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক যুদ্ধজয়ী এখনও তাদের শরীরে বুলেট নিয়ে বেঁচে আছেন।"


যদিও ডা. সিদ্দিকুর ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ রোগীদের সাথে কাজ করেননি। তবে এ ধরনের মামলার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি বলেন, "চোখ একটি খুব সংবেদনশীল অঙ্গ। এর অনেক নরম টিস্যু রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলি প্রথমে সেরে উঠলে তারপর অপারেশন করা হয়।"


তিনি আরও বলেন, "যদি বুলেটটি এমন একটি অবস্থানে আটকে থাকে যেমন- চোখের কোষের ফাঁকে, সেটি কোনো প্রভাব না ফেললে তা অপসারণের প্রয়োজন হয় না।"


ঠাকুরগাঁওয়ের মোহাম্মদ রাজু ইসলাম নামে একজন অটো রিকশা চালক। তিনিও তার শরীরে গুলি বয়ে বেড়াচ্ছেন। ডাক্তাররা শুধু তার কর্নিয়া সেলাই করেছেন এবং তাকে বিশ্রাম ও সুস্থ হতে বলেছেন। তিনি বলেন, তার শরীরের গুলি খুব যন্ত্রণা দেয়। তিনি সব সময় মাথাব্যথায় ভুগছেন।


৭ আগস্ট তাকে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর এবং রংপুরের বিভিন্ন স্থানীয় হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজি অ্যান্ড হসপিটালে আসেন। তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, "অটো রিকশায় দুইটি রিয়ার ভিউ মিরর থাকে। এখন যে আমার শুধুমাত্র একটি চোখ কাজ করছে। আমি কীভাবে আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাব এবং কীভাবে আমার অটো চালাব?" রাজু ১৮ জুলাই ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন।


রাজু জানান, ৪ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে থাকে। প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী মিছিল শুরু করে। পুলিশ ঠাকুরগাঁও সদর এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে।


"মৃতদেহ ও আহত শিক্ষার্থীরা চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। সেই সময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ছিল না। আমি আমার বাড়িতে ফিরে গিয়ে আমার অটো নিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই।" তিনি আরো বলেন, "এক পর্যায়ে পুলিশ ঠাকুরগাঁও কোর্ট বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলা থেকে গুলি চালাতে শুরু করে। আমরা সবাই সাথে সাথে আহত হই।"


তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তার চিকিৎসার জন্য ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে তিনি এখন বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছেন।


৫ আগস্ট থেকে প্রকাশিত প্রতিটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকবাবে প্রতিবাদকারীদের মাথা, বুক, পা এমনকি চোখে গুলি করেছে। 


এসব ঘটনা ২০১৬ সালে কাশ্মীরের আন্দোলনকারীদের ওপর কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের হামলার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। 


অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, তার হাসপাতালে আনা ৭০৬ জন রোগীর অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ ছিলেন এবং কিছু রোগী রাবার বুলেট দ্বারা আহত হয়েছিলেন। তবে তিনি লাইভ বুলেট রোগীদের কোনো ইতিহাস উল্লেখ করেননি।


হাসপাতাল পরিচালক বলেন, তারা রোগীদের ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছেন। তাদের ১১টি অস্ত্রোপচার থিয়েটার অবিরাম কাজ করে গেছে। 


এতে অনেকের স্বপ্নেরও ভঙ্গ হয়েছে।

বগুড়ার উত্তরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ১৬ বছর বয়সী রিয়াদ বলেন, "আমার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিব। আমি আমার দৃষ্টি হারিয়েছি এবং সেনাবাহিনীতে যোগদানের সুযোগও হারিয়েছি। আমি উদ্বিগ্ন যদি আমি আগামী মাসে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারব কিনা।"


রিয়াদ ৪ আগস্ট বগুড়ার সাতমাথা শেরপুর রোডে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন। মিছিলের প্রথম সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রতিবাদ চলাকালীন, পুলিশ কাছ থেকে তাকে গুলি করে।


তার মা বলেন ,"শরীরে যে-সব স্প্লিন্টার ছিল তা. স্থানীয় ডাক্তাররা সরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু চোখে যেগুলো লেগেছে সেগুলো সরাতে পারেননি। তারা আমাদের ঢাকায় যেতে বলেছেন।"


গত ৫ আগস্ট তাকে ঢাকা আনা হয়। ডাক্তার তার কর্নিয়া সেলাই করে তাকে তৎক্ষণাৎ মুক্তি দেন। ১৪ আগস্ট পর্যন্ত কোন এক্স-রে করা হয়নি এবং পরিবার গুলির অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না।


রিয়াদকে একটি ফলো-আপ ভিজিটে আসতে বলা হয়েছে এবং পরে ১৪ আগস্ট আরও চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলা হয়েছে।


তার মা জানান, "যদিও হাসপাতালে খরচ বিনামূল্যে করা হয়েছে। তারপরও আমরা এখনও ব্যয় বহন করতে লড়াই করছি। গত ৪ আগস্ট অ্যাম্বুলেন্সে ২০,০০০ টাকা খরচ হয়েছে। 

No comments

Powered by Blogger.