Adsterra

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ড্রোন হামলা, দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নিহতের খবর

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ড্রোন হামলা, দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নিহতের খবর, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ওপর ড্রোন হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁরা নিহত ও আহতদের নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে শনাক্ত করতে গিয়েছিলেন। সেখানে মৃতদেহের স্তূপ দেখেছেন। 


চারজন প্রত্যক্ষদর্শী, অধিকার কর্মী এবং একজন কূটনীতিক গত সোমবারের ওই ড্রোন হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁরা জানান, সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর ওপর ড্রোন হামলা করা হয়। 


নিহতদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা এবং তাঁর দুই বছর বয়সী মেয়ে রয়েছেন। জান্তা সৈন্য এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে রাখাইন রাজ্যে বেসামরিকদের ওপর সবচেয়ে মারাত্মক হামলা এটি। 


প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে তিনজন শুক্রবার (৯ আগস্ট) রয়টার্সকে বলেন, এই হামলার জন্য আরাকান আর্মিই দায়ী। তবে এই সশস্ত্র গ্রুপটি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ঘটনার জন্য মিলিশিয়া গ্রুপ এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী একে অপরকে দোষারোপ করছে। রয়টার্স হামলায় নিহতের সংখ্যা স্বাধীন সূত্রে যাচাই করতে পারেনি। 


সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, কর্দমাক্ত মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মৃতদেহের স্তূপ। চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে স্যুটকেস এবং ব্যাকপ্যাক। ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া তিনজন ব্যক্তি বলেছেন, এই হামলায় ২০০ জনেরও বেশি মারা গেছে। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, তিনি কমপক্ষে ৭০টি মৃতদেহ দেখেছেন। 


রয়টার্স যাচাই করে দেখেছে, মিয়ানমারের উপকূলীয় শহর মংডুর ঠিক বাইরে ভিডিওগুলো ধারণ করা হয়েছে। অবশ্য ভিডিওগুলো ধারণের তারিখটি স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। 


একজন প্রত্যক্ষদর্শী, ৩৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেছেন, তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী এবং দুই বছর বয়সী মেয়ে হামলায় আহত হন এবং পরে তাঁরা মারা যান। 


বাংলাদেশের একটি আশ্রয়শিবির থেকে ইলিয়াস রয়টার্সকে বলেন, যখন ড্রোন থেকে পলায়নরত লোকগুলোর ওপর আক্রমণ শুরু হয়, তখন তিনি তাঁদের সঙ্গে উপকূলে দাঁড়িয়ে ছিলেন। 


তিনি বলেন, ‘আমি একাধিকবার গোলাগুলির কান ফাটানো শব্দ শুনেছি।’ ইলিয়াস বলেন, তিনি নিজেকে রক্ষা করার জন্য মাটিতে শুয়ে পড়েন এবং গোলাগুলি থেকে যাওয়ার পর উঠে দেখেন, তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে গুরুতর আহত। তাঁর অনেক আত্মীয় মারা গেছেন। 


দ্বিতীয় প্রত্যক্ষদর্শী শামসুদ্দিন (২৮) জানান, তিনি তাঁর স্ত্রী ও নবজাতক পুত্রকে নিয়ে বেঁচে গেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের একটি আশ্রয়শিবির থেকে কথা বলার সময় শামসুদ্দিন বলেন, হামলায় অনেক লোক মারা গেছে। কিছু লোককে যন্ত্রণায় চিৎকার করতে দেখেছেন তিনি। 


মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুর (বেশির ভাগ মুসলিম) সদস্যদের বহনকারী নৌকাগুলোও গত সোমবার নাফ নদীতে ডুবে যায়। দুই প্রত্যক্ষদর্শী এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এতে ডজন খানেক মানুষ মারা যান। 


মেডিসিন স্যানস ফ্রন্টিয়ার্সের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মর্টার শেল ও বন্দুকের গুলিতে আহত সহিংসতাজনিত আঘাত নিয়ে বাংলাদেশে আসা ৩৯ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে তারা। গত শনিবার থেকে তাঁরা মিয়ানমার থেকে আসছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আহতরা নদী পার হওয়ার জন্য নৌকা খোঁজার সময় বোমা নিক্ষেপের বর্ণনা দিয়েছেন। 


জাতিসংঘের আশ্রয় বিষয়ক হাইকমিশনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে দুটি নৌকা ডুবে আশ্রয়দের মৃত্যুর বিষয়ে তাঁরা জানেন। এ ছাড়া মংডুতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর খবর তাঁরা শুনেছে, তবে নিহতের সংখ্যার বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত হতে পারেননি।

No comments

Powered by Blogger.