শিশুর খাবার রান্নায় কোন তেল ভালো ?
মেধার সঠিক বিকাশের জন্য শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মেধা বিকাশে এই সময়ে তাই শিশুর খাবার নির্বাচন করতে হবে অনেক ভেবে চিন্তে।
শিশু বাড়তি খাবার শুরুর সাথে সাথেই শিশুকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বা খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল খাওয়াতে বলেন পুষ্টিবিদরা। কিন্তু বাবা-মায়েরা চিন্তায় থাকেন সন্তানকে কোন তেল দেবেন এবং কতটা দেবেন। এই প্রজন্মের শিশুদের মধ্যে বাড়তে থাকা ওবেসিটির কারণে অনেকেই তেলের ব্যবহার কমিয়ে দেন খাবারে।
পুষ্টিবিদদের তথ্যমতে, শিশুর খাদ্যতালিকায় তেল থাকতেই হবে। প্রতিটি তেলেরই আলাদা উপকারিতা রয়েছে। তবে অবশ্যই পরিমাণমত দিতে হবে এবং বাড়ির রান্নায় তেলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে হবে।
শিশুদের কোন কোন তেল খাওয়ানো যায় এবং সেই সব তেলের খাদ্যগুণ এখানে দেওয়া হল,
সরিষার তেল
অনেকেই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সরিষা তেলে রান্না করা খাবার খান। যদিও কিছু কিছু দেশে এই তেল ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের পরিমিত পরিমাণে সরষের তেল ব্যবহার করা যায়। এতে ত্বক ও চুল ভাল হয়। সরষের তেলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ওমেগা থ্রি রয়েছে।
পুষ্টিবিদদের মতে, শিশুদের কিছু রান্নায় সাদা তেল, কিছু রান্নায় সরষের তেল, এ ভাবে মিশিয়ে করতে পারলে সবচেয়ে ভাল।
ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই
সূর্যমুখী তেল
এতে এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। ভিটামিন ই আছে, যা ত্বক ও চুল ভাল রাখতে সাহায্য করে। এক সমীক্ষা অনুযায়ী, জুভেনাইল ডায়াবেটিসে এই তেল উপকারী। তাই শিশুদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা যায়।
অলিভ অয়েল
বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতনদের পছন্দের তেল অলিভ অয়েল। রান্না থেকে সালাদ সব ক্ষেত্রেই এই তেল অসাধারণ। এতে অনেকটা পরিমাণে ওমেগা থ্রি রয়েছে। ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, হেলদি ফ্যাটও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে এই তেলে। সন্তানের ওবেসিটি থাকলে এই তেলের উপরে ভরসা করা যায়।
কর্ন বা ভুট্টার তেল
ভুট্টা তেল স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ। এতে কোনো আমিষ বা শর্করা নেই, শতকরা ১০০ ভাগই চর্বি বিদ্যমান যার পুষ্টিমান অন্যান্য তেলের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি। ভুট্টা তেলে ভিটামিন এ, ই রয়েছে। এছাড়াও ওমেগা থ্রি, সিক্স থাকায় শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনে এই তেল সহায়ক।
পাম অয়েল
এই তেলেও ভিটামিন এ, ই রয়েছে। তবে অনেকেই পাম অয়েল খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখতে বলেন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকে এই তেল ব্যবহার করেন না। তবে এতে কিছু ভাল উপাদানও আছে। তাই অল্প পরিমাণে ব্যবহার করলে সমস্যা নেই।
সয়াবিন অয়েল
সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত তেল এটি। এতে ভিটামিন ই, কে রয়েছে। ওমেগা থ্রি-ও আছে এই তেলে। হার্ট, ত্বক, হাড়ের জন্য এই তেল ভাল বলা হয়। তবে পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত এই তেল।
কড লিভার অয়েল
কড লিভার সাধারণত কড মাছের লিভার থেকে তৈরি হওয়া তেল। এই তেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ইপিএ, ডিএইচএ, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি রয়েছে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই তেল খেতে শিশুদের কোনও বাধা নেই। তবে তার আগে জানতে হবে, বাচ্চাটির এটি খাওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
No comments