মোবাইল রেখে সঙ্গীকে সময় দিন
জীবনের প্রায়োরিটি লিস্টে কোনটা সবচেয়ে জরুরি সেটা বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। জীবনে সবকিছু জরুরি তবে সেটার মধ্যে অতীব জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সচেতন না হলে জীবন তলানিতে গিয়ে ঠেকবে এটাই স্বাভাবিক। তাই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক উন্নয়নে স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পরিবারের প্রতি মনোযোগী হওয়া অবিসম্ভাবী।
সম্পর্কের উষ্ণতা ফেরাতে বা বহাল রাখতে কোন কোন অভ্যাসে পরিবর্তন আনবেন?
দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে বেশ ভালো আছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। ভালো থাকতে হলে কিছু কিছু বিষয় আপনাকেও মাথায় রাখতে হবে। জানেন সে সব কী ? অশান্তি এড়াতে ও সম্পর্কে আগের মতো উষ্ণতা ফেরাতে মেনে চলুন এ সব নিয়ম।
সময়ের হাত ধরে চলা দীর্ঘ দিনের সম্পর্কেও এক এক সময়ে ক্লান্তির ছাপ পড়ে। একে অপরের প্রতি উত্তেজনা, আবেগে মরচে পড়তে শুরু করে। তখন সম্পর্কে উদাসীনতা আসে, ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়, প্রেম যেন কোথাও হারিয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একে অপরের প্রতি অহংবোধ তৈরি হওয়া, আকর্ষণ কমে যাওয়া— এই সব সমস্যার সঙ্গেই চোরাপথে হাজির হয় অশান্তি। মতের অমিল থেকে ছোটখাটো কথাতেও যেন জোর করে অশান্তি ডেকে আনা। যতই ভিতরে ভিতরে ভালোবাসা থাক, প্রকাশের অভাবটাই তখন মুখ্য হয়ে ওঠে। সম্পর্কের উষ্ণতার আঁচ আর তখন টের পাওয়া যায় না । তবে এই পরিস্থিতি থেকে কিন্তু সম্পর্ককে টেনে আনতেই হবে।
সম্পর্কের মাধুর্যতা রক্ষা ও পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। চলুন বিষয়গুলো জেনে নেয়া যাক
সঙ্গীর জন্য সময় নির্ধারণ :
বর্তমান সময়ে আমরা সঙ্গীর থেকে ফোনের সঙ্গে বেশি সময় কাটাই। অফিস থেকে বাড়ি ফিরেও হাতে সেই ফোন! সম্পর্ক ভাঙার অন্যতম কারণ কিন্তু একে অপরকে সময় না দেওয়া। দৈনন্দিন নানা সূক্ষ্ম বিষয় একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া, একে-অপরের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া— এ সবের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সঙ্গীকে চেনার চাবিকাঠি। তাই দিনের একটা সময় সঙ্গীর জন্য বরাদ্দ রাখুন, আর ফোনটাকে সেই সময় সাইলেন্ট মোডে রাখুন।
ভালোবাসা প্রকাশ করা :
একে অপরের মনে কী চলছে, তা জানা ভীষণ জরুরি। সঙ্গীর মন ভাল করার পথটাও কিন্তু আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। ভালোবাসা থাকলেই হল না। কখনও কখনও ভালোবাসা দেখাতেও হবে। সঙ্গীকে ছোটখাটো সারপ্রাইজ় দেওয়া, সঙ্গীর প্রশংসা করা, মাঝেমধ্যেই দু’জনে কোথাও বেরিয়ে পড়া— জীবনে এই ছোট ছোট পরিবর্তন এনেই দেখুন না! সম্পর্ক মানেই তো সঙ্গীর সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে থাকা।
একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ :
সম্পর্ক মানেই তো সঙ্গীর সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে থাকা। তবে অনেক সময়েই আমরা সঙ্গীকে ধন্যবাদ জানাই না। প্রিয়জনকে কথায় কথায় ধন্যবাদ জানানোর দরকার নেই। তবে মাঝেমধ্যে এই শব্দটি সামনের মানুষটির মন ভালো করে দিতে পারে। আপনি যে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ, সেটা কখনও কখনও ভাষায় প্রকাশ করা জরুরি।
ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই
একত্রিত হয়ে কাজ করা :
একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ খুঁজে নিন। বাড়ির কাজ মিলেমিশে করতে পারেন। দেখবেন সম্পর্কের জটিলতা অনেকটাই কেটেছে। শুধু বাড়ির কাজ নয়, একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য একসঙ্গে শরীরচর্চা করতে পারেন, সুইমিং করতে পারেন। সেই সময় না হলে রাতে খানিক ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। একে অপরের যত কাছাকাছি থাকবেন, ভুল বোঝাবুঝি ততই কমবে।
পুরনো বিবাদ ভুলে যাওয়া :
পুরনো কোনও সমস্যা বা বিবাদকে ঝগড়ার মাঝে টেনে আনবেন না। একসঙ্গে থাকতে গেলে কথা কাটাকাটি হবেই। কিন্তু সেই জের সঙ্গে নিয়ে রাতে বিছানায় না গিয়ে আলাদা আলাদা থাকবেন। যাকে ভালোবাসছেন, তার ছোটখাটো ভুল ক্ষমা করে দিন। বার বার অতীতের বিবাদের প্রসঙ্গ টেনে আনলে কখনই দাম্পত্য সুখী হবে
No comments