পাঠ্যবইয়ে থাকছে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, বাদ যাচ্ছে হাসিনার গুণগান
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যবই থেকে অতিরঞ্জিত ইতিহাস বাদ দেয়া হচ্ছে। কোন সরকার প্রধানকে হিরো বানিয়ে দেয়া কোন অংশ থাকলে তা বাদ দেয়া হবে বই থেকে। বাদ পড়বে বিতর্কিত অংশগুলোও। ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বইগুলোকেই পরিমার্জন করে প্রস্তুত করা হচ্ছে আগামী বছর বিতরণের জন্য। বইগুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার ইতিহাস নিয়ে লেখা কন্টেন্টগুলো বহালই থাকছে। তবে দেশ ছেড়ে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতিরঞ্জিত গুণগান ও বাণী বাদ পড়ছে বইগুলো থেকে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পাঠ্যবইতে কোন অতিরঞ্জিত ইতিহাস থাকলে তা বাদ দেয়া হবে। কোন সরকার প্রধানকে হিরো বানিয়ে কোন অংশ থাকলে তা-ও বাদ পড়তে যাচ্ছে নতুন বইয়ে। আর বিতর্কিত অংশগুলো নতুন পাঠ্যবইয়ে আর থাকছে না। আসলে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম অনুসারের বইগুলোতে ওই বিষয়গুলো তেমন নেই যেগুলো নতুন শিক্ষাক্রমের বইগুলোতে ছিল।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের একটি টিম পাঠ্যবই সংশোধনের কাজ করছেন। আমরা ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বইগুলোকেই পরিমার্জন করে আগামী বছর শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে চাই। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে। শিগগিরই বই পরিমার্জনের কাজ শেষ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পাঠ্যবই সংশোধনের দায়িত্বরত ও এনসিটিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ইতিহাস বা তাকে ঘিরে কোনো কনটেন্ট বাদ দেয়ার কোন নির্দেশনা নেই। সেগুলো পাঠ্যবইতেই থাকবে। তবে ইতিহাসের ক্ষেত্রে যদি অতিরঞ্জিত কিছু লেখা হয়, কাউকে হিরো বানানোর চেষ্টা করা হয়, সেটি বাদ দেয়া হবে। শেখ হাসিনাকে হিরো বানানোর চেষ্টা থাকলে বা তার অতিরঞ্জিত গুণগান থাকলে তাও বাদ দেয়া হবে। এ ছাড়া কাভারে তার বাণী রয়েছে, সেগুলো বাদ যাবে।
দায়িত্ব নেয়ার ২৩দিনের মাথায় নতুন শিক্ষাক্রম বা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তাই ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করে ২০২৬ সাল থেকে তা পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে। তার আগে ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা আগের শিক্ষাক্রমের ধাঁচের পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে।
শিক্ষাবর্ষের নবম মাসে এসে শিক্ষাক্রম সংশোধনের ঘোষণা আসায় বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ এনসিটিবির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, মে-জুন মাসে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রুফ রিডিং হয়। তবে, এবার সেপ্টেম্বরের শুরুতে এসেছে বই সংশোধনের ঘোষণা। তাই পাঠ্যবইয়ের পাণ্ডুলিপি সংশোধন ও ছাপা শেষে সাধারণ স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৮৯ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে বছরের শুরুতে ২৩ কোটির বেশি কপি বই পৌঁছে দেয়ার নতুন চ্যালেঞ্জ এনসিটিবির সামনে।
No comments