মোমিন কখনো হতাশ হয় না
মানুষের স্বাভাবিক চাহিদার বিপর্যয়ে আসে হতাশা। হতাশা একটি মানবিক অনুভূতি, যা তীব্র হলে মানসিক বিপর্যয় ঘটে। হতাশায় দুঃখ-কষ্টের অনুভূতি আনন্দ-সুখের অনুভূতির তুলনায় প্রচণ্ড তীব্র হয়। কেননা সুখের অনুভূতি শরীর ও মনে এক ধরনের ভালো লাগা তৈরি করে শুধু। আর হতাশায় দুঃখের অনুভূতি শরীর, মন ও মস্তিষ্কে এক ধরনের ক্ষত তৈরি করে। এ কারণে তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়।
সাধারণত কোনো কাজে সফল না হলে, দীর্ঘদিন রোগে ভুগলে, কারও দ্বারা প্রতারিত হলে, কোনো ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলে কিংবা এ ধরনের অন্যান্য মানবিক চাহিদার বিপর্যয় ঘটলে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়। আর মানুষ একবার হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেলে প্রথমেই তার মানসিক বিপর্যয় ঘটে। এতে মন ভালো থাকে না। কোনো কিছু ভালো লাগে না। কোনো কাজে আগ্রহ আসে না। ক্ষুধা ও ঘুম কমে যায়। হতাশা তীব্র হলে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়ে যায়। তাই জীবনে কোনো বিপদ-বিপর্যয় এলে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। কেননা এসব বিপদ-বিপর্যয় আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে পরীক্ষাস্বরূপ। আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করে দিয়েছেন, তিনি বান্দাদের বিভিন্ন বিপদ-বিপর্যয় দ্বারা ধৈর্যের পরীক্ষা করবেন।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আমি তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, ধনসম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদের।’ (সুরা বাকারা ১৫৫) বিপদ-বিপর্যয়ে মোমিন ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে। এটা মোমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাই হতাশা মোমিন ব্যক্তিকে স্পর্শ করতে পারে না। কেননা আল্লাহতায়ালা দুনিয়ার জীবনে দুঃখ-কষ্ট দ্বারা পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মোমিন ব্যক্তি তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং ধৈর্যের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সবসময় মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে। তাই মোমিন ব্যক্তির জন্য বিপদ-বিপর্যয়ে ধৈর্য ধারণ করা সহজ হয়ে যায় এবং ধৈর্য ধারণ করে তারা সফলকাম হয়। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘অবশ্যই মোমিনরা সফল হয়েছে।’ (সুরা মোমিনুন ১) আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন বিপদ-বিপর্যয়ের দ্বারা সব মানুষেরই পরীক্ষা নেবেন। পরীক্ষা হবে যার যার ইমান অনুসারে। যে যত বড় প্রিয় বান্দা তার পরীক্ষাও হবে তত কঠিন।
No comments