মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে ভূতের সিনেমা!
সিনেমা দেখতে কে না ভালোবাসে। অনেকের কাছেই আবার ভূতের সিনেমা প্রিয়। অনেকে আবার সহ্য করতে পারেন না বলে দেখেন না। মনে করেন অতিরিক্ত ভয়ের সিনেমা মানসিক অত্যাচার। তবে জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, ভূতের সিনেমা আসলে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
লকডাউনের উদ্বিগ্ন আর একাকী দিনগুলোতে মানুষের হরর বা ভৌতিক সিনেমা দেখার প্রবণতা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়ে গিয়েছিল। এমনকি স্টিভেন সোডারবার্গ পরিচালিত ২০১১ সালের প্যান্ডেমিক থ্রিলার ছবি 'কনটাজিয়ন' ছিল ২০২০ সালের সবচেয়ে বেশি দেখা মুভিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটা নিয়ে বেশ কিছু সংবাদও দেখা গেছে। মানুষ যখন ইতোমধ্যে এক ভীতিকর দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছে, তখন কেনই বা তারা আবার সেই ভয়ের বিষয়গুলোই ঘাটছে?
সম্প্রতি একদল গবেষক এমনটাই দাবি করেছে। তাদের মতে, টেনশন আর ভয় থেকে মুক্ত হতে হলে ভূতের সিনেমা দেখা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের যুক্তি-
ভূতের সিনেমা দেখলে মানুষের মনের সঙ্গে সঙ্গে শরীরও সচেতন হয়ে ওঠে। আচমকা রিল লাইফের প্রেতাত্মার চিৎকারে আপনিও হয়তো বার বার সোফা কিংবা বিছানায় লাফিয়ে ওঠেন। এতে কিন্তু প্রচুর ক্যালোরি বার্ন হয়।
গবেষকদের দাবি, একটি ভূতুড়ে সিনেমা দেখা প্রায় ৩০ মিনিট হাঁটার সমান। ভয়ের সিনেমা আপনাকে দুশ্চিন্তামুক্ত করে। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। সিনেমার ভয়ে আপনি এতটাই মশগুল হয়ে যান যে তখন বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলি ছোট মনে হয়।
ধরুন ‘রাগিনী এমএমএস’ কিংবা ‘এভিল ডেড’ দেখতে বসেছেন। এই সময় আপনার মস্তিষ্ক কিন্তু সবচেয়ে বেশি সজাগ থাকবে। ফলে মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালন বাড়বে। আপনার মস্তিষ্ক বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।
গবেষণায় দেখা যায়, ভয়ের সিনেমা দেখার সময় নারী-পুরুষ উভয়ের শরীরেই প্রচুর পরিমাণে অ্যাড্রিনালিন রাশ হয়। এর ফলে রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, স্বেচ্ছায় হরর বিনোদন বেছে নিলে ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে পালানোর প্রবণতা কমে। নিরাপদ পরিবেশে কৃত্রিম ভয় তৈরির মাধ্যমে হরর ফিকশন দর্শকদের আবেগ ও মানসিক স্থিতি নিয়ন্ত্রণ চর্চার সুযোগ করে দেয়। ফলস্বরূপ মানসিক স্থিতিশীলতা বাড়তে দেখা যায়।
অন্যভাবে বললে, হরর ছবি ভয় তৈরি করে না, বরং ভয় প্রশমিত করে।
প্রত্যেক মানুষের মধ্যে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ার শক্তি থাকে। তবে দৈনন্দিন জীবনে তা সূপ্ত অবস্থাতেই থেকে যায়। ভৌতিক সিনেমা এই প্রতিভাকে জাগ্রত করে।
ব্যক্তিগত জীবনে সুখ নেই, অফিসে শান্তি নেই। এমন পরিস্থিতিতে ভয়ের সিনেমা দেখার চাইতে ভালো আর কিছুই হতে পারে না। কারণ ভয় এতটাই তীব্র অনুভূতি যে তা অন্যান্য ভালো-মন্দ গুলোকে জীবনে গৌণ করে দেয়।
No comments