২ টাকায় মাংস দিয়ে দুপুরের খাবার, আনন্দ
মাত্র দুই টাকায় দুপুরের খাবার। এখন আর দুই টাকা দিয়ে লজেন্স ছাড়া তেমন কিছু পাওয়া যায় না। ভিখারিকে দিলেও অনেক সময় নিতে চায় না। আর সেই সামান্য দুই টাকার বিনিময়ে জেলা শহরে হতদরিদ্রদের মুখেই দুপুরের খাবার তুলে দিয়েছে ঝিনাইদহের প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে ‘দুই টাকায় হাসি’ এর দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।
‘তৃপ্তির হাসি ফুটুক ভিক্ষুকদের মুখে মুখে’ এই শ্লোগানে শনিবার দুপুরে জেলা শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ পার্কে এ খাবার বিতরণ করা হয়। প্রতি মাসের নিয়মিত আয়োজনের ১০ম পর্বে রোববার ঝিনাইদহ শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ পার্ক প্রাঙ্গণে ২০০ জন ভিক্ষুকদের মাত্র ২ টাকায় দুপুরের খাবার সাদা ভাত, সবজি, ডাউল ও মুরগির মাংস খাওয়ানো হয়। দুই টাকায় পেট ভরে দুপুরের খাবার যা স্বপ্নের মতো।
শহরের ভিক্ষুক আজিজ মিয়া মাত্র দুই টাকায় দুপুরের খাবার পেয়ে বললেন, এটা আমার কাছে স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে। দুই টাকায় খাবার পাবো এটা কখনও ভাবিনি। এই সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তিনি বলেন, আরও সংগঠন যদি এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে গরীব অসহায় মানুষগুলো দুমুঠো ভাত খেয়ে বাঁচবে।
খাবার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সাজিদ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জহুরুল ইসলাম, দুই টাকায় হাসি পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক মো. মেহেদী হাসান, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. ওসমান গনি, ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম পরিষদের জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ সাইদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান চৌধুরী, স্টেডফাস্ট কুরিয়ার ঝিনাইদহ জেলা ম্যানেজার মো. আবু জাফর কামালসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল সদস্যরা।
ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন, জেলা শহরের ভিক্ষুকদের এই মুখের হাঁসি যেন সদ্য ফোঁটা গোলাপের ন্যায় ফুটে উঠেছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জহুরুল ইসলাম জানান, ভিক্ষুক, ইয়াতিম শিশু, শ্রমজীবী এবং অসহায়রাও তাদের মতো করে আত্মসম্মান নিয়ে সমাজে বসবাস করছেন। সম্পূর্ণ ফ্রিতে খাবার দেওয়া হলে তাদের আত্মসম্মানবোধে আঘাত করা হবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নেই ফ্রিতে না দিয়ে দুই টাকায় তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে।
প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সাজিদ মাহমুদ বলেন, আমরা মনে করি সমাজের পিচিয়ে পড়া এসব মানুষের সহযোগিতা করার জন্য অঢেল ধনসম্পদের চেয়ে সুন্দর মানসিকতাই বড়। এমন চিন্তা থেকে একদিন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে টং দোকানের আড্ডা বাদ দিয়ে সেই টাকা ভিক্ষুক, অসহায় এতিম শিশুদের ও সুবিধাবঞ্চিতদের মুখে হাসি ফুটানোর প্রতিজ্ঞা করি। তারপর থেকেই আমাদের সংগঠনের পথচলা শুরু।
No comments