টি ব্যাগের চা কি সত্যিই ক্ষতিকর ?
ভদ্রলোকের আড্ডার টেবিল, অফিসের সাইড ডেস্ক বা রাস্তার ধারের টঙের দোকানের কাপের সারি একটা কথাই মনে করিয়ে দেয়ে উহু্ উহু্ মুরব্বি চা খেতে হবে। চা সবারই কাছে এই অনুভূতিশীল তৃপ্তিকর তরল। এই সমাজের উচ্চ পর্যায়কেই বোঝায়। এটি শীত বা বর্ষায় উষ্ণতার আবহ্। এটি আপনার রাতের ঘুমকে কেড়ে নিতে এক মুহুর্তও অপেক্ষা করবে না।
এই চা পানে রয়েছে অনেক উপকারিতা। কিন্তু প্রায়ই মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে, বাসার বাইরে টং দোকানে গরম পানিতে টি ব্যাগ ডুবিয়ে যে চা পান করা হয়, তা কি আদৌ স্বাস্থ্যসম্মত? এ নিয়ে অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য করে থাকেন। কারও মতে টি ব্যাগ ডুবিয়ে চা পান করা ঠিক নয়। আবার কেউ কেউ তো সরাসরি নিষেধই করে থাকেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, টি ব্যাগ দিয়ে তৈরি চা পান করা কি আসলেই ক্ষতিকর? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত। এবার তাহলে বিষয়টি নিয়ে জানা যাক।
চা’র উপকারিতা: চায়ের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এতে নানা ক্রনিক অসুখ দূরে থাকে। আবার স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার অসুখের আশঙ্কাও কমে। আর মানসিক তৃপ্তি তো রয়েছে।
টি ব্যাগ কি ক্ষতিকর: এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা জানালেন, টি ব্যাগ দিয়ে তৈরি চা পান ক্ষতিকর না উপকারী, তা নির্ভর করে গুণগত মানের ওপর। টি ব্যাগের গুণগত মান কম বা খারাপ হলে ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক। কেননা, এ জাতীয় টি ব্যাগ নাইলন ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হয়। বিজ্ঞানসম্মত না পিইটি। এ জাতীয় টি ব্যাগ দিয়ে চা বানিয়ে খেলে শরীরে প্রচুর পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে। এতে ছোট ছোট নানা সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
উন্নতমানের টি ব্যাগ ব্যবহার: কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কাগজ দিয়ে দামি টি ব্যাগ তৈরি করে থাকে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে সামর্থ্য থাকলে পাতা দিয়ে তৈরি টি ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বড় পাতা দিয়ে টি ব্যাগের মতো তৈরি করা হয়। যার ভেতরে ছোট ছোট চা পাতা তাকে। এ জাতীয় প্রাকৃতিক টি ব্যাগ ব্যবহারে ক্ষতি হয় না। বরং আরও স্বস্থ্যের হাল ভালো থাকে।
চা ফুটিয়ে পানে উপকার বেশি: টি ব্যাগ যতই ভালো হোক, প্রাচীন রীতি অনুযায়ী পানিতে ফুটিয়ে চা বানানোর পদ্ধতিই সেরা। চা পানে উপকার পেতে চাইলে গরম পানিতে চা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। তাতে পানিতে উপস্থিত সব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর সহজেই গ্রহণ করতে পারবে। এতে শরীরের সব ধরনের প্রদাহ কমবে এবং ছোট ছোট বিভিন্ন অসুখও দূরে থাকবে।
দিনে কয় কাপ চা: একজন সুস্থ মানুষ দিনে ৩-৪ কাপ চা পান করতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে ১২ বছরের থেকে কম বয়সীদের চা পান করতে না দেয়াই ভালো। চা পানে তাদের ক্ষতি হতে পারে। উপকারের বিপরীতে ছোট ছোট অসুখ হতে পারে। আবার চিনি ও দুধ মেশানো যাবে না। এতে উপকারের থেকে বরং শরীরের ক্ষতিই বেশি হয়।
No comments