সন্তান মোবাইলে কী করছে, খেয়াল রাখুন কিছু কৌশলে
প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে বর্তমানে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। ইউটিউবের ভিডিও বা ফেসবুকে চলতে থাকা একের পর এক রিল শিশুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাড়ির কাজ সামাল দেন অনেক অভিভাবকই। তবে আপনার সন্তানের হাতে তার । এই বড় দায়িত্বটি খুবই সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। কীভাবে সেটা মোকাবিলা করবেন?
ওয়াচ হিস্ট্রি খেয়াল রাখুন
ইউটিউবসহ মোবাইলের সকল ব্রাউজারের ‘ওয়াচ হিস্ট্রি’ নিয়মিত খেয়াল রাখুন। সন্তান মোবাইল নিয়ে কী সার্চ করছে, কোন ধরনের ভিডিও দেখছে, তা লক্ষ রাখুন। কোন অ্যাকাউন্ট দিয়ে কী কী ভিডিও দেখা হল, তার একটি তালিকা ওয়াচ হিস্ট্রিতে সংরক্ষিত থাকে। সেটি নিয়মিত খেয়াল রাখলেই বুঝতে পারবেন। এছাড়া, কী ধরনের ভিডিও দেখা তার পক্ষে উপযোগী, তা শিখিয়ে দিন। সেই নিয়ে আলোচনাও করুন। তা হলে শিশু পরবর্তী সময়ে ইউটিউবে সেই ধরনের ভিডিও খুঁজবে।
সব কিছু আড়াল করবেন না
শিশুর থেকে সব কিছু আড়াল করতে যাবেন না। তা হলে তাদের কৌতূহল আরও বাড়বে। ইউটিউবে কোনো ধরনের ভিডিও বা শর্টস ক্ষতিকর, সেগুলো শিশুকে বোঝান। খারাপ দিকটি নিয়ে আলোচনা করুন। খারাপ আর ভালোর তফাত বুঝতে পারলেই তাদের আর অহেতুক কৌতূহল তৈরি হবে না।
পাশে থাকুন বন্ধু হয়ে
বয়ঃসন্ধিকালে ছোটদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ তৈরি করে বিপরীত লিঙ্গের শরীর। এ বিষয়ে বাজারে কিছু বই আছে। পড়তে দিন। যাতে সে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। যেকোনো বিষয়ে খোলামেলা আলাপ করুন। সন্তানের পাশে থাকুন বন্ধু হয়ে। তাদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করুন। সন্তান কাদের সঙ্গে মেলামেশা করে, খেয়াল রাখুন।
পর্নোগ্রাফি সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা দিন
পর্নোগ্রাফি সম্পর্কে অনেকেই প্রথমবার জানতে পারে বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে। স্কুল থেকে প্রতিদিন কী শিখল, কী জানল খোঁজ নিন। পর্নোগ্রাফির বেশিরভাগই ভুল, আরোপিত, অসত্য, বিভ্রান্তিকর। এই অর্ধসত্য থেকে দূরে রাখতে আপনার সন্তানকে পর্নোগ্রাফির জগৎ সম্বন্ধে আগেই সতর্ক করে দিন।
বলতে পারেন আইন এবং নৈতিকতার কথাও
আইন মেনে চলা সাধারণত আমরা পরিবার থেকেই শিখি। পর্নোগ্রাফি যে বেআইনি, অপরাধ—এটা সন্তানকে বোঝান। তাদের বোঝান, মিথ্যা বলা বা চুরি করার মতো এটাও একটা অপরাধ। মা কিংবা বাবা হিসেবে আপনি এই অপরাধকে প্রশ্রয় দেবেন না।
মেরে নয় বুঝিয়ে বলুন
বোঝানোতে কাজ না হলে স্পষ্ট জানিয়ে দিন, পর্নোগ্রাফি দেখলে আপনি তার ইন্টারনেট অ্যাকসেস বাতিল করতে বাধ্য হবেন। অবুঝ হবেন না, অস্থির হবেন না। শান্তভাবে বুঝিয়ে বলুন। আপনার সন্তানকে বোঝানোর সময় তার বয়স মাথায় রেখে বোঝাবেন। তার কাছ থেকে খুব পরিণত আচরণ আশা করবেন না। এবং আপনিও তার সঙ্গে কোনো হিংস্র আচরণ করবেন না। বরং তার বয়সের চ্যালেঞ্জ বুঝে তার প্রতি সমব্যথী হয়ে ধীরে ধীরে তাকে সেখান থেকে বের করে আনুন।
মনে রাখবেন, হাজার মারধর বা বকা দিয়ে যে কাজ করা সম্ভব হয় না, একটুখানি ভালোবাসা দিয়ে সেই কাজটা খুব সহজেই করে ফেলা যায়।
No comments