Adsterra

রহস্যময় এক হ্রদ প্রাণীরা নামলে হয় পাথর

রহস্যময় এক হ্রদ প্রাণীরা নামলে হয় পাথর, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

এটি এমন একটি হ্রদ যে পানিতে নামলেই মারা যায় পাখিসহ অন্যান্য প্রাণী। শুধু তাই নয়, পানিতে থাকা লবণের কারণে মৃত প্রাণীরা জমে যায় পাথরের মূর্তির মতো । শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও অন্য সব হ্রদের মতো সুন্দর নয় এই হ্রদ। এটি মূলত এর অদ্ভুত রূপ ও ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের জন্য পরিচিত। বিস্ময়কর ভূতাত্ত্বিক স্থানটি পূর্ব আফ্রিকার তানজানিয়ায় অবস্থিত একটি লবণাক্ত হ্রদ। যার নাম লেক ন্যাট্রন। তবে রহস্যময় ও ভয়ংকর রক্তিম লাল রঙের চেহারার কারণে হ্রদটিকে ‘ডেডলি রেড লেক ও বলা হয়। কিন্তু আসলেই কি হ্রদটি প্রাণীদের পাথরে পরিণত করে? আজকের প্রতিবেদন জানাবো সেই গল্প।

রূপকথার কাহিনীর মতো মনে হলো এটি বাস্তব। লেক ন্যাট্রন হ্রদ তার অদ্ভুত ও ভয়ংকর সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। হ্রদের পানির রংও রক্তিম লাল, যা প্রথম দেখাতে এক ধরনের গা ছমছমে অনুভূতি দেয়। এমন রং হওয়ার কারণ, হ্রদের পাশে থাকা ‘ওল ডোইনিও লেংগাই’ নামের আগ্নেয়গিরি। এটিই একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা ন্যাট্রোকার্বোনাটাইট নামে খুব বিরল একটি কার্বোনাইট লাভা নির্গত করে। সোডিয়াম কার্বোনাইট, সঙ্গে অন্যান্য উচ্চ ঘনত্বের সব খনিজ পদার্থ পাহাড় বেয়ে হ্রদে প্রবেশ করে হ্রদকে রক্তিম লাল রঙে রূপ দেয়। আর এই পদার্থগুলো পানির পিএইচ স্তরকে এতটাই বেশি ক্ষারীয় করে তোলে যে হ্রদের পানিতে কোনো প্রাণী টিকতে পারে না।

বিজ্ঞানীরা জানান, লেক ন্যাট্রনের পানির পিএইচ স্তর ১০.৫, যা জীবিত প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফলে এই হ্রদে নামলে পাখি বা কোনো প্রাণী দ্রুত মারা যায় এবং পানিতে থাকা উচ্চ লবণের কারণে পাথর বা মমির মতো জমে যায়। বছরের বেশির ভাগ সময় হ্রদের পানির তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। ফলে পানি দ্রুত বাষ্পীভূত হয় আর তলদেশে পড়ে থাকে তরল লাভা।

এছাড়া প্রাচীন মিসরীয় মমিকরণ পদ্ধতিতে সোডিয়াম কার্বনেট ব্যবহার করা হয়েছিল। এই সোডিয়াম কার্বনেট, যা মূলত 'ন্যাট্রন' নামে পরিচিত। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এটি মিসরীয়রা মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহার করত। ন্যাট্রন মূলত মৃতদেহের পানি শোষণ করে তার পচন রোধ করে। বিশ্বাস করা হয়, লেক ন্যাট্রনের পানিতে প্রাণ হারানো যেসব প্রাণী পাথর বা মমিতে রূপ নিয়েছে তারাও একই পদ্ধতির শিকার । তবে এ বিষয়ের কোনো শক্ত প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।

ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি  ও মানসিক স্বাস্থ্য

তবে এখানেই শেষ নয়, এই ভয়ংকর হ্রদের আরও একটি অদ্ভুত দিক আছে। এটি পূর্ব আফ্রিকার লেসার ফ্লেমিঙ্গোদের জন্য প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। প্রায় ২৫ লাখ ফ্লেমিঙ্গো এখানে বংশবৃদ্ধি করে, কারণ হ্রদে প্রচুর নীলাভ-সবুজ শৈবাল পাওয়া যায়, যা তাদের প্রধান খাদ্য। এই ফ্লেমিঙ্গোরা হ্রদের কঠিন পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তারা হ্রদের পানিতে বেঁচে থাকতে পারে। ফলে এই হ্রদে ফ্লেমিঙ্গোরা পাথরে পরিণত হয় না।

No comments

Powered by Blogger.