এবার ইলন মাস্ক ও জাকারবার্গের পর সবচেয়ে বেশি সম্পদ অর্জন করেছেন যিনি
ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এআই চিপ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রায় বিশ্বজুড়ে ৯০ ভাগ বাজার দখল করে রেখেছে এনভিডিয়া। এই সাফল্য কোম্পানিটিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কোম্পানিতে পরিণত করেছে। এ ক্ষেত্রে এনভিডিয়ার আগে রয়েছে শুধু অ্যাপল ও মাইক্রোসফট।
কোম্পানিসমার্কেটক্যাপের তথ্য অনুসারে, এনভিডিয়ার এই উত্থান প্রযুক্তি জগতে নজির স্থাপন করেছে।
এনভিডিয়ার সাফল্য সরাসরি এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জেনসেন হুয়াংয়ের সম্পদ বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালে হুয়াংয়ের সম্পদ ৭৬ বিলিয়ন ডলার বেড়ে মোট ১১৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে ব্লুমকার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—হুয়াংয়ের সম্পদ বৃদ্ধির হার অ্যামাজনের জেফ বেজোসের চেয়েও বেশি। বেজোস এই বছর ৭০ বিলিয়ন ডলার সম্পদ অর্জন করেছেন।
এনভিডিয়ার এআই বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তাদের উদ্ভাবনী গ্রাফিক প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি উন্নত এআই মডেল প্রশিক্ষণের জন্য অপরিহার্য। কোম্পানিটি ২০১২ সালে প্রথম অ্যালেক্সনেট নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এআই-ভিত্তিক সেবা চালু করেছিল, ১ হাজার ধরনের চিত্র শ্রেণিবদ্ধ করতে পারত। পরবর্তীতে ধারাবাহিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে এনভিডিয়া জেনারেটিভ এআই, ক্লাউড কম্পিউটিংসহ অন্যান্য রূপান্তরকারী প্রযুক্তির ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
২০২৪ সালের অক্টোবরে এনভিডিয়ার বাজার মূল্যে ৩.৫৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। সে সময় অল্প সময়ের জন্য এটি অ্যাপল কোম্পানিকেও টপকে গিয়েছিল। ওই মাসেই এনভিডিয়ার শেয়ারমূল্য ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। মূলত তাদের এআই চিপের ব্যাপক চাহিদা এবং ওপেনএআই-এর ৬.৬ বিলিয়ন ডলারের ফান্ডিং ঘোষণার প্রভাবেই কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য দ্রুত বেড়েছিল।
এই বছর হুয়াংয়ের ৭৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বাড়লেও, ইলন মাস্কের সম্পদ সবচেয়ে বেশি ২২৬ বিলিয়ন ডলার বেড়ে হয়েছে ৪৫৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জাকারবার্গ অর্জন করেছেন ৯১ বিলিয়ন ডলার। জাকারবার্গের মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে এখন ২১৯ বিলিয়ন ডলার।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ইলন মাস্ক এই বছর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ অতিক্রম করেছেন। মূলত বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ও বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রবৃদ্ধির ফলেই বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন মাস্ক।
এনভিডিয়ার শেয়ার পারফরম্যান্সই হুয়াংয়ের সম্পদ বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি। ২০২৪ সালে এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য ১৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ২০২৩ সালে এই বৃদ্ধির হার ছিল ২৪০ শতাংশ।
জানা গেছে, পারিবারিক ট্রাস্টের মাধ্যমে হুয়াং এনভিডিয়া কোম্পানির ৩.৫ শতাংশ মালিকানা ধরে রেখেছেন।
১৯৯৩ সালে জেনসেন হুয়াং, ক্রিস মালাকোভস্কি এবং কার্টিস প্রিয়েম এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটি এআই প্রযুক্তির নেতৃত্বস্থানীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছে। সেমিকন্ডাক্টর এবং এআই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তাদের নেতৃত্ব আগামী দিনের বৈশ্বিক প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
এআই সমাধানের চাহিদা দ্রুত বাড়তে থাকায় এনভিডিয়ার প্রবৃদ্ধির গতি জেনসেন হুয়াংয়ের দক্ষ নেতৃত্বে থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
No comments