Adsterra

আপনার জুতার যে সমস্যাগুলো অসুস্থতা বাড়ায়

আপনার জুতার যে সমস্যাগুলো অসুস্থতা বাড়ায়, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

সুন্দর জুতার পাশাপাশি সেটা যাতে আরামদায়ক হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ পায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও এটা উপকারী। বাজারে এখন বিভিন্ন লুকের, বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা বেরিয়েছে। দাম আর ব্র্যান্ড দেখেই মানুষ জুতা কিনে থাকেন। কিন্তু এই জুতার কারণেও আপনার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে, জানেন? হিল, সমান্তরাল, হাঁটা কিংবা অফিসে যাওয়ার জুতা যদি প্রথমেই পরতে গিয়ে অস্বস্তি হয় তাহলে সেটা পরা আর কখনও ঠিক হয় না। কারণ জুতার কারণেই বাড়তে পারে আর্থ্রাইটিস, হাঁটুর সমস্যা, ফ্ল্যাটফিটের মত সমস্যাগুলো।

বিএইচইউর একটি সমীক্ষা অনুসারে নিজের আরাম অনুসারে ঠিকঠাক মাপের জুতা না কেনার জন্য অনেক তরুণ খেলোয়াড় অনেক আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী এমন ১০০০ থেকে ১৫০০ জন খেলোয়াড়কে এই প্রশ্ন করা হয়েছে সমীক্ষার মাধ্যমে। তাদের সকলেরই বক্তব্য জুতোর কারণেই তাদের অনেক সময় পায়ের সমস্যা দেখা দিয়েছে, ব্যথা, আর্থ্রাইটিসের মত সমস্যা এসেছে।

এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পা-বিষয়ক চিকিৎসক জোডি আর.শোয়েনহাস বলেন, সঠিক মাপের জুতা দেহের ভারসাম্যে সামঞ্জস্য আনার পাশাপাশি সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করে।

জুতা পরার অস্বস্তি থেকে পায়ে অস্বস্তি, আঙ্গুলে ব্যথা, পেশিতে টান ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। আর দীর্ঘদিন এভাবে চললে অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই সবসময় আরামদায়ক জুতা পরার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

সঠিক জুতা নির্বাচনের জন্য কয়েকটি বিষয় জেনে নিন —

প্রতি বছর পায়ের মাপ নেওয়া: শুনতে অবাক লাগতে পারে, তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও পায়ের গঠন পরিবর্তন হয়- একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন মার্কিন চরণ-চিকিৎসক এলিজাবেথ ডর্থি।

তিনি বলেন, বয়সের সাথে পায়ের পাতার সংযোগ স্থলে পরিবর্তন, কোলাজেন’য়ের স্থিতিস্থাপকতা কমা ইত্যাদি থেকে পায়ের আকার পরিবর্তিত হয়। এছাড়া ওজন বাড়া বা কমা, নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান ধারণ ও প্রসবের পর পায়ের রূপান্তর হতে পারে। তাই বছরে একবার অন্তত পায়ের মাপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেন ডা. ডর্থি।

পায়ের পাতার প্রস্থ বিবেচনা করা: শুধু লম্বায় নয় আরামদায়ক জুতা বেছে নিতে পায়ের পাতার প্রস্থের দিকেও নজর দিতে হয়ে। ডা. শোয়েনহাস বলেন, বেশি চিকন জুতা ব্যবহার করলে পায়ে ব্যথা হবে। সেই সাথে পড়বে পেশিতে চাপ। আবার কারও পায়ের পাতা সরু হলে সে চওড়া জুতা পরলে হাঁটায় ভারসাম্য থাকবে না। পিছলে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে।

দিনের শেষে জুতা কেনা: বয়সের সাথে যেমন পায়ের আকার পরিবর্তিত হতে পারে তেমনি সকালের চেয়ে বিকাল বা সন্ধ্যায় পায়ের পাতায় ভিন্নতা আসে। তাই ডা. ডর্থি পরামর্শ দেন, সবসবময় দিনের শেষভাগে জুতা কেনার চেষ্টা করুন। কারণ সারাদিন পর পা একটু ফুলে থাকতে পারে। যে কারণে দিনের প্রথমভাগে কেনা জুতা দিন শেষে পরলে অনেক সময় আঁটসাঁট লাগে।

পায়ের পাতার মাঝের অংশের ভারসাম্য রক্ষা:
পায়ের পাতার মাঝের অংশ বাঁকা থাকে। যে কারণে এই অংশে জুতার সঠিক ভার বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে। অনেকের পায়ের পাতার মাঝের অংশ বেশি বাঁকানো হয়। এক্ষেত্রে কিছুটা উঁচু হিল’য়ের জুতা পরা উপকারী- বলেন ডা.শোয়েনহাস। যে জুতা পায়ের পাতার বাঁকানো অংশে ভালো ভারসাম্য দেবে না, সেটা ভালো হবে না।

আঙ্গুলের সামনে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকা: জুতার অগ্রভাগ পায়ের আঙ্গুল লেগে থাকলে স্নায়ুতে চাপ পড়ে। সেই সাথে কড়া পড়া, আঙ্গুলে ব্যথা হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। জুতার সামনের দিক চওড়া বা আঙ্গুল যাতে স্বচ্ছন্দে থাকে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। আর সামনের দিকে সরু জুতা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে পায়ের সবচেয়ে বড় আঙ্গুলের থেকে অন্তত আধা ইঞ্চি যেন বাড়তি জায়গা থাকে সেটা খেয়াল করতে হবে।

আলাদা কুশন: পায়ের পাতায় আরাম দেওয়ার জন্য অনেক জুতার ভেতর আলাদা কুশন দেওয়া থাকে। এই কুশনগুলো অতিরিক্ত চাপ গ্রহণ করে পায়ের ওপর চাপ কমায়।

উপলক্ষ্যের ভিন্নতায় জুতা নির্বাচন: উদ্দেশ্যে অনুযায়ী জুতা বাছাই করতে হবে।। ডা. শোয়েনহাস বলেন, যেমন- খেলতে বা হাঁটতে গেলে গোড়ালিতে ভালো ভারসাম্য দেয় এমন জুতা পরা উচিত। এক্ষেত্রে স্নিকার্স উপকারী। আবার ভারোত্তলন বা এই ধরনের ব্যায়ামের জন্য সমতল জুতা ভালো। হাঁটার জন্য হালকা পাদুকা বাছাই করতে হবে।

ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি  ও মানসিক স্বাস্থ্য
জোর না করা: ডা. শোয়েনহাস’য়ের ভাষায়, যে জুতা প্রথমেই পরতে জোর দিতে হয় সেটা কখনই আর ঠিক হয় না। একটা কথা প্রচলিত আছে, কয়েকদিন ব্যবহারের পর জুতা আকার একটু বড় হয়। কথাটা ঠিক। তবে যেটা পরতে জোর দিতে হয় সেটা ছাড়লেও আরামদায়ক হয় না।

কেনার সময় পরতে গিয়ে জুতা জোর করে পায়ে গলাতে হলে, সেটা কেনা বাদ দিতে হবে। তাই দোকানে গিয়ে অতি পছন্দ হওয়ার পর, পায়ে আরাম না দিলে সেই জুতা কেনা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

সঠিক মাপের জুতা বাছাই: একইভাবে বাচ্চাদের মাপের চাইতে বড় জুতা পরানোর অভ্যাস রয়েছে অনেক অভিভাবকের, যা মোটেও ভালো নয়। এতে শিশুদের পায়ের বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আরামদায়ক জুতা না পরলে অনেকক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.