আসাদ ও সিরিয়া নিয়ে যে তথ্য দিল রাশিয়া
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) অপ্রতিরোধ্য হামলায় মাত্র ১২ দিনে পতন ঘটেছে সিরিয়ার আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনামলের।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) দামেস্ক ছেড়েছেন আসাদ। এবার আসাদ ও সিরিয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। খবর আলজাজিরা আরবি।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাশার আল-আসাদ তার পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সশস্ত্র সংঘাতে অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার আলোচনার ফলস্বরূপ দেশত্যাগ করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মস্কো সিরিয়ার সব বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তারা সিরিয়ার বিজয়ীদের সকল জাতি ও সম্প্রদায়ের মতামতকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ২২৫৪ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে, যা জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিরিয়ায় রুশ সামরিক ঘাঁটিগুলোতে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য কোনো গুরুতর হুমকি নেই।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন। তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। এরই একপর্যায়ে সম্প্রতি বিদ্রোহীরা হামলা শুরু করে এবং এই হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালালেন প্রেসিডেন্ট আসাদ। রোববার দামেস্ক ‘মুক্ত’ করার ঘোষণা দিল বিদ্রোহীরা। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে কার্যত সিরিয়ায় দীর্ঘ ৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটল।
No comments