Adsterra

সিরিয়া পরিশুদ্ধ হচ্ছে, এই বিজয় সমগ্র মুসলিম জাতির : আল-জোলানি

 

সিরিয়া পরিশুদ্ধ হচ্ছে, এই বিজয় সমগ্র মুসলিম জাতির, আল জোলানি, ঢাকা ভয়েস, আল কায়েদা, জোলানি, বাশার আল আসাদ Dhaka Voice, Trending News, Viral News, To

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসনের অবসানের পর বিদ্রোহীরা তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এই সশস্ত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। গতকাল রোববার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদে ভাষণ দেন তিনি। বলেন, ‘সিরিয়া এখন পরিশুদ্ধ হচ্ছে।’


বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা রোববার দামেস্কের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ থেকে ‘ঐতিহাসিক’ বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর দল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠী এক দুর্বার আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজধানী দামেস্ক সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে।


আল-জোলানি যখন এই ঘোষণা দিচ্ছিলেন তখন রাশিয়া জানিয়েছে সিরিয়ার পালিয়ে যাওয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে গেছেন। রুশ সংবাদ সংস্থাগুলোর মতে, তিনি মস্কোতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁর দমনমূলক শাসনের অবসানে সিরিয়া এবং বাইরের দেশগুলোতে উল্লাস শুরু হয়েছে।


এইচটিএস নেতা তাঁর ভাষণে বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, এই বিজয় এ অঞ্চলের জন্য ঐতিহাসিক এক ঘটনা।’ আল-জোলানি বর্তমানে তাঁর প্রকৃত নাম আহমেদ আল-শারা ব্যবহার করছেন। তাঁর ছদ্মনাম গ্রহণের বিষয়ে তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম পিবিএসকে বলেছিলেন, তাঁর পরিবারের মূল অংশ গোলান মালভূমি থেকে এসেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে, তাঁরা সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে দামেস্কের একটি অঞ্চলে বাস করতে শুরু করে। মূলত পূর্বপুরুষদের স্মৃতি জাগরুক রাখতেই তিনি তাঁর নামে আল-জোলানি যোগ করেছিলেন।


আহমেদ আল-শারা ওরফে আল-জোলানি আরও বলেন, ‘বিদ্রোহীদের এই বিজয় কেবল সিরিয়ার নয়, এটি সমগ্র মুসলিম জাতির বিজয়। আজ, সিরিয়া পরিশুদ্ধ হচ্ছে। যারা দীর্ঘদিন (আল-আসাদের) কারাগারে বন্দী ছিলেন তাদের ত্যাগের বিনিময়েই এই বিজয় অর্জিত হয়েছে। আজ মুজাহিদীনরা (যোদ্ধারা) তাদের শৃঙ্খল ভেঙেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসাদের শাসন হাজারো নিরীহ নাগরিককে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করেছে। আজ আমরা এই বিজয়ের পুরস্কার পেয়েছি। এটি সব সিরিয়াবাসীর জন্য।’


এইচটিএসের শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘আসাদের শাসনামলে সিরিয়া ইরানের উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি স্থান হয়ে উঠেছিল, যেখানে সাম্প্রদায়িকতা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল ছিল।’ তিনি মূলত সিরিয়ায় আসাদের মিত্র ইরান এবং এর লেবাননের প্রক্সি হিজবুল্লাহকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেছিলেন।


ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি  ও মানসিক স্বাস্থ্য

আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের দমনমূলক শাসন অবসানের পর সিরিয়ার ভবিষ্যৎ এখন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। রাজধানী দখলে নিতে এইচটিএস বাহিনীর দ্রুত অগ্রগতি অন্যান্য বিদ্রোহী বাহিনী এবং স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও সক্রিয়তা সৃষ্টি করেছে।


আসাদ পরিবারের অর্ধশতাব্দীর দমনমূলক শাসনের এই আকস্মিক অবসানের পর সিরিয়ার নতুন ব্যবস্থাকে সংজ্ঞায়িত করতে জোলানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন। তবে আন্তর্জাতিকভাবে এইচটিএস একটি নিষিদ্ধ সংগঠন হওয়ায় এবং তাদের কট্টর ইসলামপন্থী আদর্শের কারণে, সিরিয়ার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা কীভাবে গড়ে উঠবে তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। বিদ্রোহী জোটের মধ্যে মতবিরোধ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক গোষ্ঠীর ক্ষমতার লড়াই দেশটির নতুন শাসন কাঠামো গড়ে তোলার পথে বাধা হতে পারে।


এ অবস্থায় দ্রুত বদলাতে থাকা সিরিয়ার ভবিষ্যতে জোলানিকেই একমাত্র প্রধান খেলোয়াড় মানতে নারাজ বিশ্লেষকেরা। কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক থমাস জুনো বলেছেন, ‘আসাদ বিরোধিতাই ছিল এই বিদ্রোহী জোটের মিলনের মূল শক্তি। তবে আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’

No comments

Powered by Blogger.