আসাদের পতন : কী ভাবছে ইসরায়েল ?
ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার সীমান্ত সংযোগ থাকায় এই সংকটে শুরু থেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ইসরায়েল। নতুন করে বিদ্রোহীরা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরুর পর থেকেই সিরিয়া ইস্যুটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছেন চলমান সিরিয়া ইস্যুতে তারা যেন কোনো মন্তব্য না করেন। তবে আল-জাজিরা বলছে, সিরিয়া ইস্যুতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় বৈঠক অব্যাহত রেখেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, তারা সিরিয়া অংশে অধিকৃত গোলান মালভূমিতে সেনাঘাঁটি গড়ে তুলবে। তারা গোলান এবং সিরিয়ার অন্য অঞ্চলের মাঝে একটি পরিখা খনন করেছে এবং ঘোষণা দিয়েছে, এই সীমান্তে যে পক্ষই নজর দেবে, তারা ইসরায়েলের রোষানলের শিকার হবে।
ইসরায়েলের রাজনৈতিক পরিসরে একটি জোর বিতর্ক চলছে। তা হলো অনেকে মনে করছেন, বাশার আল-আসাদের পতনের পর তার বাহিনীর অস্ত্রঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বোমা হামলা করা উচিত, যাতে অস্ত্রগুলো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে চলে না যায়। তবে যা ঘটছে তার দ্বারা ইসরায়েল উপকৃত হবে তা নিশ্চিত। কারণ আসাদের পতনে ইরান তার এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হারিয়েছে, সিরিয়ায় ইরান নিয়ন্ত্রিত অন্য মিলিশিয়া গ্রুপগুলোর অস্তিত্বও হুমকির মুখে। ইরান-সমর্থিত সবচেয়ে শক্তিশালী মিলিশিয়া হিজবুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ইরানের ভূরাজনৈতিক ক্ষমতাবৃদ্ধির যে আকাঙ্ক্ষা, তা বড় হুমকির মুখে পড়ায় সবচেয়ে লাভবান হবে ইসরায়েল।
ইসরায়েল এক বছর ধরে সিরিয়ার বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আসছে। যেটি গত এক মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। বিভিন্ন সময় বিনা অনুমতিতে সিরিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে ইসরায়েল। এখন দেখার বিষয় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিরিয়া ইস্যুতে ইসরায়েল কেমন নীতি হাতে নেয়।
তবে ইসরায়েলের জন্য আশঙ্কার বিষয়ও আছে, ফিলিস্তিনের গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের জনগণ সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি অত্যধিক সহানুভূতিশীল। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের মতো বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোও সুন্নি মুসলিম। সুতরাং বিদ্রোহীদের মদদে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গ্রুপগুলো শক্তিশালী হয় কি না বা নতুন সশস্ত্র গ্রুপের উত্থান ঘটে কি না তা ইসরায়েলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
No comments