Adsterra

চিরনিদ্রায় প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ

চিরনিদ্রায় প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

পার্থিব জীবনের সব হিসাব-নিকেশ চুকিয়ে অগণিত পাঠকের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বিদায় নিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ। আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সাহিত্যের এই নিভৃতচারী কবি। এদিন বিকেল ৪টার দিকে তাকে দাফন করা হয়েছে।


আজ সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমসহ কবির পরিবারের সদস্যরা। 


এদিন দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজায় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সংস্কৃতি উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়াসহ ভক্ত-অনুরাগীরা।


জানাজার আগে কবি হেলাল হাফিজের বড় ভাই দুলাল হাফিজ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ভাই অনেক অভিমানী ছিল। সে অভিমান করেই চলে গেছে। গত তিন বছর ধরে সে আমার সঙ্গে ছিল না। কিন্তু শেষে সে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিলো। আমরাও বাধ্য হয়ে সেটা মেনে নিই। এ সময় তিনি কবির জন্য সবার কাছে দোয়া চান। 


হাসান হাফিজ বলেন, হেলাল ভাইয়ের মৃত্যু আমার অঙ্গহানির সমান। আমার কবি হিসেবে সুনাম অর্জনের পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। প্রেম ও দ্রোহের কবি ছিলেন।


জানাজা শেষে কবি হেলাল হাফিজকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে উপদেষ্টারা এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নসহ সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।


মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়ার ইঙ্গিত সংস্কৃতি উপদেষ্টার


কবি হেলাল হাফিজকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বাংলা একাডেমিতে হেলাল হাফিজের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই ইঙ্গিত দেন। 


উপদেষ্টা বলেন, কবি হেলাল হাফিজের খুব বেশি বই বের হয়নি। কিন্তু তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে। এটি তার অর্জন। কিন্তু এর বাইরেও তিনি অনেক কবিতা লিখেছেন, একাকীত্বের কবিতা লিখেছেন, প্রেমের কবিতা লিখেছেন। বাংলাদেশের সংস্কৃতিজগৎ তার শূন্যতা বোধ করবে। এক বইতেই তিনি সংস্কৃতিতে তার অবস্থান চিরস্থায়ী করে গেছেন।


তিনি বলেন, হেলাল হাফিজ তার কবিতাতেই বেঁচে থাকবেন। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কি কি দায়িত্ব আছে, কবি হেলাল হাফিজকে নিয়ে কী কী করা যায়, কী করণীয় আছে, তা নিয়ে কাজ করা হবে। আপনারা দ্রুত কিছু শুনবেন।


আরেক প্রশ্নের জবাবে ফারুকী বলেন, কবি হেলালের অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি থাকলে বাংলা একাডেমি বের করবে। যদিও আমি মনে করি কবি কখনও কোনো পদক বা পুরস্কারের জন্য কিছু লিখেন না। কিন্তু পুরস্কার দিতে হয় তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। হেলাল হাফিজকে তো আমরা একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কার কখনোই দিইনি। তিনি এটি পাওয়ার জন্য লেখেননি। কিন্তু এটি দেওয়াটা জাতির দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তাঁকে দেওয়া হয়নি। এর ফলে এ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে আমাদের সংষ্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কী করার আছে, আমরা সেটা দেখব।

No comments

Powered by Blogger.