আকাশের ঠিকানায় চিঠি
সবাই আমারে জোর কইরা বিশাল খাটে ঘুমের ওষুধ দিয়া রাত দিন ঘুম পাড়ায় রাখে। তুমি মাটিতে ঘুমাও। ওরা আমারে তোমার কাছে যাইতে দেয় না। আমি হাট কাইটা মরতে গেলে হাতটা নিয়া বান্ধা রাখে, স্যাভলন খাইয়া ফেললে হসপিটালে আইসিইউ তে নিয়া ফালায় রাখে। আমার হাতদুইটা তোমার খুব বেশি প্রিয় ছিলো।তোমার প্রিয় হাতরে সুঁচ দিয়ে খোচাইতে খোচাইতে দাঁগ কইরা দিছে। এরা কিছু বোঝেনা। তোমার কাছে আমারে যাইতে দেয় না। দিন ভইরা মুখে খাবার ঠাসতে থাকে আর আমি বমি করি। এরা তো জানেনা আমরা ২ জন ২ জনের সাথে কথা না বলে কোনদিন খাই নাই। মাঝে মাঝে তো আমার তোমার সামনে ভিডিও কলে বসে খাওয়া লাগতো। পৃথিবীর ১ টা মানুষ ও প্রেম বোঝে না। বুঝলে আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়ে দিতো। চারদিকে এতো এতো স্মৃতি ক্যান তোমার? রাতে তোমার ছবিটা একবার দেখাইয়া আম্মু ফোন লুকায় রাখে আর সকালে দেয়৷ তুমি সারারাত ১ বার ও কেন ফোন দাও না আমারে? মনে পড়ে আবির, আমরা কে কাকে করোবার ফোন দিতে পারে, এই খেলা টা খেলতাম। সবসময় আমি জিততাম। তুমি ২০০ বার দিলে আমি দিতাম ২০১বার। আগে যখন আমি আর তুমি এক পলকে ২ জনের চোখের দিকে তাকিয়ে থাককাম, তখন ও আমি জিততাম। তোমার চোখে পানি এসে যেতো। অথচ এখন আমি যখন তোমার ছবির সাথে খেলাটা খেলি,,, আমি হেরে যাই। তোমার ছবির তো পলক ই পড়ে না। কি দরকার ছিলো এতোকিছুর বলতো? ভালোবাসা আর ঝগড়া দিয়ে তো আমাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিলো। কেন সব শেষ করে দিয়ে চলে গেলে? আবির মনে পড়ে সেই দিনের কথা?? হলের পানিতে কেঁচো পাওয়া গেলো,, ওইদিন ই পরিস্কার করা হলো,,সবাই ওই পানি ই খাচ্ছে, কিন্তু তুমি সেই ঢাকা থেকে আমার জন্য ৫ লিটার পানি বয়ে এনে বললে, খবরদার হলের পানি খাবা না। সবাই কি হাসাহাসি এটা নিয়ে। একসাথে বাড়ীতে আসতাম আমরা। সারারাস্তা আমি ঘুম।আর তুমি আমার ঘুম যাতে না ভাঙ্গে, মাথায় যাতে ব্যাথা না পাই সেযন্য সারাপথ না ঘুমিয়ে তোমার বুকে আমার মাথাটাকে চেপে রাখতে। গতোমাসের সীতাকুন্ডে যাওয়ার পথে আমি তোমারে ধরে দাড়ায় দাড়ায় ও ঘুমাইছি। সংসদ ভবনের সামনের সেই ভিখিরীটার কথা মনে আছে? যে বলেছিলো, আমাদের প্রথম বাচ্চা নাকি ঠিক তোমার মতোন রাজপুত্র দেখতে হবে।
ইতি- রাশা
No comments