Adsterra

হযরত হারুন (আঃ) এর জীবনী।

হযরত হারুন (আঃ) এর জীবনী, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh new

নাম হারুন। তিনি আল্লাহর একজন নবী। মূসা কালিমুল্লাহ (আঃ) এর বড় ভাই। তিন বছরের বড় তিনি মুসা (আ:) চেয়ে। আল্লাহ যখন মুসা (আঃ) কে রাসুল নিয়োগ করেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন তিনি যেনো তাঁর ভাই হারুনকেও নবী নিয়োগ করে তাঁর হাত শক্ত করেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেন এবং হারুন (আ:)কে মুসার সহযোগী নবী নিয়োগ করেন। হযরত হারুন ছিলেন বনী ইসরাইলদের শ নবী, তিনি ছিলেন সুবক্তা।


দাওয়াতী ও সাংগঠনিক জীবন

মহান আল্লাহ বলেন –

“আমি মূসা ও হারুনের প্রতি অনুগ্রহ করেছি। তাঁদের উভয়কে আমি উদ্ধার করেছি মহাকষ্ট থেকে। আমি তাঁদের সাহায্য করেছি। ফলে তারা বিজয়ী হয়েছে। তাঁদের আমি সঠিক পথ দেখিয়েছি। তাঁদের উভয়কে আমি সুস্পষ্ট কিতাব দান করেছি। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাঁদের উভয়ের সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছি। মুসা ও হারুনের প্রতি বর্ষিত হোক সালাম। এভাবেই আমি উপকারী লোকদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। আসলে ওরা দু’জনেই ছিলো আমার প্রতি বিশ্বস্ত দাস।” (সূরা আস সাফফাত, আয়াত ১১৪-১২২)


আল্লাহর এ বানী থেকে হযরত হারুনের সঠিক মর্যাদা বুঝা যায়। তিনি ভাই মুসার সাথে ফেরাউনের দরবারে উপস্থিত হন। ফেরাউনকে দাওয়াত প্রদান করেন। ফেরাউন তাঁদের দুজনকেই মিথ্যাবাদী বলে অস্বীকার করে। সে বলে, এরা দুই ভাই রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার জন্যে এসেছে। অতপর ফেরাউন হযরত মুসা ও হারুন দুজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। অতপর মুসা ও হারুনের সাথে ফেরাউনের যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত হয়, তাঁর পরিনতিতে আল্লাহ ফেরাউনকে ধংস ও নির্মূল করে দেন। ফেরাউন ডুবে মরার পর সিনাই উপত্যকায় থাকাকালে হযরত মুসা হযরত হারুনকে নিজের খলিফা বা ভারপ্রাপ্ত নেতা মনোনীত করে চল্লিশ দিনের জন্যে তূর পাহাড়ে নির্জনবাসে যান। হযরত হারুন ভারপ্রাপ্ত নেতা থাকাকালেই সামেরি গ-বাছুর বানিয়ে সেটার পূজা করতে বলে সকলকে। হারুন তাঁকে বারন করেন। এ ব্যাপারে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জাতি দ্বিধাবিভক্ত হবার উপক্রম হয়ে পড়ায় তিনি সেই পদক্ষেপ নেননি। হযরত মুসা চল্লিশ দিন পর তাওরাত নিয়ে ফেরত এসে হযরত হারুনের উপর ক্রোধান্বিত হন। এ ঘটনাটি কুরআনে এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে –


“(গ-বাছুর পুজাকরতে নিষেধ করে) হারুন তাঁদের বলেছিলো, হে আমার জাতি তোমরা তো পরীক্ষায় পড়েছো। তোমাদের প্রভু বড় করুনাময়। কাজেই তোমরা আমার অনুসরন করো এবং আমার নির্দেশ মানো। কিন্তু তারা তাঁকে বলে দিলো মুসা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা এর পূজা করবো। মুসা ফিরে এসে বললো- হে হারুন তুমি যখন দেখলে এরা পথভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তখন এদেরকে আমার অনুসরনের পথে আনতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছে? তুমি কি আমার হুকুম অমান্য করলে? হারুন বললো- হে আমার সহোদর ভাই, আমার দারি ও চুল ধরে টেনোনা। আমার ভয় হচ্ছিলো তুমি এসে বলবে- হারুন তুমি কেন বনী ইসরাইলদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করলে? কেন আমার কথা রক্ষা করোনি।” (সূরা তোয়াহা, আয়াত ৯০-৯৪)


অন্যস্থানে বলা হয়েছে-

“মুসা নিজের ভাইয়ের চুল ধরে টানলো। হারু বললো – হে আমার সহোদর, এই লোকগুলো আমায় কোণঠাসা করে ফেলেছিলো এবং আমাকে হত্যা করার জন্যে উদ্যত হয়েছিলো। কাজেই তুমি শত্রুদের কাছে আমায় হেয় করোনা এবং আমাকে যালিম গণ্য করোনা। তখন মুসা দোয়া করলো – হে প্রভু, আমাকে আর আমার ভাইকে ক্ষমা করে দাও। আর আমাদেরকে রবেশ করাও তোমার অনুগ্রহের মধ্যে। তুমিই তো সব দয়াবানের বড় দয়াবান।” (সূরা আল আরাফ, আয়াত ১৫০-১৫১)


এ থেকে বুঝা যায়, হযরত হারুন জীবনের ঝুকি নিয়েও নিজ কওমকে সত্য পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে জাতির মধ্যে অনৈক্য ও বিভেদ সৃষ্টি হোক এটা তিনি চাননি। আসলে তিনি ছিলেন বড়ই প্রজ্ঞাবান ও মহান রাসুল।


হযরত মুসা (আঃ) এর মৃত্যুর এগারো মাস পূর্বে তিনি ইন্তেকাল করেন। ভাই মুসার মতই তিনি ছিলেন একজন বলিষ্ঠ সংগ্রামী পুরুষ। তারা দুই ভাই নেতৃত্ব প্রদান করেন এক বিশাল জাতির।

No comments

Powered by Blogger.