দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হবে কৃষক দিবস
কৃষকের ঘামেই দাঁড়িয়ে দেশের কৃষি। অথচ তাঁদের সম্মান জানাতে বিশেষ কোনো দিবস ছিল না এত দিন। এবার সেই শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। ৩০ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ও এর সম্প্রসারণ কেন্দ্রের (বাউএক) উদ্যোগে পালিত হতে যাচ্ছে কৃষক দিবস।
‘কৃষকবান্ধব প্রযুক্তির সম্প্রসারণই হোক আমাদের অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে দিবসটি পালন করা হবে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাউএকের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। এ সময় বাউএকের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান, কৃষকদের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে মাঠপর্যায়ে একটি শক্তিশালী দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় বাউএক। কৃষকদের প্রয়োজন ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পথ খুঁজে বের করাই তাঁদের লক্ষ্য। এই দিবস পালনের আরেকটি লক্ষ্য হলো কৃষকদের প্রতি সম্মান জানানো। কৃষকের জন্য এই বিশেষ আয়োজন তাঁদের সম্মানিত ও অনুপ্রাণিত করবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
দিবসটি পালনের বিভিন্ন পরিকল্পনা সম্পর্কে বাউএক পরিচালক জানান, দিনব্যাপী আয়োজনে থাকবে বর্ণাঢ্য কৃষক শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খামার, গবেষণাগার ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি পরিদর্শন এবং সফল কৃষক-কৃষাণী সম্মাননা। বাউএকের তত্ত্বাবধানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকার ৩০০ কৃষকের মধ্যে ৬ জন সফল কৃষক-কৃষাণীকে সম্মাননা ও সনদ প্রদান করা হবে। প্রতিযোগিতামূলক সবজিবাগান, বাউএকের সঙ্গে যুক্ত থাকা ও অবদানের ভিত্তিতে এই সম্মাননা দেওয়া হবে। পাশাপাশি কৃষকদের মধ্যে উন্নতমানের ৫ প্রকার বীজ (ডাঁটাশাক, লালশাক, চালকুমড়া, ঢ্যাঁড়স, মিষ্টিকুমড়া) বিতরণ করা হবে।
বাউএকের পরিচালক আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কৃষকদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করা এই আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত অনেক গবেষণা হয়। এর মধ্যে খুব কমসংখ্যক গবেষণার ফলাফল মাঠপর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা পায়। এর অন্যতম কারণ হলো, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা সরাসরি কৃষকদের চাহিদা জানার সুযোগ পান না। এই সুযোগই তৈরি করবে কৃষক দিবস। আমরা চাই, কৃষি গবেষণাকে সফলভাবে মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দিতে।’
এ সময় বাউএকের পথচলা নিয়ে পরিচালক বলেন, ১৯৭৬ সালে ‘অ্যাগ্রি ভার্সিটি এক্সটেনশন’ প্রকল্পের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই সম্প্রসারণ কেন্দ্র ১৯৮৯ সালে ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্র (বাউএক)’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। তখন থেকেই গ্রামীণ কৃষকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘদিন ধরে বাউএক মাঠপর্যায়ে সবজি চাষ প্রতিযোগিতা, গবাদিপশুর টিকা প্রদান, মাঠ ফসল প্রদর্শনী, কৃষি প্রশিক্ষণ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, পুষ্টি কার্যক্রম এবং স্থানীয় নেতৃত্ব তৈরিতে কাজ করে আসছে।
No comments