আসছে নতুন অদৃশ্য শক্তি, বাড়ছে পৃথিবীর বিপদ
আমাদের এই ভূমন্ডলে কিছু দিন পর পরই নানা বিপদের আলোকচ্ছটা লক্ষ্য করা যায়। কখনো ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষ, কখনো ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব আবার কখনো অদৃশ্য শক্তির প্রভাব। এদের মধ্যে ভূমিকম্প বা ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব তবুও কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির প্রভাব মোকাবিলায় মানুষকে অনেক বেশি বেগ পেতে হয়। কারণ এটা সরাসরি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসে। যদিও এখানে মানুষেরও কিছু ভূমিকা থাকে।
তেমনি পৃথিবী এক অদৃশ্য শক্তির মুখোমুখি হয়েছিলো ২০১৯ সালে। এ বছরের ডিসেম্বরে চীনে প্রথম শণাক্ত হয় করোনা নামে এক অদৃশ্য শক্তির। এই ভাইরাস যে শুধু চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল তাই নয়। বরং এটি পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিলো। এর আক্রমণে একদিকে যেমন পুরো ইউরোপ দিশেহারা ছিলো, তখন আমেরিকায় কান্নার রোল পড়েছিলো। আর এশিয়ায় এর তাণ্ডবে আতঙ্কিত ছিলো এশিয়াবাসী। বিজ্ঞানীদের অনেক গবেষণায়ও এই ভাইরাস নির্মূল করা যায় নি। যদিও এখন এটি অনেকটা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।
কিন্তু পৃথিবীর ওপর এই অদৃশ্য শক্তির প্রভাব যেন কখনও শেষ হবার নহে। করোনা শেষ হতে না হতেই দেখা মিলেছে নতুন ভাইরাসের। নাম হলো এইচএমপিভি। যারা এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের শারীরিক সমস্যা অনেকটা ফ্লুর মতো। এর উপসর্গও ফ্লুর মতো। চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এটা নিশ্চিত করেছেন, এই ভাইরাসে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের সমস্যা হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রে। চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ কিছুদিন আগে ফ্লু-জাতীয় রোগের হার বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছিল।
এইচএমপিভি প্রথম সনাক্ত করা হয় ২০০১ সালে। এইচএমপিভি একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা ওপরের এবং নীচের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। এটি সব বয়সের ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। তবে শিশু, বয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের জন্য ভাইরাসটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে চীনা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটের গবেষক ঝেং লিশু বলেন, এইচএমপিভি ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও বৃদ্ধির হার কম এবং অস্পষ্ট লক্ষণের কারণে বিজ্ঞানীরা প্রায় দুই দশক আগে প্রথমবারের মতো এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত করতে পেরেছেন।
চীনের চ্যচিয়াং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের চিলড্রেনস হাসপাতালের শ্বাসযন্ত্র রোগ বিভাগের প্রধান থাং লানফাং বলেন, শিশুর এইচএমপিভি সংক্রমণের পর নিউমোনিয়া হতে পারে। শিশু, বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, দুর্বলতা, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্নও হতে হবে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রর (সিডিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী চীনের বিশেষজ্ঞরাও যত্নের ওপর জোর দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্রাম, হালকা খাবার এবং উপযুক্ত পোশাক পরা।
No comments