নিজের জানাজার দাওয়াত দিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন
রুপালি পর্দার নবাবখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র ওরফে হাসান ইমাম সোমবার (৬ জানুয়ারি) আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন।
এর আগে এফডিসিতে এই অভিনেতার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, নির্মাতা ছটকু আহমেদ, খোরশেদ আলম খসরুসহ অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী ও এফডিসির কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
এদিকে, প্রবীর মিত্রকে এফডিসিতে শেষ বিদায়ের সময় নিজের জানাজার দাওয়াত দিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, আজ যারা এখানে এসেছেন এবং যারা আসতে পারেননি সবাই যেন প্রবীর দাদার জন্য দোয়া করেন। আর এখানে যদি আমার জানাজা হয় তাহলে আপনারা সবাই আমার জানাজায় আসবেন। আমি আমন্ত্রণ জানালাম। সেই সঙ্গে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।
এ সময় অভিনেতা আরও বলেন, সবাইকে চলে যেতে হবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু কে কীভাবে যাবে সেটাই হল তার ভাগ্য। আখেরাত যার সুন্দর হবে তিনি হলেন সবচেয়ে বেশি ভাগ্যবান। সেদিক দিয়ে আমাদের প্রবীরদা অনেক ভাগ্যবান। দীর্ঘ সময় তিনি অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন। এই সময়টা তিনি ধর্মকর্ম নিয়ে ছিলেন। সহকর্মী হিসেবে আমরা তাকে দেখেছি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন ধরে শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২২ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পুরান ঢাকায় বেড়ে উঠেছেন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। মূলত এ ছবিতে কাজের ব্যাপারে তার বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এ ছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। এ কারণেই অনেকে তাকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’বলে ডাকেন।
তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- জীবন তৃষ্ণা, সীমার, তীর ভাঙা ঢেউ, প্রতিজ্ঞা, অঙ্গার, পুত্রবধূ, নয়নের আলো, চাষীর মেয়ে, দুই পয়সার আলতা, আবদার, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি।অনলাইন ফিল্ম স্ট্রিমিং পরিষেবা
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
No comments