Adsterra

টিকটকের ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত

টিকটকের ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

চীনের মালিকানাধীন টিকটক কয়েক বছর ধরে বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমগুলোর একটি। বর্তমানে টিকটক ব্যবহারকারী দুইশ কোটির বেশি। তবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর নজরদারির মুখে পড়ায় টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।


সম্প্রতি টিকটকের বিরুদ্ধে একটি মামলায় রায় দিয়েছেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আইনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই আইনে বলা হয়েছে, এই অ্যাপটির মালিকানা বদলাতে হবে নয়তো এটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র টিকটক নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছিল মূলত নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেওয়ার কারণে।


বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না হলে রোববার থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে যাবে টিকটক। যদিও সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির শুনানিতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনি দল বিচারকদের অনুরোধ করে, একটি সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তাদের যেন সময় দেওয়া হয়। ছোট্ট এক নথিতে আইনজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের মধ্যে প্ল্যাটফর্মটি বাঁচানোর রাজনৈতিক ইচ্ছা রয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই সময় দেননি। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার আলোচনায় বসবেন রিপাবলিকান কয়েকজন আইনজীবী। 


এদিকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কিছুক্ষণ পর, ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্পেশালে এক পোস্টে জানান, টিকটক ইস্যুতে তিনি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন, তবে সবাইকে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।


২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত

তিনি আরও বলেন, 'টিকটক বিষয়ে আমার সিদ্ধান্ত খুব শিগগিরই আসবে, তবে পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সময় দিতে হবে। অপেক্ষায় থাকুন।' 


ট্রাম্প ইতোমধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সেখানে টিকটক প্রসঙ্গটি ছিল বলে জানা গেছে। 


টিকটকের মালিক চীনা কোম্পানি বাইটডান্স। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আশঙ্কা, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চীন সরকারের হাতে যেতে পারে এবং তাতে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।  


এছাড়া টিকটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করছে। শিশুদের তথ্য সংগ্রহ ও গোপনীয়তার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে টিকটকের বিরুদ্ধে। 


এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই অভিযোগে ভারত ২০২০ সালে টিকটক নিষিদ্ধ করে। তখন চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ২০২০ সালের ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সামরিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।


সংঘর্ষের দুই সপ্তাহ পর ভারত সরকার ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে, যার মধ্যে টিকটকও রয়েছে। ভারতের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় তখন জানায়, এসব অ্যাপ ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি অথবা অনুমতি ছাড়াই তাদের নিজস্ব সার্ভারে সংরক্ষণ করছে, যা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য হুমকি।


এর আগের দফায় ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ও টিকটক নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। তবে আইনি বাধার কারণে তখন সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর সম্ভব হয়নি। পরে জো বাইডেন প্রশাসন এ বিষয়ে নতুন নিয়ম তৈরি করে। বিশ্লষকরা বলছেন, গেল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প তরুণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে যাদের নিয়ে কাজ করেছেন, তাদের অনেকেই টিকটকের ভক্ত। তাই শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প যদি জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশে টিকটক চালু রাখার ব্যাপারে সমাধান খুঁজে পান, তবে সেটি হবে দ্বিতীয় মেয়াদে তার প্রাথমিক রাজনৈতিক সাফল্য। টিকটক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকেও প্রশংসা পাবেন তিনি।


ভারতে টিকটক নিষিদ্ধের পর ভারতীয়রা চীনা অ্যাপ রেডনোটে অ্যাকাউন্ট খুলতে শুরু করেন। আর যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের আভাস পাওয়ার পর ব্যবহারকারীরা রেডনোট থেকে সরে যেতে শুরু করেন। ফলে অনুমান করা যায়, প্রযুক্তির এই যুগে মানুষ হয়তো এক অ্যাপ থেকে বেরিয়ে আরেক অ্যাপে ঘুরপাক খাবে।

No comments

Powered by Blogger.