ছিলেন অঞ্জনা সাহা, হয়েছেন অঞ্জনা রহমান
ক্যারিয়ারের শুরুতে অঞ্জনার নাম ছিল অঞ্জনা সাহা । বিয়ের কারণে নিজের ধর্ম পরিবর্তন করেছিলেন অভিনেত্রী। ঢালিউড পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হন তিনি। পরে তাদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু ধর্ম..
২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে নিজের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে অঞ্জনা জানিয়েছিলেন— আমার বিয়ের পর নামের সঙ্গে রহমান যুক্ত হয়েছে। সেটি এখনো আছে। আমি সাহা পরিবারের মেয়ে; হিন্দু ছিলাম আমি।
যে বিয়ের কারণে নাম পরিবর্তন, সেই বিয়েই তো টিকল না। বিয়ে না টেকার পরও একই নাম থাকার কারণ হিসাবে অভিনেত্রী বলেন, বিয়ে না টিকুক; যেহেতু আমি ধর্ম পরিবর্তন করে ফেলেছি, আর পেছনে যাওয়া যাবে না। সেই সাক্ষৎকারে নিয়মিত নামাজ-রোজা করার কথাও জানিয়েছিলেন এ অঞ্জনা।
অঞ্জনার অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। তবে অঞ্জনা অভিনীত ও একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’। ছবিতে তার নায়ক ছিলেন সোহেল রানা।
১৯৭৬ সালে এ সিনেমার পর টানা কাজ করেছেন অঞ্জনা রহমান। একে একে অভিনয় করেন ‘মাটির মায়া’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ,‘আনারকলি’, ‘বিচারপতি’, ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, ‘অভিযান’, ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘নাগিনা’, ‘পরীণিতা’ ইত্যাদি বাণিজ্যিক সফল সিনেমায়।
অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছাড়াও একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি।
উল্লেখ্য, অঞ্জনা রহমান ছোটবেলা থেকে নৃত্যের প্রতি আগ্রহের কারণে বাবা-মা তাকে নৃত্য শিখতে ভারতে পাঠান। সেখানে ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের অধীনে নাচের তালিম নেন এবং কত্থক নৃত্য শিখেন এ অভিনেত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাত্র চার বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে অঞ্জনার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর আর থেমে থাকেননি। নৃত্যশিল্পী হিসেবে ছোট থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেছেন তিনি। সাদাকালো থেকে রঙিন বাংলা চলচ্চিত্রের সাক্ষী গুণী এ অভিনেত্রী।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অঞ্জনা রহমান তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, তুরস্ক, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকা। অঞ্জনা দাবি করেছিলেন, তিনিই দেশের একমাত্র চিত্রনায়িকা যিনি ৯ দেশের এতগুলো ভাষায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন অঞ্জনা। এরপর ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ সিনেমায় ললিতা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে একই পুরস্কার লাভ করেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ‘পরিণীতা’, ‘মোহনা’ ও ‘রাম রহিম জন’ সিনেমার জন্য তিনবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি অঞ্জনা চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও করেছেন। তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলো হলো— ‘নেপালী মেয়ে’, ‘হিম্মতওয়ালী’, ‘দেশ-বিদেশ’, ‘বাপের বেটস’, ‘রঙিন প্রাণ সজনী’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘লাল সর্দার’, ‘রাজা রানী বাদশা’, ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা’, ‘বন্ধু যখন শত্রু’।
অঞ্জনা রহমান ঢালিউডের শীর্ষ জনপ্রিয় সব অভিনেতার সঙ্গেই অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— নায়করাজ রাজ্জাক, আলমগীর, জসিম, বুলবুল আহমেদ, জাফর ইকবাল, ওয়াসিম, উজ্জ্বল, ফারুক, ইলিয়াস জাভেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, সোহেল চৌধুরী, রুবেল, সুব্রত বড়ুয়া, মান্না প্রমুখ। এ ছাড়া মিঠুন চক্রবর্তী (ভারত), ফয়সাল (পাকিস্তান), নাদিম (পাকিস্তান) জাভেদ শেখ (পাকিস্তান), ইসমাইল শাহ (পাকিস্তান), শীবশ্রেষ্ঠ (নেপাল) ও ভুবন কেসি (নেপাল) অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা।
ছোটবেলা থেকে নৃত্যের প্রতি আগ্রহের কারণে বাবা মা তাকে নৃত্য শিখতে ভারতে পাঠান। সেখানে ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের অধীনে নাচের তালিম নেন এবং কত্থক নৃত্য শিখেন অঞ্জনা রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাত্র চার বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে অঞ্জনার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর আর থেকে থাকেননি। নৃত্যশিল্পী হিসেবে ছোট থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেছেন। সাদাকালো থেকে রঙ্গিন বাংলা চলচ্চিত্রের সাক্ষী গুণী এই অভিনেত্রী। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমাতে কাজ করেছেন একজন অঞ্জনা।
No comments