Adsterra

তাহসান-রোজাকে নিয়ে যা বললেন তসলিমা

তাহসান-রোজাকে নিয়ে যা বললেন তসলিমা, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh new

তাহসান ও রোজার চার মাসের পরিচয়। দুই পরিবারের উপস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। ওই রাতেই গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রোজার চাচা মনা আহমেদ। তাদের বিয়ের খবর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই পড়ে গেছে।

ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাদের এ সম্পর্ক ভিন্ন-ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছেন নেটিজেনরা। কেউ প্রশংসা করছেন আবার কেউ করছেন কটাক্ষ। ফেসবুকে অসংখ্য পোস্টে দেখা গেছে একটি কথা, তা হলো ‘তাহসান জিতেছে’। সেই পোস্টগুলো নব্বইভাগই পুরুষের।

‘তাহসান জিতেছে’ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি ফেসবুকে লম্বা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তা পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘ফেসবুক ছেয়ে গেছে ‘তাহসান জিতেছে তাহসান জিতেছে’ রবে। কেন তাহসান জিতেছে, বুঝে পেলাম না। সে একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে বা করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে জেতাজেতির কী হলো! হেটারোসেক্সুয়ালদের বিপরীত লিঙ্গে আকর্ষণ থাকে, তারা জীবনের কোনো এক সময় পছন্দসই কাউকে পেলে তার সঙ্গে প্রেম করে, লিভ ইন করে বা তাকে বিয়ে করে। এ তো স্বাভাবিক। জিতলো কেন তাহলে তাহসান? আসলে যারা জিতেছে জিতেছে বলে চেঁচাচ্ছে, তারা চেঁচাচ্ছে কারণ তারা মনে করেছে তাহসান এক বাচ্চার বাবা হয়ে, ডিভোর্সি হয়েও একটা ‘কচি সুন্দরী ভার্জিন মেয়ে’ পেয়েছে। মর্ত্যে বসে যত খুশি এবং যেভাবে খুশি নারী ভোগ করার পর স্বর্গে গিয়ে সঙ্গমের জন্য ভার্জিন হুর পেয়ে যাওয়াকে মুসলমানরা ‘জিতে যাওয়াই' মনে করে; কিন্তু রোজা আহমেদ রক্ত-মাংসের মানুষ, হুর নয়, খুব সম্ভবত ভার্জিনও নয়। রাজকন্যার জীবন তার ছিল না, খুব স্ট্রাগল করেই দরিদ্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে একটি মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। স্ট্রাগল করার সময় নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিল বলে নিজের স্বপ্ন যে করেই হোক পূরণ করতে চেয়েছিল বলে পুরুষতান্ত্রিক নারীবিদ্বেষী সমাজ রোজাকে কম নিন্দে করেনি, কম অপমান করেনি, কম অপদস্থ করেনি। মিথিলাকে নিয়েও কম কুৎসা রটানো হয়নি।


২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত


তাহসান জিতেছে, এ নিয়ে সবাই উল্লাস করছে। নারীবিদ্বেষী সমাজে সব পুরুষই জেতে। তাদের হার নেই। হারতে হয় শুধু নারীকেই; কিন্তু আমি কি মনে করি মিথিলা বা রোজা হেরেছে? না। তারা একটুও হারেনি। তারা স্বনির্ভরতা এবং স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারছে- নারীবিদ্বেষী সমাজে নারীর জিতে যাওয়ার প্রথম শর্তই এটি। তারা ভ্রুক্ষেপ করছে না কুৎসা বা নিন্দে- এ জিতে যাওয়ার দ্বিতীয় শর্ত। ভালো না লাগলে তারা তাদের সঙ্গীকে, সে প্রেমিক হোক, সে স্বামী হোক, ত্যাগ করতে পারছে, তারা বাধ্য নয় তাদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় বাস করতে, এ জিতে যাওয়ার তৃতীয় শর্ত। তাহসানকে যদি কখনো পছন্দ না হয় রোজার, তার স্বনির্ভরতাই তাকে সাহস জোগাবে তাহসানকে ত্যাগ করার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের জেতা কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। নারীর জন্যই এ চ্যালেঞ্জ। দুই নারীই চ্যালেঞ্জে জিতেছে। জয়তু নারী।’

No comments

Powered by Blogger.