নিজেদের অধীন ‘স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স’ চান ডিসিরা
চলমান জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন জননিরাপত্তা বিভাগ-সম্পর্কিত আলোচনায় ১১টি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকেরা। এর মধ্যে ডিসির অধীন বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি ‘স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স’ গঠন ও কর্তব্যরত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধ্যতামূলকভাবে বডি ক্যামেরা রাখা ও জনবিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মারণাস্ত্র ও ছররা গুলি ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে মঙ্গলবার জননিরাপত্তা বিভাগ-সম্পর্কিত কার্য অধিবেশন হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (জেলা প্রশাসক) নিজে কিংবা তার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, উচ্ছেদ অভিযান, বিভিন্ন জরুরি কার্যক্রম তথা ত্রাণ বিতরণ ও দুর্যোগে তাৎক্ষণিক সেবা দিয়ে থাকেন। নিজস্ব সুরক্ষা, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ ও জরুরি সেবা কার্যক্রম বেগবান করার জন্য জেলা প্রশাসকের অধীন বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে ‘স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স’ গঠন প্রয়োজন।
কারণ, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে বিদ্যমান বিভিন্ন বাহিনীর সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে প্রস্তুতিমূলক কারণে সময়ক্ষেপণ হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি স্বার্থ বিঘ্নিত হয় বলে যুক্তি দিয়ে জননিরাপত্তা বিভাগ-সম্পর্কিত আলোচনার জন্য লিখিত প্রস্তাবে মাগুরার জেলা প্রশাসক ‘স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স’ গঠনের প্রস্তাব করেছেন।
এ ছাড়া, জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (জেলা প্রশাসক) প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কার্যক্রমে মূলত পুলিশ বাহিনীর ওপর নির্ভর করতে হয় বলে যুক্তি দিয়ে জেলার পুলিশ বাহিনীর সার্বিক কার্যক্রমের ওপর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন গাইবান্ধা ও সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক। গোপনীয় এই প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ একটি নির্দিষ্ট কাঠামো বা ফরম্যাট তৈরি করে দিতে পারে বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিয়োগপ্রক্রিয়া অধিকতর কার্যকর, ফলপ্রসূ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে যুক্তি দিয়ে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি রাখার সুপারিশ করেছেন মাগুরা ও মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক।
এ ছাড়া, অপরাধ তথ্যভান্ডার ও জাতীয় পরিচয়ের তথ্যভান্ডারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (জেল প্রশাসক) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন মাগুরার জেলা প্রশাসক।
অন্যদিকে, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের বিধিমালা করা এবং এই আদালতের দণ্ডবিধির কিছু ধারায় অর্থদণ্ড বাড়ানো ইত্যাদি প্রস্তাবও এসেছে। দণ্ডবিধির কিছু ধারায় ন্যূনতম অর্থদণ্ড ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক।
এদিকে, নরসিংদী জেলার চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে আলাদা থানা গঠনের প্রস্তাব করেছেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক।
এ ছাড়া, আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত আলোচনার জন্য জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে জেলা পর্যায়ে স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠন, নিবন্ধন অধিদপ্তরকে আইন মন্ত্রণালয়ের হাত থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যস্ত করাসহ আরও বেশ কিছু প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
No comments