গালি দেওয়া কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা ?
গালি দেওয়া মত প্রকাশের স্বাধীনতার আওতায় পড়ে কিনা – জানতে চাইলে একাধিক আইনজীবী বিবিসি বাংলাকে বলেন, গালি দেওয়াকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলা যায় না। কারণ গালি কোন স্বাভাবিক কথোপকথন না। মতপ্রকাশ মানে কোনও বিষয়ের ওপর মতামত প্রকাশ করা।
"গালি সাধারণত একজনকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়। গালি কোনও মত নয়। গালি হলো এমন শব্দ, যা দিয়ে আরেকজনকে আহত করা হয়," বলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানও বলেন, "কাউকে অপমান করা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বা মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া কখনোই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মাঝে পড়ে না।"
তবে রাজনীতিবিদেরকে গালি দেওয়ার হিসাবটা আলাদা, বলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
তার মতে, বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গালিকে কখনও কখনও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বব্যাপী এটি প্রথা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অর্থাৎ, রাজনীতি ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে গালিকে মত প্রকাশ হিসাবে বিবেচনা করা হবে না।
"বিশ্বব্যাপী রাজনীতিতে এটা চলছে। এগুলোকে যদি বলা হয় যে মানহানির মাঝে পড়বে, তাহলে তো রাজনীতি নিয়ে কথাই বলা যাবে না। রাজনীতির সব কথা মানহানি হিসাবে নিলে সবাই-ই তো আসামী হয়ে যাবে, তখন মত প্রকাশ আর থাকে না।" বলেন মি. মোরসেদ।
তবে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় কাউকে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে যদি বলা হয় যে তিনি ডাকাত কিংবা চোর, এবং সে যদি মনে করে যে মানহানি হয়েছে, তাহলে তিনি মামলা করতে পারেন।
"কেউ বললো, ছাগল। এটা মানহানিকর হবে, আইনে কোথাও ব্যাখ্যা নাই। কিন্ত আপনি ফিল করতে পারবেন যে মানহানি হয়েছে," ব্যাখ্যা করেন মি. মোরসেদ।
এছাড়া, কেউ যদি আড়ালে থেকে কাউকে গালি দেয়, তখন কী হবে?
"তখন মামলা হবে না। মামলা হতে হলে প্রমাণ লাগবে। আর যদি মানহানিকর মন্তব্যের প্রমাণ থাকে, তাহলে তিনি মামলা করতে পারেন" বলে জানান আইনজীবী মনজিল মরসেদ।
No comments